অনলাইন ডেক্স, ৭ অক্টোবর : পাকিস্তানের লুচিস্তানে কালাত শহরের শ্মশান ঘাটে একজন হিন্দু মহিলার মৃতদেহের দেহাবশেষের অপবিত্রতায় বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন সংখ্যালঘুরা।
শত শত হিন্দু জনসাধারণ স্থানীয় প্রশাসনের বিরুদ্ধে কালাতের রাস্তায় মিছিল করে স্লোগান দেন। শহরের শাহী বাজার এলাকায় ব্যবসায়ীরা তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে বিক্ষোভে যোগ দেন।
পাকিস্তানি দৈনিক ডন সূত্রে জানাগেছে স্থানীয় শ্মশানে একজন হিন্দু মহিলার মৃতদেহ দাহ করার জন্য নিয়ে যাওয়া হলে অজ্ঞাত ব্যাক্তিরা জোর করে মৃতদেহ অর্ধ পুড়িয়ে এখানে-সেখানে ফেলে রাখে বলে আত্মীয়দের অভিযোগ।
পাকিস্তানে হিন্দু সংখ্যালঘুরদের উপর এ ধরনের ঘটনার শেষ নেই, সব সময়ই তাদের ধর্মীয় স্থানগুলিকে লক্ষ্যবস্তু করা হয় এবং অনুষ্ঠানগুলিকে বাধা দেওয়া হয়।
হিন্দু সম্প্রদায়ের এক ব্যাক্তি জানিয়েছেন, যে এর আগে শ্মশানের গেট চুরি হয়েছিল এবং তারা কর্তৃপক্ষের কাছে এ সম্পর্কে অভিযোগ করেছিলেন কিন্তু কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
তবে হিন্দু সম্প্রদায়ের আজকের এই বিক্ষোভ প্রদর্শনে অনেক ধর্মীয় ও রাজনৈতিক সংগঠনযোগ দিয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের দাবিকে সমর্থন করে।
প্রশ্ন উঠছে পাকিস্তানের মানবাধিকার নিয়েও। বেশ কয়েকটি মিডিয়া রিপোর্ট অনুসারে বৈশ্বিক সংস্থাগুলি দেশের সংখ্যালঘু, শিশু এবং মিডিয়া কর্মীদের জন্য ভয়াবহ পরিস্থিতি প্রতিফলিত করে।
২০২১ সালে ইউএস কমিশন অন ইন্টারন্যাশনাল রিলিজিয়াস ফ্রিডম (USCIRF)-এর বার্ষিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অপহরণ, জোরপূর্বক ইসলামে ধর্মান্তরিতকরণ, ধর্ষণ, জোরপূর্বক বিবাহ ধর্মীয় সংখ্যালঘু নারী ও শিশুদের জন্য, বিশেষ করে হিন্দু ও খ্রিস্টানদের জন্য একটি হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
পাকিস্তানে হিন্দু ও খ্রিস্টানদের পরিস্থিতি সাধারণভাবে খারাপ, এই সম্প্রদায়ের মহিলারা রাজনৈতিক দল, ধর্মীয় দল, সামন্ততান্ত্রিক কাঠামো এবং মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠদের বৈষম্যমূলক মনোভাবের সবচেয়ে বেশি শিকার।
সংখ্যালঘুদের তাদের অধিকার নিশ্চিত করার একমাত্র অবলম্বন আদালত, কিন্তু ইউনিসেফের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে ভিকটিমদের সুরক্ষা ও ন্যায়বিচার দিতে পদ্ধতিগতভাবে ব্যর্থ হয়েছে পাকিস্তান। পাকিস্তান সাম্প্রতিক দিনে সংখ্যালঘুদের কাছ থেকে ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে পড়েছে। কিন্তু মানবাধিকার লঙ্ঘন রোধে স্থানীয় প্রশাসন বা পাকিস্তান সরকারের কাছ থেকে কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।