গণআওয়াজ, হাইলাকান্দি : হাইলাকান্দি জেলার বন্যা দুর্গতদের কাছে সরকারি পরিষেবা পৌঁছে দিতে কোন বিভাগের গাফিলতি বরদাস্ত করা হবে না।
বর্তমান বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ বিভাগের কাজকর্ম নিয়ে আলোচনা করে বুধবার জেলা কমিশনার নিসর্গ হিভারে সরকারি আধিকারিকদেরকে সতর্ক করে দেন।
তিনি, জলবন্দি মানুষের উদ্ধার ও ত্রাণ শিবিরে ত্রাণ বিতরণ, শিশু খাদ্য পরিবেশন, পশু খাদ্য বিতরণ, পানীয়জল, চিকিৎসা পরিসেবা ইত্যাদি নিয়ে কোন ধরনের গাফলতি বরদাস্ত হবেনা সাফ জানিয়ে দেন।
বিভাগীয় আধিকারিকদের বিনা অনুমতিতে হেডকোয়ার্টার না ছাড়তে নির্দেশ দেন জেলা কমিশনার।
বিভিন্ন সার্কেলে ত্রাণ বণ্টন পর্বে সরজমিনে উপস্থিত থেকে পর্যবেক্ষণ করতে অতিরিক্ত জেলা আয়ুক্তদের নির্দেশও দেন জেলা কমিশনার।
এছাড়াও তিনি আধিকারিকদের, সংশ্লিষ্ট রাজস্ব চক্রের অন্তর্গত খোলা ত্রাণ শিবির সহ পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতির উপর তীক্ষ্ণ দৃষ্টি রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন।
বুধবারের এই জরুরি সভায় জেলা শাসক প্রতিটি বিভাগকে সংকটের সময় জনগণের স্বার্থে কঠোরভাবে কাজ করতে নির্দেশ দেন।
সভায় ডিডিসি ই এল ফাইরেম, জেলা পরিষদের নির্বাহী আধিকারিক রুথ লিয়েনথাং, এডিসি যথাক্রমে ত্রিদিব রায়, দীপমালা গোয়ালা, রক্তিম বরুয়া, অমিত পারবসা, এল খিংতে সহ চক্র আধিকারিকরা এবং পুলিশ ও জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরের আধিকারিকগনও উপস্থিত ছিলেন।
জেলা কমিশনার এদিন বন্যায় হাইলাকান্দি এবং পার্শ্ববর্তী কাছাড় জেলার যোগাযোগের ব্যাহত সংযোগী রাস্তা পুনরায় শুরু করতে সংশ্লিষ্ট বিভাগকে তৎপর হতে নির্দেশ দেন।
অন্যদিকে, ত্রাণ শিবির গুলোতে আশ্রয় নেওয়া জনগণের জন্য যাবতীয় ব্যাবস্থা বন্দোবস্ত করতে সঠিক পরিকল্পনা গ্রহণ করতেও তিনি নির্দেশ দেন।
একিভাবে শিশু খাদ্য সহ পশু খাদ্যও জন দুয়ারে পৌঁছে দিতে পশু চিকিৎসা বিভাগকে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
বন্যা কবলিত এলাকার রাস্তায় ঘুরে বেড়ানো গরু বাছুরদেরও পর্যাপ্ত চিকিৎসা ব্যাবস্থার বন্দোবস্ত করতে নির্দেশ দেন।
তাছাড়া ডিডিএমএ বিভাগকে সবধরনের খবর সংগ্রহ করে যথাসময়ে জনজনকে পরিষেবা দিতেও বলেন।
প্রত্যন্ত এলাকায় খাদ্য সামগ্রী পাঠাতে ট্রাক, নৌকা ইত্যাদি রিকিউজিশন করতেও বিভাগীয় কতৃপক্ষের প্রতি কঠোর পদক্ষেপ নিতে বলেন তিনি।
এদিকে বুধবার জেলার নদী গুলির জল কমলেও সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে।
উল্লেখ্য, বুধবার পর্যন্ত জেলার ১৫৬টি রাজস্ব গ্রামের ১ লক্ষ ৭২ হাজার ৬৩৯ জন লোক বন্যার কবলে রয়েছেন।
এরমধ্যে ২৫টি রিলিফ ক্যাম্পে সাত হাজার ৪২ বন্যা দুর্গত আশ্রয় নিয়েছেন এবং আরো ৬৮টি রিলিফ সেন্টারে ৩৬ হাজার ৯০০ জন আশ্রয় নিয়েছেন।
ত্রাণ হিসাবে বুধবার চাল ২৯৯ কুইন্টাল, ডাল ৫৫ কুইন্টাল, লবণ ১৬ কুইন্টেল ভোজ্য তেল ১৬৬১ লিটার ১৮ কুইন্টাল পশু খাদ্য বন্টন করা হয়েছে।