জুলি দাস
করিমগঞ্জ, ১৫ অক্টোবর : বিভিন্ন সুবিধা এবং সরকারি নিয়ম অনুযায়ী যা থাকা দরকার তা না থাকার জন্য করিমগঞ্জের আশীর্বাদ নার্সিংহোম বন্ধ করে দিয়েছে প্রশাসন।
রিপোর্ট হাতে আসার পর বন্ধ করে দেওয়ার সরকারি নির্দেশে স্বাক্ষর করেছেন জেলাশাসক মৃদুল যাদব। ন্যূনতম সুবিধা না দেওয়ার অভিযোগে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে আশীর্বাদ হসপিটাল এন্ড রিসার্চ সেন্টার।
আশীর্বাদ নার্সিংহোমের স্বত্বাধিকারী করিমগঞ্জ সরকারি হাসপাতালের এক চিকিৎসকের ভাই জানা গেছে।
করিমগঞ্জের নার্সিংহোমগুলো নিয়ে বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে। সেই অনুযায়ী তিনটি নার্সিংহোমে আচমকা অভিযান চালান স্বাস্থ্য বিভাগের যুগ্ম অধিকর্তা।
সেই সময় ব্যাপক অনিয়ম ধরা পড়ে পাথারকান্দি রোডে থাকা আশীর্বাদ নার্সিংহোমে। তারপর গত বছরের ১৯ সেপ্টেম্বর বিস্তারিত জানিয়ে জেলাশাসকের কাছে রিপোর্ট জমা দেন স্বাস্থ্য বিভাগের যুগ্ম অধিকর্তা।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে স্বাস্থ্য বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত অতিরিক্ত জেলাশাসক রিন্টু বড়ো এবং স্বাস্থ্য বিভাগের যুগ্ম অধিকর্তা ডা: সামসুল আলম ফের ওই নার্সিংহোমে হঠাৎ করে অভিযান চালান।
তখন তিনি দেখতে পান যে, একটি ছোট কক্ষের মধ্যে চারজন প্রসূতি রোগী, একজন ম্যানেজার এবং তিনজন নার্সিং স্টাফ রয়েছেন। নার্সদের কোনো রকমের যোগ্যতা ছিল না। তখন কোনো চিকিৎসক এবং প্রশিক্ষণরত কোন ব্যক্তি ছিলেন না।
হাসপাতাল, অপারেশন থিয়েটার এবং লেবার রুম পুরো অপরিচ্ছন্ন এবং আনহাইজেনিক। অপারেশন থিয়েটার এবং লেবার রুমের বিছানো, বালিশ অপরিষ্কার। দীর্ঘদিন থেকে অপরিচ্ছন্ন রয়েছে সবগুলি। অতিরিক্ত জেলাশাসককে তখন অপারেশন থিয়েটারের কোনো রেজিস্ট্রার দেখাতে পারেননি ম্যানেজার।
ম্যানেজার অতিরিক্ত জেলাশাসককে জানান যে, তিনি এই হাসপাতালে যোগদান করার পর এরকমের কোনো রেজিস্ট্রার দেখতে পাননি। শুধু তাই নয়, হাসপাতালে চিকিৎসকদের তালিকা ঝুলানো নেই।
নিয়ম অনুযায়ী এগুলির বাধ্যতামূলকভাবে থাকার কথা একটি হাসপাতালে। জেলাশাসকের নির্দেশে এসব কথা উল্লেখ রয়েছে।
এইসব অব্যবস্থা থাকার জন্য জেলাশাসক মৃদুল যাদব এক নির্দেশ জারি করে আশীর্বাদ হসপিটাল এন্ড রিসার্চ সেন্টার বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ জারি করেছেন। শুক্রবার এই নির্দেশ জারি হয়েছে।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ক্লিনিক্যাল এস্ট্যাব্লাইসমেন্ট অ্যক্ট-এর অধীনে যদি সবকিছুর বন্দোবস্ত করতে পারেন তাহলে পরবর্তীতে এই নির্দেশ পুনর্বিবেচনা করা হবে বলে নির্দেশে উল্লেখ করা হয়েছে।
করিমগঞ্জ সদর থানার ওসিকে এই নির্দেশ হাসপাতালের মালিককে সামঝে দেওয়ার জন্য নির্দেশে উল্লেখ রয়েছে।
এ ব্যাপারে সদর থানার ওসি ভবেশ ডিহিঙ্গিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি সরকারি একটি কাজে বর্তমানে লখিমপুর রয়েছেন বলে জানান।
স্বাস্থ্য বিভাগের যুগ্ম সঞ্চালক ডা: সামসুল আলম ‘গণ আওয়াজ’কে বলেছেন, একটি নার্সিংহোম যে নিয়ম মেনে চলার কথা তা নেই আশীর্বাদ নার্সিংহোমে। আবাসিক চিকিৎসক নেই। নার্সের পোশাক পরে যারা কাজ করছেন, তারা প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নন। পুরো হাসপাতাল অপরিষ্কার।