জুলি দাস
করিমগঞ্জ, ৬ নভেম্বর : আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য ড. তপোধীর ভট্টাচার্য সহ বিশিষ্টদের হাত ধরে করিমগঞ্জে উন্মোচিত হয়েছে ‘সেবা’ পত্রিকা।
স্থানীয় বিএড কলেজ প্রেক্ষাগৃহে এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তা উন্মোচিত হয়। উপস্থিত বিশিষ্টরা বৃদ্ধাবাস বেলাভূমি সহ সেবা পত্রিকা পরিচালনার জন্য অপর্ণা দেবের কর্মতৎপরতার প্রশংসা করেন।
মুখ্য অতিথি তপোধীর ভট্টাচার্য বলেছেন, বর্তমানে সমগ্র সম্পর্ক নানান কারণে শিথিল হচ্ছে, ভেঙে পড়ছে। বারবার আঘাতে চুরমার হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে পরস্পরের কাছে পৌঁছানোর এক বিরাট সুযোগ করে দিয়েছে ‘সেবা’।
এতে পরস্পরের কাছে পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে। পত্রিকাটিও পরস্পরের হয়ে উঠেছে। উদাহরণস্বরপ তিনি বলেছেন, একাকি কেউই স্বয়ংসম্পূর্ণ নয়। সূর্য উদয় হলে অস্ত স্বাভাবিক। মানুষের ক্ষেত্রেও তা প্রযোজ্য। তবে অস্তে যাতে উদারতা থাকে।
বেলাভূমির মুখ্য পরিচালক অপর্ণা দেবের প্রশংসা করে বেলাভূমির নিরূপণ যাত্রায় পাশে থাকার আশ্বাস এবং এর কল্যাণ কামনা করেছেন তিনি।
এদিনের অনুষ্ঠানকে ব্যতিক্রম এবং অন্য ধারার অনুষ্ঠান হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন তপোধীরবাবু।
নির্দিষ্ট বক্তা তথা লেখক, নাট্যকার মৃন্ময় রায় বলেছেন, ছোট পত্রিকা অর্থাৎ লিটল ম্যাগাজিনে সাধারণত পরীক্ষা-নিরীক্ষার ব্যাপার থাকে। কিন্তু সেবা পত্রিকায় তা ছিল না। এখানে শান্ত, স্নিগ্ধতা রয়েছে।
মোট কথা বয়সতন্ত্রকে ঘিরে রয়েছে এই পত্রিকা। ২০০৯ সালে সেবা পত্রিকা প্রথম বের হয়। বর্তমানে তা নিজের পায়ে দাঁড়িয়েছে। তবে শুধু যে নিয়মিত বের হচ্ছে তা নয়, অনেক জায়গায় গিয়ে পৌঁছাচ্ছে।
তবে শুরুতে যারা জড়িত ছিলেন আজ অনেকেই প্রয়াত। নিজের বক্তব্যে তাদের স্মরণ করেন তিনি। সংগঠক হিসেবে অপর্না দেবের প্রশংসা করেন মৃন্ময় রায়।
সম্পাদকীয় প্রতিবেদন পাঠ করেন অপর্না দেব।
উল্লেখ্য, সেবা পত্রিকার সর্বশেষ সংখ্যা (যুগ্মভাবে ২৭ এবং ২৮ তম সংখ্যা) অক্টোবরে বাংলাদেশের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্মোচিত হয়েছে। করিমগঞ্জে সেটারই আবার উন্মোচন হয়েছে রবিবার।
তিনি বিস্তারিত তুলে ধরেন নিজের বক্তব্যে। বলেন, ইতিমধ্যে ১৪ বছর পূর্ণ করে পনেরোয় পা দিয়েছে সেবা পত্রিকা।
সবার সহযোগিতা ছাড়া তা অসম্ভব ছিল। যারা সঙ্গে আছেন তাদের সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি। বলেছেন, প্রবীণ নাগরিকদের জন্য সচেতনতা আনার ক্ষেত্রে সেবা পত্রিকা বড় ভূমিকা পালন করে আসছে। লিটল ম্যাগাজিনের সব নিয়ম মেনে তা প্রকাশিত হচ্ছে।
সমবেত কন্ঠে উদ্বোধনী সংগীত ‘আনন্দলোকে মঙ্গলালোকে…’ পরিবেশনের মাধ্যমে এদিনের অনুষ্ঠানের সূচনা হয়।
একই সঙ্গে এই সংগীতের ইংরেজি ভার্সন পরিবেশন করেন প্রবালকান্তি সেন। তখন প্রেক্ষাগৃহে উপস্থিত সকলের হাতেই ছিল জ্বলন্ত মোমবাতি।
প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করেন তপোধীর ভট্টাচার্য, নিশীথরঞ্জন দাস, রমেন্দ্র ভট্টাচার্য, বেলাভূমির দুই আবাসিক গৌরী দত্তকানুনগো, সুবল চক্রবর্তী।
এরপর উপস্থিত অতিথিদের বরণ করা হয়। সংগীত পরিবেশন করে শিশুশিল্পী প্রিয়াঙ্কা দাস চৌধুরী। বেলাভূমির কল্যাণে এদিন বিজ্ঞান তরঙ্গের পক্ষে সদস্য অনুপম চক্রবর্তী দশ হাজার টাকা এবং প্রয়াত স্ত্রী ক্ষমা পুরকায়স্থের স্মরণে পৃথকভাবে আরো দশ হাজার টাকা তুলে দেন বিশিষ্ট লেখক রণবীর পুরকায়স্থ।