বিশেষ সভা করে নিয়মিত সচেতনামূলক অনুষ্ঠান আয়োজনের সিদ্ধান্ত
জুলি দাস
করিমগঞ্জ, ২৫ মার্চ : চড়ুই পাখির সংরক্ষণের জন্য সচেতনতা বৃদ্ধিতে জোর দিয়েছে করিমগঞ্জ কলেজের প্রাণীবিদ্যা বিভাগ।
এনিয়ে এক বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, এখন থেকে চড়ুই পাখি নিয়ে লাগাতার সচেতনামূলক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে।
সর্বদা মানুষের বসবাসের পাশেই বাসা করে থাকে চড়ুই পাখি, কিন্তু মানুষের উন্নতির পাশাপাশি তৈরি হচ্ছে বড় বড় অট্টালিকা।
ছোট, ছোট হাট-এর স্থান নিয়ে নিচ্ছে বড়-বড় শপিংমল। যার ফলস্বরূপ হ্রাস পেতে শুরু করেছে চড়ুই-এর সংখ্যা।
এ বিষয়ে সচেতনতা জাগানোর উদ্দেশ্যে শুক্রবার করিমগঞ্জ কলেজের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের উদ্যোগে আয়োজিত হয় চড়ুই সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি অনুষ্ঠান।
উপস্থিত ছিলেন করিমগঞ্জ কলেজের অধ্যক্ষ ড০ রামানুজ চক্রবর্তী, প্রাণীবিদ্যা বিভাগের প্রধান ড০ প্রদীপকুমার নাথ, আভ্যন্তরীণ গুনমান নির্ধারণ কোষের সমন্বয়ক তথা পদার্থবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড০ সুজিত তিওয়ারি , সুব্রত দাস, শুভাশিস রায়চৌধুরী শুভ অন্যান্যরা।
বিভাগীয় প্রধান ড০ অনুপ দে বলেছেন বাঘ, সিংহ বা অন্য প্রাণীর মতো চড়ুইয়ের সংখ্যা মাপার চেষ্টা হয়নি কখনও বা চড়ুইকে নিয়ে সংরক্ষণ সম্পর্কিত তেমন কিছু ভাবাও হয়নি।
এর ফলে কিছুটা অবহেলিত থেকে গেছে চড়ুই পাখিরা। কিন্তু তাদের সংরক্ষণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
অধ্যক্ষ রামানুজ চক্রবর্তী ছোটবেলা থেকে গ্রাম্য জীবনের এক অবিচ্ছেদ অঙ্গ হিসাবে চডুই পাখির কথা উল্লেখ করেন।
ড০ সুজিত তিওয়ারি বলেন, ১৯৬০ সালে চিনে চডুইপাখিকে সামগ্রিকভাবে নির্মূল করার ফল ভোগতে হয়েছিল মাও সে তুং-এর চিনকে।
সে সময় আড়াই লক্ষ মানুষকে দুর্ভিক্ষে প্রাণ হারাতে হয়েছিল চিনে। কেননা চড়ুই পাখি আমাদের খাদ্যচক্রের এক গুরত্বপূর্ন অঙ্গ।
তিনি চড়ুই পাখির সংরক্ষণে এগিয়ে আসা করিমগঞ্জ কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের প্রয়াসকে সাধুবাদ জানান।
উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক সুব্রত দাস চাষাবাসের সময় বিভিন্ন ধরনের কৃত্রিম সার তথা কীটনাশক ব্যবহারের ফলে চড়ুই পাখির সংখ্যা হ্রাস পাচ্ছে বলে উল্লেখ করেন।
একই সুরে কথা বলেন অধ্যাপক প্রদীপকুমার নাথ। তাঁর মতে, আমরা জৈবিক সার ব্যবহার করে অনেক চড়ুই পাখি রক্ষা করতে পারি। মানুষকে সচেতন করার সত্যি কোন বিকল্প নেই।
এদিন চড়ুই পাখির সংরক্ষণ নিয়ে কেন্দ্র প্রকল্প উপস্থাপন করেন কলেজের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের ছাত্র-ছাত্রীরা।
সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে, এখন থেকে মধ্যে মধ্যে এ নিয়ে অনুষ্ঠান করবে প্রাণীবিদ্যা বিভাগ।
আসলে করিমগঞ্জ কলেজের বিভিন্ন জায়গায় চড়ুই পাখি বাসা বেঁধেছে, কিন্তু ঠিকমত সংরক্ষণের বন্দোবস্ত না থাকায় কলেজের ভিতর ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে চড়ুই পাখিগুলি।
বিষয়টি সম্প্রতি নজরে আসে অধ্যাপক ড০ সুজিত তিওয়ারির।
তিনি এ নিয়ে একটি সচেতনতামূলক অনুষ্ঠান আয়োজন করার প্রস্তাব দেন কলেজের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের ছাত্র-ছাত্রীদের।
মূলত তাঁর উদ্যোগেই এদিনের অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়।
চড়ুই পাখিকে ঠিকমতো রাখার বন্দোবস্ত করে দিতে প্রাণীবিদ্যা বিভাগের ছাত্র-ছাত্রীরা গত কয়েকদিন থেকে চড়ুই পাখি থাকার উপযুক্ত কয়েকটি ছোট গৃহ (কার্টুন এবং ক্ষের মিশ্রিত) তৈরি করেছে। আরো এ ধরনের ছোট গৃহ নির্মাণ করবে বলে সভায় সিদ্ধান্ত হয়।