তাঁকে স্বাগত জানাতে কি কংগ্রেসে মামা ব্রিগেডে কেউ রয়েছেন?
অন্দর মহল, গণআওয়াজ : আমিনুল কি তাহলে হিমন্ত বিশ্ব শর্মার নির্দেশে কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার পরিকল্পনা করছেন?
ডিলিমিটেশনের পর থেকে বিজেপি নেতা সোনাইর প্রাক্তন বিধায়ক আমিনুল হক লস্করের কংগ্রেসে যোগ দেওয়া নিয়ে সুর গোল চলছে।
আমিনুল নিজেও বার বার এমন ইঙ্গিত দিয়ে আসছেন। বিজেপিতে যোগ দিয়ে আমিনুল অনেক কিছু আদায় করেছেন।
সোনাইর বিধায়ক হয়েছেন, বিধানসভার উপাধ্যক্ষও হয়েছেন। বর্তমান বিজেপি সরকার তাকে সংখ্যালঘু উন্নয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান করেছে।
কিন্তু কেন? আমিনুল কংগ্রেসে যোগ দিতে চাইছেন।
ডিলিমিটেশনের আগে সোনাই বিধানসভায় ভোট ভাগাভাগির ফর্মুলায় হিন্দু ভোটরা একটা ফ্যাক্টর ছিল।
তাই সুবিধাভোগী এই অগপ নেতা বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন, এবং হিন্দু ভোটে বিধায়কও নির্বাচিত হয়েছেন।
কিন্তু ডিলিমিটেশনের পর সোনাই-এ এখন আর হিন্দু ভোট কোন ফ্যাক্টর নয়। সংখ্যালঘু ভোটারা এককভাবেই তাদের বিধায়ক প্রতিনিধি নির্বাচিত করতে সক্ষম।
বিজেপি থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে আর জেতা সম্ভব নয়, কারন বিজেপি সম্পর্কে সংখ্যালঘু এলারজি রয়েছে।
বিশেষ করে সোনাই সমষ্টির সংখ্যালঘুরা সরাসরি বিজেপিকে ভোট দেবেন না।
তাই মামা হিমন্তের সঙ্গে গোপন বোঝাপড়া করেই আমিনুল কংগ্রেসে পা রাখতে চাইছেন।
এরজন্যই আমিনুল সরকারের সংখ্যালঘু উন্নয়ন বিভাগের দায়িত্বে থাকার পরও বার বার কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার কথা বলে আসছেন।
দল বিরোধিতার অভিযোগে কেউই তার বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ নেওয়ার মত আসপর্দা দেখানোর সাহস করতে পারছেন না।
মামা ব্রিগেড ক্ষেপে গেলে তাদেরকে গলা ধাক্কা দিয়ে দল থেকে বের করে দেওয়া হতে পারে।
কারন সবই চলছে মামা হিমন্ত বিশ্ব শর্মার নির্দেশে।
তিহার জেলে পাঠানোর ভয় দেখিয়ে বিজেপিতে হায়ার করা বিভিন্ন দুর্নীতির নায়ক হিমন্ত বিশ্ব শর্মার কথাই এখন দলের শেষ কথা।
কোন সময় কেউ মামার কথার বিরুদ্ধে কথা বলার চেষ্টা করলে তাঁর রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ ধূলিসাৎ করে দেওয়া হয়েছে।
রাজেন গোহাই, শিলাদিত্য দেব, রমেন ডেকা এমনকি সিদ্ধার্থ ভট্টাচার্য যার হাত ধরে হিমন্ত বিশ্বের বিজেপিতে যোগদান এসব নেতা-কর্মীরাও আজ দলে কোনঠাসা।
প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সানোয়াল ঘনিষ্ঠ থাকায় শিলচরের প্রাক্তন বিধায়ক দিলিপ পালকেও মামা ব্রিগেড গত বিধানসভা নির্বাচনে শুধু টিকিট বঞ্চিতই করেনি, দল থেকে কিকআউটও করেছে।
তিনি কয়েক দিন আগে মামা ব্রিগেডের কৃপায় ফের বিজেপিতে ফিরে আসেন। এখন মামা ভজনের উপর নির্ভর করবে তার পরবর্তী রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ।
দিলিপ পালের এই করুণ দশা দেখার পর কি কেউ মামা ব্রিগেডের বিরুদ্ধে মুখ খুলার সাহস দেখাবে?
এদিকে আমিনুল এখনও কংগ্রেসে যোগ দেননি, এমনকি লোকসভা নির্বাচনের আগে যোগ দেওয়ার সম্ভাবনাও কম।
কারন সবই চলছে মামা হিমন্ত বিশ্ব শর্মার প্ল্যান অনুসারে।
আমিনুল এখনই কংগ্রেসে যোগ দিলে লোকসভায় কংগ্রেস প্রার্থীর হয়ে কাজ করতে হবে, আর না হলে মামা-ভাগ্নের প্ল্যান ধরা পরে যাবে।
তাই তাদের প্ল্যান বিধানসভা নির্বাচনের কয়েক মাস আগে আমিনুল কংগ্রেসে যোগ দিয়ে সংখ্যালঘু ভোটে বিধায়ক নির্বাচিত হয়ে মামা ব্রিগেডে ফিরে আসবেন।
কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, কংগ্রেস কি মামা ব্রিগেডের এই চালে মাথা দেবে?
কংগ্রেসে কি মামা ব্রিগেডের লোক রয়েছে? যারা মামা ব্রিগেডের হয়ে কাজ করছে এবং আমিনুলকে কংগ্রেসে যোগ দিয়ে মনোনয়ন পাওয়া পর্যন্ত সাহায্য করবে?
সোনাই সমষ্টির সংখ্যালঘু ভোটাররাও কি আবেগে মামা ব্রিগেডের এই চালে হাত দিয়ে নিজেদের সর্বনাশ ডেকে আনবেন?
সব কিছু সময়ই জবাব দেবে। এরকম অন্তরতদন্তমুলক সংবাদ পেতে দেখতে থাকুন গণআওয়াজ এবং লাইক, শেয়ার ও কমেন্টস করে অন্যদেরকেও দেখার সুযোগ করে দিন।