ব্যুরো রিপোর্ট, নিলামবাজার : সংখ্যালঘুদের ডি-ভোটার নোটিশ দিয়ে ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠানো, চাকরিতে বরাকের যুবক-যুবতীদের বঞ্চনা, বিধানসভার দু’টি আসন কমিয়ে দেওয়ার পরও নীরব ছিলেন কৃপানাথ মালা।
তাই বিজেপি তাকে উপহার হিসেবে করিমগঞ্জে টিকিট দিয়েছে।
এই গুরুতর অভিযোগ করিমগঞ্জ জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক মুহিদুল ইসলাম চৌধুরীর।
দক্ষিণ করিমগঞ্জের নিলামবাজারে আজ কেন্দ্রীয় নির্বাচনী কার্যালয়ে ইস্তাহার তুলে ধরে মুহিদুল বলেন, আইনজীবী হাফিজ রশিদ চৌধুরী জয়ী হলে প্রতিশ্রুতি পূরণ করবেন।
তিনি কৃপানাথ মালার মত ভোটারদের সঙ্গে প্রতারণা করবেন না।
মুহিদুল শাসকদলের সমালোচনা করে বলেন, ডিলিমিটেশনের নামে করিমগঞ্জের দু’টি আসন কর্তন করা হয়েছে।
চল্লিশ লক্ষের অধিক মানুষের বসবাস থাকার পরও চক্রান্ত করে জেলার দু’টি আসন বিলুপ্ত করা হয়েছে।
অন্যদিকে ষোলো লক্ষের অধিক মানুষের বসবাস করা কার্বি আংলঙে দু’টি আসন বৃদ্ধি করা হয়েছে।
তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির চাকরির ক্ষেত্রে বরাকের শিক্ষিত যুবক-যুবতীদের সঙ্গে প্রতারণা করা হয়ে হয়েছে।
তেমনি পরিকল্পিতভাবে করিমগঞ্জ-হাইলাকান্দি জেলা থেকে টেট পরীক্ষা কেন্দ্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
বিজেপির এই তুঘলকি কাণ্ডে ক্ষোভ ব্যক্ত করেন জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক তথা দক্ষিণ করিমগঞ্জ কেন্দ্রের ইনচার্জ মুহিদুল ইসলাম চৌধুরী।
এছাড়া বরাক উপত্যকার তিন জেলায় শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও যোগাযোগ ব্যবস্থার আশানুরূপ উন্নয়ন পরিলক্ষিত হয়নি বলে জানান তিনি।
পাঁচগ্রাম কাগজকল পুনরায় চালু করা, ডিটেনশন ক্যাম্প গুঁড়িয়ে দেওয়া, তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির চাকরিতে স্থানীয়দের অগ্রাধিকারের একাধিক প্রতিশ্রুতি দিলেও কিছুই বাস্তবায়িত করেনি বিজেপি।
স্বাধীনতার পর থেকে সংরক্ষিত করিমগঞ্জ আসনে বহু সাংসদ নির্বাচিত হয়েছেন, সব সম্প্রদায়ের মানুষ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে সংসদে প্রতিনিধি পাঠিয়েছেন।
কিন্তু এবার করিমগঞ্জ লোকসভা আসন সংরক্ষণ মুক্ত হলেও সাধারণ প্রার্থীদের বঞ্চিত করে মুখ্যমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ সাংসদকে টিকিট দিয়েছে বিজেপি।
মহিদুল ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বরাকের সমস্যা নিয়ে সাংসদ কৃপানাথ মালা কোন দিন যেমন সংসদে সরব হননি তেমনি ডিলিমিটেশন করে বরাকের দু’টি আসন কর্তন করার হলেও প্রতিবাদ করেননি।
তিনি বলেন, কংগ্রেস প্রার্থী হাফিজ রশিদ আহমদ চৌধুরী জয়ী হলে বহু কাজ হবে।
নির্বাচনী ইস্তাহার তুলে ধরে বলেন, কংগ্রেস প্রার্থী হাফিজ রশিদ জয়ী হলে বরাক এবং ব্রহ্মপুত্রের মধ্যে মহাসড়ক, বদরপুরঘাটে ওভারব্রিজ নির্মাণ এবং ভৈরবী থেকে গুয়াহাটি প্রতিদিন এক্সপ্রেস সার্ভিস চালু করা হবে।
করিমগঞ্জ-হাইলাকান্দি ও কাটিগড়ার মধ্যবর্তী স্থানে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন, সুতারকান্দিতে আন্তর্জাতিক বাজার চালু করা, দরিদ্র ও ভূমিহীন জনগণকে জমির পাট্টা প্রদান সহ ডি-ভোটারদের বিনা খরচে আইনি সহায়তা প্রদান করা হবে।
এছাড়াও করিমগঞ্জ ও হাইলাকান্দিতে টেট পরীক্ষা কেন্দ্র স্থাপন, তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির চাকুরীর পরীক্ষা কেন্দ্র সহ প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার কেন্দ্র স্থাপন এবং মৎস্যজীবী, কিরাণ, বাগানি ও কৈবর্ত সমাজের সার্বিক উন্নয়নের জন্য দিসপুর-দিল্লি লড়াই চালিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।
এদিন অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দক্ষিণ করিমগঞ্জ নাগরিক অধিকার মঞ্চের সভাপতি জয়নুল হক, মকু মিয়া, বিকি চৌধুরী, রাজন আহমেদ প্রমুখ।