গুয়াহাটি প্রতিনিধি : কংগ্রেস সাংসদ গগৈর স্ত্রী এলিজাবেথ কলবার্নের সাথে পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই-এর যোগসূত্রের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মার অভিযোগ নিয়ে রাজ্যে চলছে তুলপাড়।
কিন্তু, এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে সাংসদ গৌরব গগৈ বলেছেন, এটা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং ভিত্তিহীন।
কেবল তাই নয়, একজন সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে গগৈ ক্ষমতাসীন বিজেপিকে মানহানির অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করার অভিযোগ এনেছেন মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মার বিরুদ্ধে।
তাঁর প্রশ্ন, যখন একটি দল সম্পূর্ণ মানহানির উপর রাজনীতি গড়ে তোলে, তখন কতগুলি মানহানি মামলা দায়ের করা সম্ভব?
তাদের পুরো যন্ত্রপাতি সুনাম নষ্ট করার উপর টিকে থাকে। আমি যদি আজ একটি মামলা দায়ের করি, তাহলে তারা আগামীকাল আমাকে আরও দুটি কারণ দেখাবে, বলেন গৌরব।
এদিকে, গগৈ অভিযোগকে অযৌক্তিক এবং এগুলিকে সি-গ্রেড বলিউড সিনেমার গল্পের সাথে তুলনা করে মুখ্যমন্ত্রী আগামি ১০ সেপ্টেম্বর আরও বিস্তারিত প্রকাশের দাবী করেছেন।
অন্যদিকে, প্রথমবারের মতো গগৈ স্পষ্ট করেন, তার স্ত্রী একজন জননীতি বিশেষজ্ঞ, ২০১৩ সালে দক্ষিণ এশিয়ার জন্য জলবায়ু পরিবর্তন প্রকল্পে কাজ করার সময় এক বছর পাকিস্তানে ছিলেন।
তিনি বলেন, এক বছর পাকিস্তানে থেকে ২০১২-১৩ সালে ভারতে ফিরে আসেন এবং তখন থেকে এখানে কাজ করছেন।
গগৈ ২০১৩ সালে তার স্ত্রীর সাথে থাকার কথা স্বীকার করেছেন, কিন্তু কোনও অন্যায় কাজ অস্বীকার করেছেন।
তিনি আসাম সরকার এবং কেন্দ্রীয় কর্তৃপক্ষকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে প্রশ্ন তুলেন, যে তারা যদি বিশ্বাস করে কোনও অবৈধ কার্যকলাপ ঘটেছে তবে কেন তারা এক দশকেরও বেশি সময় ধরে নীরব ছিল।
যদি আমার স্ত্রী অথবা আমি সেই ভ্রমণের সময় কোনও অবৈধ কাজ করে থাকি, তাহলে গত ১১-১২ বছর রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় স্তরে সরকার কী করছে?
তিনি সীমান্ত অতিক্রম করার ব্যাপারে তদন্তের বিষয়টি তুলে ধরে ধরে বলেন, সীমান্ত অতিক্রম করা কোনও সাধারণ ব্যাপার নয়।
অভিবাসন কর্তৃপক্ষ প্রতিটি ভ্রমণকারীর পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে নথিভুক্ত করে, যাচাই করে এবং ট্র্যাক করে। এগুলি স্ট্যান্ডার্ড আন্তর্জাতিক পদ্ধতি জানান গগৈ।
তাঁর দাবি, মিথ্যা অভিযোগ তুলে আসামের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি থেকে সাধারণ মানুষের মনোযোগ সরানোর লক্ষ্য মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা এবং তাঁর দল বিজেপির।
একজন সোচ্চার বিরোধী নেতা হিসেবে গগৈ বলেছেন, তিনি কখনও তার পটভূমির কোনও অংশ গোপন করেননি।
তিনি ভয় ছাড়াই সংসদে স্বাধীনভাবে কথা বলেন। সম্পূর্ণ পেশাদার পটভূমি, তাঁর বায়োডাটা, সবকিছুই জনসাধারণের কাছে উপলব্ধ।
এর জবাবে, মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা এক্স-এ বলেন, স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতার প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ আসাম সরকার।
বিশেষ তদন্ত দলের (SIT) তদন্ত শেষ হওয়ার পর আগামী ১০ সেপ্টেম্বর সবকিছু প্রকাশ করা হবে।
এখন রাজ্যের জনগনের দেখার বিষয় মুখ্যমন্ত্রী আগামী ১০ সেপ্টেম্বর এব্যাপারে কি তথ্য প্রকাশ করেন।