জুলি দাস
করিমগঞ্জ : বিজেপিকে পরাস্ত করতে হলে কংগ্রেস এবং এআইইউডিএফকে হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করতে হবে।
অপশক্তিকে দেশ থেকে বিতাড়িত করতে হলে এক হতে হবে। বিজেপির ‘এ’ কিংবা ‘বি’ টিম বললে তাতে বিজেপির লাভ হবে।
এই প্রতিবেদকের সঙ্গে আলোচনাকালে কথাগুলি বলেছেন জেলা এআইইউডিএফ-এর কার্যকরী সভাপতি সাহাবুল ইসলাম চৌধুরী, যিনি পারুল চৌধুরী নামে পরিচিত।
অন্যদিকে, উত্তর করিমগঞ্জ বিধানসভা নির্বাচনে নির্দল প্রার্থী হিসেবে দ্বিতীয়বার তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা ঠিক হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
করিমগঞ্জ লোকসভা আসন সংরক্ষণ মুক্ত হওয়ার পর কংগ্রেস এবং এআইইউডিএফ-এর হয়ে অনেক সংখ্যালঘু প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য মাঠে নেমেছেন।
এআইইউডিএফ-এর প্রার্থী হিসেবে নাম উঠে আসছে সাহাবুল ইসলাম চৌধুরীর।
এ ব্যাপারে তার অভিমত হল, দল আমাকে মনোনয়ন দেবে কিনা সেটা পরের কথা আগে আমাকে মানসিকভাবে ঠিক হতে হবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করব কিনা।
তবে জনগণ এবং সংগঠন আমাকে কতটুকু মেনে নেবে তা নিয়ে সার্ভে করছি।
আত্মবিশ্বাস আসলে এবং জনগণ, যারা ভোট দেবেন তাদের ইচ্ছায় গুরুত্ব দিয়ে যদি মনে হয় জনগণের ইচ্ছা আমার পক্ষে আছে তখন দলের কাছে মনোনয়ন দাবি করবো।
দল গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে মনোনয়ন দিলে লড়বো।
তিনি জানান, বদরুদ্দিন আজমল-এর নির্দেশে বর্তমানে করিমগঞ্জ এবং হাইলাকান্দিতে সংগঠন মজবুত করার কাজ চলছে।
সাহাবুল বলেছেন, উত্তর করিমগঞ্জ এআইইউডিএফ বিধানসভা সমষ্টি কমিটির সঙ্গে সম্প্রতি সভা হয়েছে, করিমগঞ্জ এবং হাইলাকান্দির অন্যান্য সমষ্টি কমিটির সঙ্গে সভা হবে।
জেলা কমিটি এবং দলের বিধায়কের সঙ্গেও আলোচনা হয়েছে।
তার দাবী, গত কুড়ি বছর ধরে অন্যায়, অবিচারের বিরুদ্ধে মোকাবিলা করার চেষ্টা করেছেন, কিন্তু সংসদীয় নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার কোনও লক্ষ্য ছিল না।
লক্ষ্য থাকার কথাও নয়, কারণ কয়েকদিন আগে করিমগঞ্জ লোকসভা আসন সংরক্ষণ মুক্ত হয়েছে।
কিন্তু জনসংযোগে চিরদিন রয়েছি, জনগণের সান্নিধ্য ছাড়া থাকা সম্ভব নয়। অভ্যাস হয়ে গেছে মানুষের সঙ্গে থাকার।
অন্য দলের প্রার্থী প্রত্যাশীদের একাংশকে কটাক্ষ করে তিনি বলেছেন, নির্বাচনে লরবেন বলে প্রার্থীর দাবিদার অনেকে করিমগঞ্জের বাড়ি, ঘর ঝারপোচ করছেন।
কারণ তারা স্থায়ীভাবে গুয়াহাটির বাসিন্দা।
এক প্রশ্নের জবাবে সাহাবুল বলেছেন, বদরুদ্দিন আজমল ডেকে নিয়ে বলেছেন প্রতিদ্বন্দ্বিতা এবং নিজেকে প্রার্থী হিসেবে উপস্থাপন করতে। দলের খামতি পূরণ করার জন্য বলেছেন।
তবুও আমার থেকে ভালো প্রার্থী পেলে সঙ্গে থাকবো, সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাবো। কারন মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে বরাক থেকে বিজেপিকে উৎখাত করা। কারন বিজেপি দেশকে বিপথে চালিত করছে।
সিরাজউদ্দিন আজমলের প্রার্থীত্বের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেছেন, বদরুদ্দিন আজমল একজন পোড়খাওয়া রাজনীতিবিদ, সিরাজউদ্দিনকে এভাবে প্রার্থী দেবেন না।
আজমল এ নিয়ে সার্ভে করছেন।
সার্ভে করে যদি দেখা যায় আমার থেকে সিরাজউদ্দিনের ফিডব্যাক ভালো, তাহলে নিশ্চয়ই প্রার্থী করবেন সিরাজউদ্দিনকে। আমি দলের হয়ে কাজ করবো, নির্দল হয়ে লড়ার প্রশ্নই উঠে না।
উত্তর করিমগঞ্জ বিধানসভা সমষ্টিতে একবার এআইইউডিএফ এবং আরেকবার নির্দল প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন সাহাবুল।
এ ব্যাপারে বলেছেন, প্রথমবার যখন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করি পুরো নতুন ছিলাম নির্দল প্রার্থী হিসেবে দ্বিতীয় বার না লড়া ভালো ছিল।
প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা ঠিক হয়নি।
তখন এক দিকে মিত্রজোট, অন্যদিকে মহাজোট। সংখ্যালঘুদের আবেগ, উচ্ছ্বাস ছিল যেকোনো ত্যাগ স্বীকার করে মহাজোটকে ভোট দিতেই হবে। এরপরও ২৯ হাজার ভোট পেয়েছি। ওই নির্বাচনে নির্দল প্রার্থী হিসেবে রাজ্যের মধ্যে এটা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ভোট ছিল।