বিশালগড় : হিজাব নিষিদ্ধ করায় সংখ্যালঘু মুসলিমদের কোরোইমুরা উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শনের পর ত্রিপুরার সেপাহিজালা জেলা, বিশালগড় মহকুমায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।
তাদের অভিযোগ বিশ্ব হিন্দু পরিষদের (ভিএইচপি) চাপে স্কুল অধ্যক্ষ সংখ্যালঘু ছাত্রীদের স্কুলে হিজাব না পড়ে স্কুল ড্রেস পড়ার নির্দেশ জারী করেছেন।
স্কুলের অধ্যক্ষ অভিযোগ করেছেন যে সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষের একটি দল তার কক্ষের ভিতরে ঢুকে পড়ে এবং আংশিকভাবে আসবাবপত্র ভাঙচুর করেছে।
তবে পুলিশ দাবি করেছে যে পরিস্থিতি শান্তিপূর্ণ।
সাংবাদিকদের সাথে কথা বলার সময় বিক্ষোভকারীদের একজন অভিযোগ করেছেন যে গত কিছুদিন থেকে স্থানীয় যুবকরা স্কুলে আসছে এবং সংখ্যালঘু ছাত্রীদের হিজাব না পরার জন্য হুমকি দিচ্ছে।
তাদের সঙ্গে স্কুলের শিক্ষকরাও যোগ দিয়েছেন এবং মুসলিম শিক্ষার্থীদের হিজাব পরে স্কুলে না আসার নির্দেশ দিয়েছেন।
অন্য একজন অভিভাবক দাবি করেছেন শিক্ষকদের কাছ থেকে এই নির্দেশ আসে যখন যুবকদের একটি অংশ স্কুলে প্রবেশ করে ছাত্রীদের হিজাব পরতে না দেওয়ার হুমকি দেয়।

বিক্ষোভকারীরা জানিয়েছেন, এই ব্যক্তিরা হুমকি দিয়েছে হিজাব পরা কাউকে পাওয়া গেলে জোরপূর্বক হিজাব সরিয়ে ফেলা হবে।
এদিকে কোরোইমুরা এইচএস স্কুলের অধ্যক্ষ প্রিয়তোষ নন্দী বলেছেন, একটি নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের একদল ব্যক্তি বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে প্রবেশ করে আসবাবপত্র ভাঙচুর এবং জিনিসপত্রের ক্ষতিসাধন করেছে।
তিনি বিলেন যে তাদেরকে বোঝার চেষ্টা করা হলেও তারা মানতে চায়নি।
পরবর্তীকালে আমি ঘটনাটি অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং পুলিশকে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জানিয়েছি।
তবে ঘটনার পর ভিএইচপি কর্মীরা আমার কাছে এসে হিজাব পরিধানের বিরুদ্ধে তাদের মতামত প্রকাশ করে।
এর আগে, ভিএইচপির প্রতিনিধিরা আমাকে দেখতে আসেন এবং স্কুলের ইউনিফর্ম নীতি থাকা সত্ত্বেও ছাত্রদের হিজাব পরা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
আমি তাদের বলেছি যে মুসলিম অধ্যুষিত এলাকায় স্কুলের জন্য কিছু ছাত্র তাদের সাংস্কৃতিক এবং ধর্মীয় বিশ্বাসের প্রতিফলন হিসাবে হিজাব পরা বেছে নেয়।
ভিএইচপি অনুরোধ এবং স্কুলের ইউনিফর্ম নির্দেশিকা অনুসরণ করার নীতিতে আমি ছাত্রদের হিজাব না পরার নির্দেশ দিই।
তিনি জানিয়েছিলেন যে মেয়ে শিক্ষার্থীরা স্কুলের ইউনিফর্ম পরে তবে তাদের মাথায় স্কার্ফ বাঁধে।
এ বিষয়ে সিপাহীজলা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মানবেন্দ্র চৌধুরী বলেন, সংখ্যালঘু মেয়ে শিক্ষার্থীরা হিজাব পরে স্কুলে গেলে হিন্দু সংগঠনের কিছু ছেলে তাতে আপত্তি জানায়। এতে কিছু মুসলিম যুবক বিরক্ত হয়। তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং একটি শান্তি বৈঠক আহ্বান করা হয়েছে জানিয়েছেন এসপি।