গন আওয়াজ অনলাইন ডেক্স, ২৮ অগাস্ট, রবিবার : উত্তর প্রদেশের নয়ডায় আজ বড় বিস্ফোরণ ঘটিয়ে সুপারটেক টুইন টাওয়ার ভবন গুঁড়িয়ে দেওয়া হল।
বিস্ফোরণে আশপাশের অবকাঠামোগুলো যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, তা নিশ্চিত করতে আগেই প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে লোকজনকে।
বিধি লঙ্ঘন করে দুটি ভবন নির্মাণের প্রমাণ পাওয়ায় সুপ্রিম কোর্টের আদেশ অনুসারেই দেওয়া হবে। নির্মাতা প্রতিষ্ঠানটি প্রতিটি টাওয়ারে ৪০ তলা নির্মাণের পরিকল্পনা করেছিল।
কিন্তু আদালতের নির্দেশের কারণে কিছু তলা নির্মাণ করা হয়নি এবং বিস্ফোরণের আগেই ভবনের কিছু তলা ম্যানুয়েল পদ্ধতিতে ভেঙে ফেলা হয়েছে।
দুটি টাওয়ারের মধ্যে অ্যাপেক্স টাওয়ারে ৩২টি তলা এবং সেয়ান নামের টাওয়ারে রয়েছে ২৯টি তলা। অ্যাপেক্স ভবনটি ১০৩ মিটার এবং সেয়ান ভবনটি ৯৭ মিটার উচু।
টুইন টাওয়ার ধ্বংসের জন্য ৩ হাজার ৭০০ কেজির বেশি ওজনের বিস্ফোরক ব্যবহার করা হবে। দুটি ভবনের স্তম্ভে প্রায় ৭ হাজার ছিদ্রের ভেতর বিস্ফোরক ঢোকানো হয়েছে।
বিস্ফোরণে স্তম্ভগুলো সোজাসুজি নিচে পড়ে ব্যাবস্থা নেওয়া হয়েছে যাকে ‘ওয়াটারফল টেকনিক’ বলা হয়।
প্রকল্প প্রকৌশলীর তথ্য অনুযায়ী, ৯ সেকেন্ডে ভবনটি ভেঙে পড়বে। বাতাসের গতির ওপর নির্ভর করে প্রায় ১২ মিনিট ধরে ধ্বংসাবশেষ থেকে ধুলা উড়বে।
বিধ্বস্ত ভবন এলাকায় প্রায় ৫৫ হাজার টন আবর্জনা তৈরি হবে। এগুলো পরিষ্কার করতে তিন মাস সময় লাগতে পারে।
ধারণা করা হচ্ছে, বিস্ফোরণের কারণে ৩০ মিটার ব্যাসার্ধের জায়গাজুড়ে কয়েক সেকেন্ড কম্পন অনুভূত হবে। এ কম্পনের সম্ভাব্য মাত্রা হবে সেকেন্ডে প্রায় ৩০ মিলিমিটার, যা রিখটার স্কেলে শূন্য দশমিক ৪ মাত্রার ভূমিকম্পের সমান।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেছেন, নয়ডার অবকাঠামোগুলো ৬ মাত্রার ভূমিকম্প পর্যন্ত সহনীয় করে বানানো।
ভবনটি গুঁড়িয়ে দেওয়ার আগে ওই এলাকার প্রায় সাত হাজার বাসিন্দাকে সরে যেতে বলা হয়েছে। প্রায় আড়াই হাজার গাড়িকে ওই এলাকার বাইরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
ভবন গুঁড়িয়ে দেওয়ার পর আশপাশের ভবনে বিকেল চারটা নাগাদ গ্যাস এবং বিদ্যুৎ সরবরাহ আবারও সচল করা হবে। আর সাড়ে পাঁচটা নাগাদ স্থানীয় লোকজন নিজ এলাকায় ফিরে আসতে পারবেন।
আশপাশের ভবনন গুলকে ধুলা থেকে বাঁচাতে এগুলোকে বিশেষ কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখা হবে। ১০০ কোটি টাকার বিমার আওতায় থাকা ভবনটি গুঁড়িয়ে দেওয়া হবে। আশপাশের কোনো ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হলে এই বিমার টাকায় ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।
৯ বছরের আইনি লড়াইয়ের পর মুম্বাইভিত্তিক কোম্পানি এডিফিস ইঞ্জিনিয়ারিংকে এ দুটি টাওয়ার গুঁড়িয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সুপারটেক এমার্যাল্ড কোর্ট সোসাইটি প্রাঙ্গণে বিধি লঙ্ঘন করে টাওয়ার দুটি নির্মিত হওয়ার প্রমাণ পেয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট। গত বছরের আগস্টে ভবনটি গুঁড়িয়ে দিতে তিন মাসের সময়সীমা দিয়েছিল আদালত। তবে কারিগরি জটিলতার কারণে এ প্রক্রিয়া শুরু করতে এক বছর লেগে যায়।