পদক্ষেপ গ্রহণের ইঙ্গিত যুগ্ম অধিকর্তার
জুলি দাস
করিমগঞ্জ, ১৩ অক্টোবর : স্বাস্থ্য বিভাগের কড়া মনোভাবের পরও করিমগঞ্জে দিব্যি চলছে উপযুক্ত নথিপত্রবিহীন অধিকাংশ প্যাথলজিকাল ল্যাবরেটরি। স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে জেলার সবক’টি ল্যাবরেটরির মালিকদের চিঠি পাঠিয়ে সময়সীমা বেঁধে দিয়ে প্রয়োজনীয় নথিপত্র জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
কিন্তু এখন পর্যন্ত মাত্র চারটি ল্যাবরেটরির প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দেওয়া হয়েছে। বাকিরা জমা দেননি। স্বাস্থ্য বিভাগের যুগ্ম অধিকর্তা ডা: সামসুল আলম বৃহস্পতিবার বলেছেন, কাগজপত্র দেখাতে ব্যর্থ হলে ল্যাবরেটরিগুলির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হবে স্বাস্থ্য বিভাগ।
নিয়ম বহির্ভূক্তভাবে করিমগঞ্জের একাংশ প্যাথলজিক্যাল ল্যাবরেটরি চলছে। চিকিৎসকদের পরামর্শে অনেক সময় নমুনা পরীক্ষা করার পর বিভিন্ন অনিয়ম ধরা পড়েছে। এনিয়ে সচেতন জনগণের পক্ষ থেকে বেশ কয়েকটি অভিযোগ জমা পড়েছিল স্বাস্থ্য বিভাগের যুগ্ম অধিকর্তা ডা: সামসুল আলমের কাছে।
তারপর বিষয়টির গুরুত্ব উপলব্ধি করে বিভিন্ন ল্যাবরেটরির মালিকপক্ষকে গত ১৯ সেপ্টেম্বর চিঠি দেওয়া হয় স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে।
স্বাস্থ্য বিভাগের একটি সূত্র মতে, করিমগঞ্জ জেলায় লাইসেন্সপ্রাপ্ত প্যাথলজিকাল ল্যাবরেটরি ছাড়াও আরো অনেক ল্যাবরেটরি গজিয়ে উঠেছে বিভিন্ন জায়গায়। দূরে না গিয়ে স্থানীয় ল্যাবরেটরিগুলিতে প্রয়োজনীয় টেস্ট করিয়ে ফেলেন অনেকে। এতে অনেক সময় বিসঙ্গতি ধরা পড়ে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এছাড়া সরকারি নিয়ম অনুযায়ী ল্যাবরেটরিগুলিতে প্যাথলজিস্ট থাকা একান্ত বাধ্যতামূলক। কারণ বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর রোগীদের কাছে দেওয়া রিপোর্টে তাঁদেরই স্বাক্ষর থাকে।
করিমগঞ্জের একাংশ ল্যাবরেটরীতে প্যাথলজিস্ট নেই বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। কিছু ক্ষেত্রে প্যাথলজিস্টের কাজ করে ফেলেন টেকনিশিয়ানরা।
রিপোর্টে টেকনিশিয়ানরা স্বাক্ষর দিয়ে দেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে বিভিন্ন জনের কাছ থেকে। ফলে কোনো কোনো সময় রিপোর্টে অনিয়ম ধরা পড়ে। করিমগঞ্জ স্বাস্থ্য বিভাগের দায়িত্বশীল পদে থাকা এক ব্যক্তির ক্ষেত্রেও এরকম হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
অভিযোগ মতে, প্যাথলজিস্টের বদলে স্বাস্থ্য বিভাগের ওই কর্তার রিপোর্টে স্বাক্ষর ছিল টেকনিশিয়ানের।
প্যাথলজিকাল ল্যাবরেটরিগুলির বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়ার পর গত ১৯ সেপ্টেম্বর ল্যাবরেটরিগুলির মালিকদের কাছে চিঠি প্রেরণ করেন স্বাস্থ্য বিভাগের যুগ্ম অধিকর্তা। ওই চিঠিতে পনেরো দিনের মধ্যে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে উপস্থিত হতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে মাত্র ৪ টি ল্যাবরেটরির প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা পড়েছে যুগ্ম অধিকর্তার কার্যালয়ে।
যুগ্ম অধিকর্তা বলেছেন, কয়েকটি প্যাথলজিক্যাল ল্যাবরেটরির বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ করেছেন কয়েকজন।
এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে হাজির হতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল ল্যাবরেটরি কর্তৃপক্ষকে। কিন্তু মাত্র চারটি ল্যাবরেটরির প্রয়োজনীয় নথিপত্র জমা পড়েছে।
যারা এখনো কাগজপত্র জমা করেননি তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে অতি সত্বর জমা দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মচারীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এটাই শেষ সুযোগ।
যাদের কাগজপত্রে অসংগতি ধরা পড়বে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা ছাড়া কোনো বিকল্প থাকবে না। অনিয়ম এবং নিয়ম বহির্ভূত কোনো কাজ হয়ে থাকলে তা মোটেই বরদাস্ত করা হবে না। প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে ল্যাবরেটরিগুলির বিরুদ্ধে। সঠিক কাগজপত্র না থাকলে কোনো মতেই ল্যাবরেটরি চালাতে দেওয়া হবে না। বন্ধ করে দেওয়া হবে।