জুলি দাস
করিমগঞ্জ, ৫ জানুয়ারি : আধিকারিকদের সংখ্যা অনেক কম থাকায় রীতিমতো ধুঁকছে করিমগঞ্জ জেলা কৃষি কার্যালয়। এর ফলে সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা সঠিক সময়ে পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন কৃষকরা। বারবার বিষয়টি জেলাশাসকসহ বিভাগীয় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করানো হলেও এ নিয়ে কোনও পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে না।
সম্প্রতি কৃষিমন্ত্রী অতুল বরা করিমগঞ্জ সফরে আসলে তাঁকেও বিষয়টি লিখিতভাবে জানানো হয়। কিন্তু মন্ত্রী এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো রকমের পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি।
আধিকারিকদের সংখ্যা অনেক কম থাকার ফলে কৃষকদের জন্য আসা সরকারি বিভিন্ন প্রকল্প ধীর গতিতে চলছে করিমগঞ্জে।
করিমগঞ্জ জেলায় মোট ১৪ টি কৃষি সার্কল রয়েছে। প্রতিটি সার্কলে একজন করে এডিও (এগ্রিকালচার ডেভেলপমেন্ট অফিসার) থাকার কথা।
এডিওরা জিপিভিত্তিক বিভিন্ন এলাকায় কৃষকদের বিভিন্ন বিষয়ে গাইড করবেন। কৃষকদের কারিগরি ব্যাপারে সহযোগিতা করবেন তাঁরা। এছাড়া বিভিন্ন এলাকায় কৃষকদের যে গ্রুপ রয়েছে তাদের সঙ্গে বৈঠক করে বিভিন্ন পরামর্শ দেওয়ার কথা এডিওদের।
কিন্তু ১৪ জন এডিও-র মধ্যে বর্তমানে জেলায় আছেন মাত্র একজন। বাকিরা বিভিন্ন সময়ে করিমগঞ্জ থেকে বদলি হয়ে অন্য জেলায় চলে গেছেন। গত পাঁচ বছর থেকে এই অবস্থা চলছে। ফলে কোনো কাজই সুষ্ঠুভাবে হচ্ছে না।
শুধু যে এডিওর সংখ্যা কম তা নয়। করিমগঞ্জ কৃষি কার্যালয়ে অন্যান্য বিভিন্ন পদেও অনেক কম আধিকারিক এবং কর্মী রয়েছেন।
আগে বিভাগে গ্রামসেবক পদে যারা কর্মরত ছিলেন, সরকার তাঁদের বর্তমানে এগ্রিকালচার এক্সটেনশন অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। কাজের ধরন এক থাকলেও পদের নাম পরিবর্তন করা হয়েছে।
জেলা কৃষি বিভাগের দুই সাব ডিভিশনে (করিমগঞ্জ এবং রামকৃষ্ণনগর) ১০৫ জন এগ্রিকালচার এক্সটেনশন অ্যাসিস্ট্যান্ট (এইএ) থাকার কথা।
সেই জায়গায় বর্তমানে রয়েছেন মাত্র আট জন। তাদের মধ্যেই বাকি এলাকার দায়িত্ব ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। মাত্রাতিরিক্ত দায়িত্ব থাকায় তাঁদের পক্ষে সুষ্ঠভাবে দায়িত্ব সম্পাদন করা সম্ভব হচ্ছে না।
এতে সবথেকে বেশি সমস্যায় পড়েছেন কৃষকরা। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে যেসব গাইড সময় মত পাওয়ার কথা কৃষকদের, তা পাওয়া থেকে বঞ্চিত থাকতে হচ্ছে তাদের। সরকারের পক্ষ থেকে যেসব সুযোগ-সুবিধা আসে কৃষকদের জন্য, তা অনেক দেরিতে মিলে তাদের।
এ নিয়ে নীরব ভূমিকায় রয়েছেন বিভিন্ন জনপ্রতিনিধি সহ ক্ষমতাসীন শাসক দলের নেতারা।
জেলা কৃষি আধিকারিক পঙ্কজকুমার মজুমদার বৃহস্পতিবার গতি দৈনিককে বলেছেন, গত পাঁচ বছর থেকে এই অবস্থায় চলছে করিমগঞ্জ জেলা কৃষি বিভাগ। এডিও এবং এইএ অনেক কম রয়েছেন।
ফলে একজনকে অন্যান্য এলাকার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। পদ শূন্য থাকার কথা জেলাশাসক এবং বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে কয়েকবার জানানো হয়েছে। এই পদগুলিতে নতুন করে কাউকে এখন পর্যন্ত দেওয়া হয়নি।