নয়াদিল্লি, ৮ এপ্রিল : নতুন জাতীয় শিক্ষানীতির আওতায় আগামী বছর থেকে স্কুলে যে নতুন পাঠ্যক্রম চালু হবে তা শুধু শিশুদের শিক্ষাই নয় বদলে দেবে তাদের পুরো জীবন।
কারণ এর অধীনে প্রণীত পাঠ্যক্রমটি এমনভাবে ডিজাইন করার সুপারিশ করা হয়েছে যাতে শিশুদের পড়া ও শেখানোর মধ্যে সীমাবদ্ধ রেখে তাদের সার্বিক বিকাশের দিকেও নজর দেবে।
প্রতিটি স্তরে তাদের জ্ঞান এবং শেখার ক্ষমতা পরীক্ষা করা হবে।
এছাড়াও, তাদের যে কোনও একটি দক্ষতার সাথে সংযুক্ত করবে। শুধু তাই নয়, মৌলিক স্তর থেকে শিশুদের মধ্যে নৈতিক মূল্যবোধ ও ভারতীয় শিকড়ের বীজও বপন করা হবে।
যাতে ভবিষ্যতে ওই ব্যক্তিত্ব বিকাশে নতুন উচ্চতা দিতে পারেন।
ন্যাশনাল কারিকুলাম ফ্রেমওয়ার্কের (এনসিএফ) খসড়াটি নতুন স্কুল কারিকুলাম তৈরির জন্য প্রকাশিত হয়েছে যা শিশুদের অপ্রয়োজনীয় বোঝা থেকে মুক্ত রেখে প্রতিটি স্তরে শিশুদের সর্বাত্মক বিকাশের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে।
এতে তাদের এমন উপাদান শেখানোর সুপারিশ করা হয়েছে, যা তাদের জ্ঞানের স্তর শক্তিশালী করবে এবং তাদের ভারতীয় শিকড়ের সাথে সংযুক্ত করবে।
এই কাঠামোতে জোর দেওয়া হয়েছে যে, যা কিছু শেখানো হয় তার শেখার ফলাফল অবশ্যই পরীক্ষা করা উচিত।
এর সাথে তাদের যে বিষয়বস্তু শেখানো উচিত তা ভারতীয় বা ভারতীয় জ্ঞান ঐতিহ্যের সাথে সম্পর্কিত হওয়া উচিত।
উদাহরণ স্বরূপ, গণিতের বিষয়ে যদি একজন গণিতবিদের উদাহরণ দিতে হয় তাহলে শুধু বোধায়ন, পাণিনি, আর্যভট্ট, ভাস্কর, রামানুজাম ভারতীয় গণিতবিদদের পড়ানো উচিত।
একইভাবে চিহ্নের উদাহরণ দেওয়ার ক্ষেত্রে ভারতীয় চিহ্ন রাখতে হবে। গেম এবং খেলনা শুধুমাত্র ভারতীয় রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়।
পাশাপাশি প্রতিটি স্তরে শিশুদের সামর্থ্যও পরীক্ষা করা হবে। তাদের আগ্রহ বা যে ক্ষেত্রে তারা আরও ভাল পারফর্ম করছে তা অনুসরণ করতে সহায়তা করা হবে।
শিশুদের সার্বিক বিকাশে নৈতিক মূল্যবোধের পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগেরও বড় ভূমিকা রয়েছে বলে নতুন নীতিমালায় বিশ্বাস করা হয়েছে।
সামাজিক কাঠামোতে যে ধরনের পরিবর্তন ঘটছে, তাতে এই মূল্যবোধগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ হবে।
এমতাবস্থায় পাঠ্যক্রমে পারস্পরিক সম্প্রীতি বৃদ্ধি, প্রবীণদের প্রতি সেবা, সৌজন্য, দেশপ্রেম ইত্যাদি শেখানো হবে। পরিবেশের সাথে সংযোগ এবং ভারতীয় সংবিধানের গুরুত্বপূর্ণ অংশগুলিও শেখানো হবে।
স্কুলে সভা বা পঞ্চায়েত ইত্যাদি আয়োজনেরও সুপারিশ করা হয়েছে।
এ ছাড়া ভারতীয় ইতিহাসের বিষয়বস্তুতে স্বাধীনতা আন্দোলন সম্পর্কিত দিকগুলো গুরুত্ব সহকারে শেখানোর সুপারিশ করা হয়েছে।
এতে স্বাধীনতা আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত এমন অজ্ঞাতনামা যাদের সম্পর্কে মানুষ এখনও অবগত নয় এমন মুখদের অন্তর্ভুক্ত করার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।
তাৎপর্যপূর্ণভাবে, ছয় শতাধিক পৃষ্ঠার এই জাতীয় শিক্ষাক্রম কাঠামোর খসড়াটি সরকারের পক্ষ থেকে সবার পরামর্শের জন্য রাখা হয়েছে। এরপরই চূড়ান্ত করা হবে।