নয়াদিল্লি, ১৪ মার্চ : ভারতে ২০২৪-২৫ সালের মধ্যে ৩৫,০০০ কোটি টাকার প্রতিরক্ষা রপ্তানি সহ ১,৭৫,০০০ কোটি টাকার প্রতিরক্ষা উতপাদনের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে সরকার।
সোমবার রাজ্যসভায় এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিরক্ষা প্রতিমন্ত্রী অজয় ভাট বলেছেন, ২০২১-২২ সালে বেসরকারী এবং সরকারী ক্ষেত্রে প্রতিরক্ষা নির্মাতাদের উৎপাদনের মূল্য ছিল ৮৬,০৭৮ কোটি টাকা।
তাদের উৎপাদনের মূল্য ছিল ২০২০-২১ সালে ৮৮,৬৩১ কোটি টাকা এবং ২০১৯-২০ সালে ৬৩,৭২২ কোটি টাকা।
২০১৮-১৯ সালে উৎপাদন মূল্য ছিল ৫০,৪৯৯ কোটি টাকা এবং ২০১৭-১৮ সালে ৫৪,৯৫১ কোটি টাকা।
তিনি জানান, প্রতিরক্ষা রপ্তানির মূল্য ২০২১-২২ সালে ১২,৮১৫ কোটি টাকা ছিল, কিন্তু চলতি অর্থবছরে এই মাসের ৬ তারিখ পর্যন্ত বেড়ে এই সংখ্যা ১৩,৩৯৮ কোটিতে পৌঁছেছে।
অন্য এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, সশস্ত্র বাহিনীর আধুনিকীকরণ একটি দীর্ঘমেয়াদী সমন্বিত পরিকল্পনার ভিত্তিতে ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া।
ভাট বলেছেন, ২০২২-২৩ অর্থ বছরে মূলধন অধিগ্রহণের জন্য ১,২৪,৪০৮.৬৬ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে, যা ২০২৩-২৪ সালের জন্য ১,৩২,৭২৭ কোটি টাকায় উন্নীত হয়েছে।
এছাড়াও, ডিআরডিও দেশীয় অস্ত্র ও প্রযুক্তির উন্নয়নের জন্য গত তিন বছরে ২৩,৭২২ কোটি টাকা ব্যয়ে ৫০টি মিশন মোড এবং প্রযুক্তি উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, ভারতীয় নৌবাহিনী মহিলাদের জন্য সব শাখা খুলেছে। এই শাখাগুলো হল এক্সিকিউটিভ, ইঞ্জিনিয়ারিং, ইলেকট্রিক্যাল এবং শিক্ষা ইত্যাদি।
কার্যনির্বাহী শাখার অধীনে নিয়োগের জন্য আবেদনকারী নারীর সংখ্যা ৩৯৪১, প্রকৌশল শাখায় ৩৬০ এবং বৈদ্যুতিক শাখায় ৬৫২ জন।
এ ছাড়া শিক্ষা শাখায় আবেদন করেছেন ৪১১ জন নারী।
এদিকে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর জন্য কালাশনিকভ AK-203 রাইফেল বর্তমানে উৎপাদন ও পরীক্ষার পর্যায়ে রয়েছে।
ইন্দো-রাশিয়ান জয়েন্ট ভেঞ্চার ইন্দো-রাশিয়ান রাইফেলস প্রাইভেট লিমিটেড উত্তরপ্রদেশের কোরওয়া আমেথিতে, দেশীয় অ্যাসল্ট রাইফেল তৈরিতে নিযুক্ত রয়েছে।
এটি ভারতীয় প্রতিরক্ষা বাহিনীকে অ্যাসল্ট রাইফেলের ব্যাপারে স্বনির্ভরতা দেবে।
প্রতিরক্ষা প্রতিমন্ত্রী তালিকাভুক্ত দেশীয় প্রতিরক্ষা প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে ১৫৫ মিমি আর্টিলারি গান সিস্টেম ‘ধানুশ’, হালকা যুদ্ধ বিমান তেজস, সারফেস-টু-এয়ার মিসাইল সিস্টেম ‘আকাশ’, প্রধান যুদ্ধ ট্যাঙ্ক ‘অর্জুন’, T-90 ট্যাঙ্ক, T-72 ট্যাঙ্ক, চিতা হেলিকপ্টার এবং উন্নত হালকা হেলিকপ্টার Dornier DO-228.।
তিনি বলেন, দেশে প্রতিরক্ষা সরঞ্জামের দেশীয় নকশা, উন্নয়ন ও উৎপাদনকে উৎসাহিত করতে বিভিন্ন নীতিগত উদ্যোগের লক্ষ্য আমদানির ওপর নির্ভরতা কমানো।
তথ্য অনুসারে ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত, বিদেশী উৎস থেকে প্রতিরক্ষা সংগ্রহের ব্যয় ২০১৮-১৯ সালে মোট ব্যয়ের ৪৬ শতাংশ থেকে ৩৬.৭ শতাংশে নেমে এসেছে।
প্রতিরক্ষা প্রতিমন্ত্রী বলেছেন যে প্রতিরক্ষা শিল্প সহযোগিতা বাড়ানোর জন্য ভারত নিয়মিত বন্ধুত্বপূর্ণ বিদেশী দেশগুলির (এফএফসি) সাথে যোগাযোগ করে। তিনি বলেন, এফএফসি-এর সাথে প্রতিরক্ষা শিল্প সহযোগিতার লক্ষ্য হল নতুন প্রযুক্তির উন্নয়ন, গবেষণা ও উন্নয়ন এবং উৎপাদন, প্রতিরক্ষা রপ্তানির প্রচার, যৌথ উদ্যোগ প্রতিষ্ঠা, ভারতীয় MSME ও বৈশ্বিক সরবরাহ স্টার্টআপগুলির একীকরণ।