ব্যুরো রিপোর্ট : দুর্নীতি যেন বাসা বেঁধেছে তারাপুর জিপিতে। শিলচর শহর সংলগ্ন এই জিপি গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে রাজ্য এবং কেন্দ্রের ক্ষমতায় থাকা বিজেপি দখল করে।
উন্নয়নের আশা নিয়ে বিপুল ভোটে সাধারণ মানুষ বিজেপির হাতে জিপির ক্ষমতা তুলে দেন। কিন্তু জিপির ক্ষমতা হাতে পাওয়ার পরেই শুরু হয় বিভিন্ন সরকারী প্রকল্পের অর্থ লুঠপাট।
প্রথম কয়েক বছর প্রাক্তন বিধায়ক দিলিপ পালের ছত্রছায়ায় চলে এই জিপিতে লুণ্ঠন।
কিন্তু বিধায়ক দিলিপ পাল ক্ষমতা হারালে শিলচরের বিজেপির বিধায়ক নির্বাচিত দীপায়ন চক্রবর্তী।
তার ইঙ্গিতেই জিপি সভাপতি স্বপ্না দাসকে (পাল) দুর্নীতির অভিযোগে পদ থেকে অপসারণ করা হয় এবং জিপির তদারকি সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব গ্রহন করেন উপ-সভাপতি বিদ্যারতন সিং।
কিন্তু দুর্নীতি যেন পিছু ছাড়তে চাইছে না।
এই আগস্টে কয়েক লক্ষ টাকা ব্যায়ে জিপি অফিসের গার্ড ওয়াল তৈরি করা হয়েছিল, কিন্তু শুক্রবার রাতের অল্প বৃষ্টিতে ধ্বসে পড়ে।
এব্যাপারে জিপির দায়িত্বপ্রাপ্ত সভাপতির সঙ্গে অফিসের পিয়নের ফোনে যোগাযোগ করা হলে জিপি সেক্রেটারির সঙ্গে কথা না বলে কিছুই বলতে পারবেন না সাফ জানিয়ে দেন।
এছাড়াও জিপিতে এমন আরও অনেক প্রকল্প রয়েছে যেগুলোর বছর কানেক আগে নেমপ্লেট লাগানো হলেও আজ পর্যন্ত কাজ হয়নি।
এসব নেমপ্লেটে আবার বিজেপির তাবড় তাবড় নেতার নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখা রয়েছে অথচ কাজ না করে টাকা লুণ্ঠন করা হয়েছে।
রাজু চক্রবর্তীর বাড়ী থেকে টুওয়ার্স মানবকল্যান ক্লাব ড্রেইনের কাজের জন্য ২০২০-২১ অর্থ বছরে 15th Finace-এর তিন লক্ষ চার হাজার ৯৮৭ টাকা মঞ্জুর হয়।
প্রায় দুই বছর আগে ফলক লাগানো হলেও আজও পর্যন্ত কোন কাজ হয়নি, পুরো টাকাই লুণ্ঠন করা হয়েছে।
অথচ ফলকে শিলচরের সাংসদ রাজদীপ রায়, শিলচরের বিধায়ক দীপায়ন চক্রবর্তী, জেলা পরিষদের সভাপতি অমিতাভ রাই, পশ্চিম শিলচর জেলা পরিষদ সদস্য রামকৃষ্ণ সিনহা, বিজেপির কাছাড় জেলা সভাপতি বিমলেন্দু রায়, জিপির দায়িত্বপ্রাপ্ত সভাপতি বিদ্যারতন সিং এবং জিপির এপি সদস্য পাপলি কর্মকারের নাম রয়েছে।
জিপির মানুষ এই প্রকল্পের অর্থ লুণ্ঠনের জন্য নেমপ্লেটে নাম থাকা সবাইকে দায়ী করছেন, কিন্তু এমন কোন আইন আছে কি তাদেরকে গ্রেফতার করে পকেট থেকে অর্থ আদায় করতে পারবে? এমন প্রশ্ন তুলেছেন তারা।
এরকম জিপির দাস পাড়ার রাস্তার মুখে আরও একটি প্রকল্পে নেমপ্লেট ঝল ঝল করছে। নাবার্ডের এক কোটি টাকা ব্যায়ে দাস পাড়া থেকে মজুমদার বাজার পর্যন্ত রাস্তা, ড্রেইন এবং কালভারট তৈরি করা হবে।
জেলা আয়ুক্ত রোহণ কুমার ঝা-র উপস্থিতিতে এই কাজের শুভ উদ্বোধন করেছেন শিলচরের বিধায়ক দীপায়ন চক্রবর্তী। কিন্তু ড্রেইন এবং কালভারট কোথায়? এমন প্রশ্ন তুলে জিপির মানুষ জানতে চাইছেন এটাই কি ছিল বিজেপির দুর্নীতিমুক্ত ভারত গড়ার অঙ্গীকার?