চাপের মুখে আমিনুর, ঘুষ নয় ব্যবসায়িক চুক্তি
গণআওয়াজ প্রতিনিধি, শ্রীভুমি : পঞ্চায়েত নির্বাচনে টিকিট বিতরণে এপিসিসির সাধারণ সম্পাদক আমিনুর রশিদ চৌধুরীর বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়ের বিস্ফোরক অভিযোগ সামনে আসার পর প্রদেশ কংগ্রেসে তীব্র বিতর্ক শুরু হয়েছে।
তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করে, আমিনুর রশিদ চৌধুরী নগদ লেনদেনের বহুল প্রচারিত ভিডিওটিকে ব্যবসায়িক চুক্তি হিসাবে চিহ্নিত করেছেন।
আমিনুর বলেছেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করা ভিডিওটি সম্পূর্ণ সত্য নয়, এটি একটি ব্যক্তিগত ব্যবসায়িক লেনদেন, রাজনৈতিক ঘুষ নয়।
তিনি আরও বলেন, রাজনৈতিক জীবনে কখনও দুর্নীতিতে জড়াইনি, আমি শ্রীভূমি জেলার সর্বোচ্চ করদাতাদের একজন। এটি আমার ভাবমূর্তি নষ্ট করার একটি ইচ্ছাকৃত প্রচেষ্টা।
চৌধুরী জানান, তিনি এব্যাপারে গত ২৪ এপ্রিল গুয়াহাটির বিশেষ বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে টিকিট প্রার্থী বজলুল হক চৌধুরীর বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
যেখানে তিনি তার বিরুদ্ধে মানহানিকর এবং বিদ্বেষপূর্ণ প্রচারণা, সত্য এবং আইনের শাসনকে অবজ্ঞা করে দুর্নীতির বর্বর এবং ভিত্তিহীন অভিযোগ করেছেন।
চৌধুরী বলেন, আমি টিকিট বিতরণের একমাত্র কর্তৃপক্ষ নই, দলীয় কাঠামোর মধ্যে উচ্চতর দলীয় কর্মকর্তার বহু-স্তরীয় পরামর্শমূলক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এছাড়া, আমাকে হোজাই জেলা কংগ্রেস কমিটির বিষয়গুলি তদারকি করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, শ্রীভূমির টিকিট বিতরণে আমার কোনও হাত নেই।
আমি সর্বাধিক শুধু আমার পরামর্শ দিয়েছি, বলেন আমিনুর চৌধুরী।

এক জেলা পরিষদের টিকিট প্রার্থী আহসান চৌধুরীর কাছ থেকে নগদ টাকা নেওয়ার অভিযোগে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়ার পর বিতর্ক শুরু হয়।
এই ভিডিওতে দেখা গেছে, আহসান চৌধুরী ৪ লক্ষ টাকা দিয়েছেন। তিনি অভিযোগ করেছেন, কংগ্রেস মনোনয়নের জন্য এই ৪ লক্ষ টাকা দিয়েছিলেন।
এই ভিডিও ফুটেজ এবং ফোন কলের অডিও ক্লিপ জনসাধারণের মধ্যে ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে এবং জেলায় দলীয় কার্যক্রম নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
এদিকে, এই কেলেঙ্কারির প্রতিক্রিয়ায় ২০ মে শ্রীভূমির ইন্দিরা ভবন (জেলা কংগ্রেস কার্যালয়) বন্ধ ছিল বলে জানা গেছে।
সূত্রের দাবি, টিকিট বিতরণে মধ্যে ৪ লক্ষ থেকে ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঘুষ নেওয়া হয়েছে।
বিতর্কে ঘৃতাহুতি ফয়েছেন শ্রীমন্ত কানিশাইল জেলা পরিষদ আসনের আরেক টিকিট প্রত্যাশী সেলিম উদ্দিন।
তার অভিযোগ, তিনি দলীয় টিকিট পেতে ১০ লক্ষ টাকা দিয়েছিলেন। কিন্তু বেশি টাকার বিনিময়ে মনোনয়নটি শেষ পর্যন্ত অন্য একজনকে দেওয়া হয়।
তিনি, এপিসিসি এবং সর্বভারতীয় কংগ্রেস কমিটি (এআইসিসি) উভয়ের কাছে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ জমা দিয়েছেন, কিন্তু এখনও পর্যন্ত কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে জানা গেছে।
অন্যদিকে শ্রীভূমি জেলা কংগ্রেসের সহ-সভাপতি বিশ্বজিৎ ঘোষের একটি অডিও ক্লিপ ভাইরাল হয়েছে, যেখানে তিনি এক প্রার্থীকে গুয়াহাটিতে টাকা দেওয়ার এবং চৌধুরীর সাথে সমন্বয় করার নির্দেশ দিচ্ছেন ধারণা করা হচ্ছে।
রেকর্ডিংয়ে ঘোষকে বলতে শোনা যাচ্ছে, যা দেওয়া দরকার ছিল তা আমরা ইতিমধ্যেই হস্তান্তর করেছি।
এই ঘটনার পর স্থানীয় কংগ্রেস নেতৃত্বে প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। শ্রীভূমি জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক সুব্রত দেব জরুরি হস্তক্ষেপের আহ্বান জানিয়ে সতর্ক করে বলেছেন, নিষ্ক্রিয়তা তৃণমূল পর্যায়ের দলীয় কর্মীদের মনোবল ভেঙে দিতে পারে।