রূপা দাস চৌধুরী, করিমগাঞ্জ : অভাবে স্কুল ছাড়ছেন দরিদ্র হকারদের ছেলে-মেয়েরা, কর্মহীনতার দুর্ভোগে ড্রিপ্রেশনে স্টোক করে হসপিট্যালে এডমিট হকারা, বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু হকারের মার!!
এরমধ্যে ঘর ভাড়া দিতে ব্যর্থ হকারদের এক সপ্তাহের চূড়ান্ত সময়সীমা বেঁধে দিয়ে ঘর ছাড়তে নির্দেশ ঘর মালিকের।
সব দিক থেকে দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া হাফলং-বদরপুরের বঞ্চিত অসহায় রেল হকাররা এবার অনির্দিষ্ট কালের অনশনের ডাক দিলেন!
দীর্ঘ ৪০ থেকে ৫০ বছর ধরে হাফলং-বদরপুরের রেল পরিষেবায় বিভিন্ন নৈতিক দায়ীত্বের সাথে ফেরি দিয়ে নিজেদের পরিবার প্রতিপালন করছেন বরাকের বিভিন্ন জেলার হত দরিদ্র ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা!
কিন্তু আইনের মারপ্যাঁচ দেখিয়ে বিভিন্ন সময় তাদের হেনস্তা সহ গত চার মাস থেকে তাদেরকে রেলে ফেরি দিতে সম্পূর্ণভাবে বদরপুর রেল কর্তৃপক্ষ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে!!
ভারতের সর্বত্র, এমনকি অসমের সব জায়গায় রেলে হকারদের ফেরির সুযোগ দিলেও কি কারণে হঠাৎ তাদের বদরপুরের রেলে ফেরি দিতে বাঁধা দেওয়া হচ্ছে?
লিখিত পষ্টিকরণ জানতে চাইলেও রেল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে তারা কোনো সদুত্তর পাননি।
রেলে ফেরি দিয়ে নিজেদের অসহায় পরিবার প্রতিপালনের সুযোগের অনুমতি পেতে নানা ভাবে নানান বার অনুরোধ করার পরও কোনো গুরুত্ব দেননী রেলকর্তৃপক্ষ বলে অভিযোগ।
বদরপুর রেল কর্তৃপক্ষের কোনো সহযোগিতা না পেয়ে কর্মহীন হকাররা বদরপুরসহ করিমগঞ্জের বিভিন্ন জনপ্রতিনীধি এবং জেলা প্রশাসনকেও তাদের সমস্যার কথা জানালেও কোনো সুরাহ হয়নি।
কিন্তু এখন আর কারো মুখের দিকে চেয়ে থাকতে রাজী নয় হকাররা।
এক সপ্তাহের চূড়ান্ত সময়সীমা বেঁধে দিয়ে “কর অথবা মরো” অনির্দিষ্ট কালের আমরণ অনশনে নামতে বাধ্য হবেন বলে সাফ জানিয়েছে হাফলং-বদরপুর রোডের রেল হকাররা।
তবে, এদিন সমাজ কর্মী মুন্নী ছেত্রী বঞ্চিত হকারদের ন্যায্য অধিকারের লড়াইকে পূর্ণ সমর্থন জানিয়ে এগিয়ে এসেছেন।
তিনি বলেন সব জায়গায় যদি হকাররা রেলে ফেরি দিতে পারেন তবে হাফলং থেকে বদরপুরের রেলে হকাররা কেনো ফেরি দিতে পারবেন না?
রেলের এই আইনী পদক্ষেপ কি শুধু বদরপুরের জন্য?
দেশের সরকার যখন অসহায় জনতার হাতে কর্ম ধরিয়ে আত্মনির্ভর ভারত গড়ার উদ্দ্যোগ নিয়েছে ঠিক তখন কেনো বদরপুর-হাফলং রোডে ৪০ থেকে ৫০ বছর ধরে যারা রেলে ফেরি দিয়ে আসছে তাদের হাত থেকে কর্ম সংস্থান ছিনিয়ে নেওয়ার প্রয়াস করা হচ্ছে?
রেলে যদি হকারদের ফেরি বন্ধের নির্দেশ আসে তবে সারা দেশেই সেটা লাঘু হবে, শুধু বদরপুরে জন্য কেনো?
বদরপুরের হকারদের বঞ্চনার কথা শুনে এদিন সভায় হাফলং থেকেও হকাররা ছুটে আসেন।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বরাকভ্যালী হকার সমিতির সভাপতি নিরুপম আচার্য, সম্পাদক প্রদ্বিপ লোধ, বদরপুরের বিশিষ্ট সমাজসেবী বৈশাখী রায়, সমাজ কর্মী মুন্নী ছেত্রী সহ প্রায় তিন শতাধিক বঞ্চিত হকার।
এদিন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে এক সপ্তাহের মধ্যে যদি তাদের রেলে ফেরি দেওয়ার সুযোগ না দেওয়া হয় তবে বরাকের সমস্ত হকাররা অনির্দিষ্ট কালের জন্য আমরণ অনশনে বসবেন।