গুয়াহাটি, ২৯ জানুয়ারি : হিমন্ত বিশ্ব শর্মার সরকার ক্ষমতায় আসার পর অসমে পুলিশের ক্ষমতা এক নতুন মাত্রা পেয়েছে, এর আগে পুলিশকে এত কঠোর হতে দেখা যায়নি।
বিশেষ করে গুরুতর অপরাধীদের ক্ষেত্রে একের পর এক এনকাউন্টারের ঘটনা যেমন অপরাধীদের কাছে ত্রাসের সঞ্চার করেছে তেমনি প্রবল সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে সরকারকে। বিষয়টি হাইকোর্ট পর্যন্তও গড়িয়েছে।
তবে এনকাউন্টার নিয়ে গৌহাটি হাইকোর্ট শুক্রবার বড় স্বস্তি দিয়েছে হিমন্তবিশ্ব শর্মা সরকারকে।
হিমন্ত ক্ষমতায় আসার পর রাজ্যে শতাধিক ভুয়ো এনকাউন্টার সংঘটিত হয়েছে, এমন অভিযোগে বেশ কটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছিল।
পুলিশ এনকাউন্টার সংক্রান্ত এই মামলাগুলি খারিজ করে দিয়ে হাইকোর্ট এদিন বলেছে, প্রতিটি কথিত ঘটনায় রাজ্য সরকার আলাদা আলাদা তদন্ত করছে তাই এতে নতুন করে তদন্তের প্রয়োজন নেই।
বিচারপতি সুমন শ্যাম ও বিচারপতি সুস্মিতা ফুকন খাউন্ডকে নিয়ে গঠিত গৌহাটি হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ এদিন জনস্বার্থ মামলাটির জন্য মামলাকারীর সমালোচনাও করেছেন।
বেঞ্চ জানিয়েছে, তথ্যপ্রমাণ যাচাই না করেই আইনজীবী আরিফ মহম্মদ ইয়াসিন জবাদ্দার মামলাটি দায়ের করেছেন।
এক সরকারি হলফনামার উদ্ধৃতি দিয়ে হাইকোর্ট বলেছে, ২০২১ সালের মে থেকে ২০২২ সালের আগস্ট অবধি ১৭১টি ‘পুলিশ এনকাউন্টার’-এর ঘটনা ঘটেছে।
এতে ৫৬ জন মারা গিয়েছেন। এই তালিকায় চার জন হেফাজতে মারা গিয়েছেন এবং ১৪৫ জন জখম হয়েছেন। হাইকোর্ট বলেছে, ১৭১টি আলাদা আলাদা এফআইআর দায়ের করা হয়েছে ঘটনাগুলি নিয়ে।
সরকারিভাবে এ ঘটনাগুলি অস্বীকার করা হয়নি বা তথ্য গোপন করার কোনও চেষ্টা সরকারের তরফে হয়নি। এটাই সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ।
তবে আবেদনকারী আরিফ এসব কথিত পুলিশ এনকাউন্টার নিয়ে সিবিআই বা বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন করে তদন্ত করার আর্জি জানিয়েছিলেন।
এনিয়ে, হাইকোর্টের ভাষ্য হল, একাংশ সংবাদমাধ্যমের রিপোর্ট দেখেই সম্ভবত তিনি দ্বারস্থ হয়েছেন হাইকোর্টের। তথ্যপ্রমাণ যাচাই করে দেখেননি।
হাইকোর্ট আরিফের আর্জি খারিজ করে দিয়ে বলেছে, এধরনের তদন্ত তখনই করানো হয় যখন রাজ্য সরকার এ সংক্রান্ত অভিযোগে কোনও উপযুক্ত ব্যবস্থা নেয় না বা অপরাধীদের আড়াল করার চেষ্টা করে।
অন্যদিকে, অ্যাডভোকেট জেনারেল দেবজিৎ শইকিয়া হাইকোর্টকে আশ্বস্ত করে বলেন, তদন্ত শেষে দোষ প্রমাণিত হলে দোষী পুলিশ আধিকারিকদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।