গণ আওয়াজ, শিলচর, ১ সেপ্টেম্বর, বৃহস্পতিবার : উত্তর করিমগঞ্জের বিধায়ক কমলাখ্যা দে পুরকায়স্থের পর এবার বরাক ডেমক্রেটিক ফ্রন্টও দাবি জানালো পুজাকমিটি গুলোকে আর্থিক সাহায্যের।
উত্তর করিমগঞ্জের বিধায়ক নিজের প্যাডে মুখ্যমন্ত্রীকে লিখিত ভাবেই এই দাবি জানান।
তিনি চিঠিতে আসামের মুখ্যমন্ত্রীকে লিখেন এ বছর বিহু সম্প্রদায়গুলিকে দেওয়া আর্থিক সহায়তার মত রাজ্যের দুর্গা পূজা কমিটিগুলিকেও আর্থিক সহায়তার সহায়তা করা হউক।
হিমন্ত বিশ্বশর্মা সরকার রাজ্যের ৩০টি জেলার ১২৬৫ টি বিহু উদযাপন কমিটিগুলিকে এককালীন ১ লক্ষ ৫০ হাজার ‘টাকা করে আর্থিক সহায়তা করেছিলেন। যার জন্য ব্যয় হয়েছিল ১৮ কোটি ৯৭ লক্ষ টাকা।
পুরকায়স্থর দেওয়া চিঠি মুখ্যমন্ত্রির কাছে অস্বস্থির কারণ হয়ে দাড়াতে পারে। কেন না হিন্দুরা মনে করেন বিজেপি হিন্দুদের দল, বিজেপিও সবসময় হিন্দুদেরকে কৃষ্টি-সংসকৃতির প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোট আদায় করছে।
কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী ডঃ হিমন্ত বিশ্বশর্মা মূলত এই দলেরই লোক নয়। হাজার হাজার কোটি টাকা কেলেংকারির অভিযোগ রয়েছে তাঁর উপর। বিজেপি নেতা দার্জিলিঙের সাংসদ এস এস আলুয়ালিয়ার জেলে পাঠানোর পরই তিনি বিজেপিতে আশ্রয় নেন।
তাই বিজেপি সম্পর্কে তাঁর নুন্যত জ্ঞান টুকুও নেই।
কিন্তু কংগ্রেস বিধায়ক কমলাক্ষ ডে পুরকায়স্থ এবং বিডিএফ যে মুক্ষম চাল দিয়ে বেকায়দায় পেলে দিয়েছে মুক্ষমন্ত্রি এবং হিন্দুদের আস্থাভাজন বিজেপি দলকে।
বিডিএফ পুজাকমিটি গুলোর জন্য আর্থিক সহায়তা চেয়েছে সাম্প্রতিক বন্যায় আর্থিক ক্ষতির কারনে। বিডিপি-র মুখ্য আহ্বায়ক প্রদীপ দত্তরায় গত বিহু উৎসবে বিভিন্ন কমিটিকে আর্থিক অনুদান দেওয়া জন্য মুখ্যমন্ত্রীর প্রশংসাও করেন।
সেভাবে রাজ্যের বাঙালিদের আসন্ন জাতীয় উৎসব দুর্গাপূজোয় কমিটিগুলোকে আর্থিক অনুদান দেবার আর্জি জানান।
তিনি বিধায়ক কমলাক্ষ্য দে পুরকায়স্থের মুখ্যমন্ত্রীকে লিখিতভাবে আর্জি জানানোর উদ্যোগকে স্বাগত ও পূর্ণ সমর্থন করেন।
প্রদীপ বাবুর দাবি, বিহু যেমন জাতীয় উৎসবের স্বীকৃতি পেয়েছে তেমনি দুর্গাপুজোও বহু আগে থেকেই ধর্মীয় গন্ডি ছাড়িয়ে জাতীয় উৎসবে রূপান্তরিত হয়েছে।
তাই শুধু বাঙালি নয় জাতি ধর্ম নির্বিশেষে সবাই এই উৎসবের অংশীদার হন, বাঙালিদের পাশাপাশি এক বৃহৎ সংখ্যক অসমিয়াভাষি এবং নেপালি মানুষও দুর্গাপুজো করেন।
গৌহাটিতে মুলত অসমিয়াভাষিদের জন্যই এই উৎসবে দৃষ্টিনন্দন প্যান্ডেল, প্রতিমা ও আলোকসজ্জার আয়োজন হয় এবং উৎসবের আনন্দে সবাই সামিল হন।
দত্তরায় বলেন, বিগত বন্যা রাজ্যের অর্থনীতিকে বিপর্যস্ত করেছে, বিশেষ করে শিলচর সহ বরাকের জনগনের এই বিপর্যয়কে পুষিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে সময় লাগবে।
মুখ্যমন্ত্রী হিন্দু সংস্কৃতি ও কৃষ্টি রক্ষার্থে যত্নবান ও সদাতৎপর তাই এই পরিস্থিতিতে রাজ্যের পুজো কমিটি গুলোকে আর্থিক অনুদানের জন্য আমরা তার প্রতি বিশেষ আর্জি জানাচ্ছি।
বিডিএফ মুখ্য আহ্বায়ক এ ব্যাপারে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ, বজরং দল, আর এস এস সহ রাজ্যের বিভিন্ন হিন্দু সংগঠনের কর্মকর্তাদেরকেও মুখ্যমন্ত্রীর কাছে রাজ্যের দ্বিতীয় বৃহত্তম গোষ্ঠীর এই উৎসবে আর্থিক সহায়তার জন্য তদ্বির করার আবেদন জানিয়েছেন।
এছাড়া তিনি পুজো কমিটি গুলির কর্মকর্তাদেরকেও আর্থিক সহায়তার জন্য মুখ্যমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ পত্র পাঠানোর আহ্বান জানিয়েছেন।
কিন্তু বরাক বিজেপির হিন্দু সাংসদ এবং বিধায়কদের মুখে এখনও কুলুপ।
তবে করিমগঞ্জের কংগ্রেস বিধায়ক কমলাক্ষ দে পুরকায়স্থ এবং বিডিএফ-এর মুক্ষম চাল নিঃসন্দেহে বেশ বেকায়দায় পেলে দিয়েছে মুক্ষমন্ত্রী এবং তাঁর দল বিজেপিকে। এবার প্রমান হবে মুক্ষমন্ত্রী ডঃ হিমন্ত বিশ্বশর্মা ও বিজেপি বাঙালি হিন্দু এবং সনাতন প্রেমি কি না।