বদরপুর, ৯ নভেম্বর : সাংবাদিক উত্তমকুমার সী-র সাম্প্রতিক প্রকাশিত ‘প্রলয়ের ইতিকথা’ গ্রন্থের ওপর এক মনোজ্ঞ আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয় বদরপুরের স্কাউট হাটে।
মঙ্গলবারের এই অনুষ্ঠানে মুখ্য বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন বদরপুরের ঝিনুক সাংস্কৃতিক সংস্থার অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা, বর্তমানে কলকাতার বাসিন্দা বিশিষ্ট কবি ও চলচ্চিত্রকর্মী পার্থপ্রতিম মৈত্র।
‘বিপর্যয়ের দস্তাবেজ রাখার প্রাসঙ্গিকতা’ শীর্ষক আলোচনায় তিনি বলেন, শুধু বন্যা নয়, যে কোনও ঘটনা বা বিপর্যয়ই হোক, মানুষ পরবর্তী সময় সবকিছুই ভুলে যায়। তাই প্রয়োজন বিপর্যয়ের দস্তাবেজ নথিবদ্ধ করে রাখা।
কারণ, উত্তরণের পথে এটাই পরবর্তীতে দিকনির্দেশ করে। ‘প্রলয়ের ইতিকথা’ গ্রন্থটিও আগামী দিনে বন্যা থেকে উত্তরণের দিকনির্দেশ করতে পারে।
তিনি বরাক উপত্যকায় ১৯৮৫ সালের বা এরও আগে কিংবা পরের বন্যাগুলোর প্রসঙ্গে বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরেন। পার্থপ্রতিম বলেন, বন্যা ম্যানমেড কিংবা যেভাবেই হোক, মূলত এর পেছনে বিভাগীয় অবহেলা ও দুর্নীতিই দায়ী।
উত্তমকুমার সী শিলচরের ভয়াবহ বন্যার ওপর যে কাজটি করেছেন, তা ভবিষ্যতে দলিল হয়ে থাকবে।
এরকম কাজের ভিত্তিতে বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করে বন্যার কারণ ও তাঁর প্রতিকারে সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে।
অনুষ্ঠানে এনএফ রেলওয়ে মজদুর ইউনিয়নের বদরপুর শাখা সম্পাদক উত্তমকুমার দাস, বরাক ভ্যালি ভলান্টারি ব্লাড ডোনারস ফোরামের করিমগঞ্জ জেলা সম্পাদক বরুণ দাশগুপ্ত, শ্রমিক নেতা তরুণ গুহ, বদরপুর প্রেস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মৃত্যুঞ্জয় দাস, উপদেষ্টা সুব্রত দাস প্রমুখ বাইশের বন্যা এবং পরবর্তী সরকারি তৎপরতা নিয়ে আলোচনা করেন।
অনুষ্ঠানে প্রায় সব বক্তাই ঘটা করে ‘নমামি বরাক’ আয়োজনের পরেও বরাকে নদী খননের কাজ কতটুকু হয়েছে, এ নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন।
পাশাপাশি উপত্যকার প্রতিটি নদী-উপনদী বা শাখানদীগুলোর বাঁধ মেরামত ও প্রয়োজনে নির্মাণের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।
এক্ষেত্রে দুর্নীতি রোধ করার জন্য এলাকাবাসীকে সজাগ থাকার পরামর্শ দেন। শুরুতে বইয়ের লেখক সাংবাদিক উত্তমকুমার সী অনুষ্ঠানের উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা করেন। অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ঝিনুকের কর্মকর্তা ও নাট্যকর্মী বিশ্বরূপ ভট্টাচার্য, শিক্ষাবিদ অরুণ ভট্টাচার্য, নৃত্যশিল্পী রূপেন্দু দাস প্রমুখ।