মীরাট, ৮ ফেব্রুয়ারি : স্পেশাল ২৬’ ছবির সেই দৃশ্য, যেখানে পিকে শর্মা (অনুপম খের) ধরা পড়ার পর সিবিআইকে বলে যে তার গ্যাং লিডার অজয় ওরফে ‘আজ্জু’ ওরফে অক্ষয় কুমার সিবিআই অফিসার হতে না পারার জন্য খারাপ বোধ করেছিল।
সে কারণেই পরে ভুয়া সিবিআই অফিসার হয়ে ধনীদেরকে টার্গেট করে জাল অভিযান চালাতে শুরু করে।
এই গল্পটিও একই রকম, উত্তরপ্রদেশের মিরাটের বাসিন্দা জয়া আইপিএস অফিসার হতে চেয়েছিল, যদিও এই স্বপ্ন পূরণ করা যায়নি। পরীক্ষায় ফেল করেছে।
কিন্তু জয়াকে যেকোনো মূল্যে এই স্বপ্নকে বাঁচতে হবে, তাই স্পেশাল ২৬ থেকে ‘আজ্জু’-এর পথ ধরলেন তিনি। ভুয়ো আইপিএস অফিসার হয়েছেন।
পুলিশের ইউনিফর্ম সেলাই, ব্যাজ লাগানো, পুলিশ বেল্ট জুগাড় করা, এমনকি গাড়িতে নীল বীকন লাগিয়ে ফোন ঘোরানো।
থানায় ফোন করে তিনি বললেন যে আমি আইপিএস, আমাকে নিতে একটি পাইলট গাড়ি পাঠান।
তবে এটি কোনো সিনেমা নয়, এটাই বাস্তব জীবন। এখানে বাক্যগুলো কোনো লিপির কৌশলে উপস্থাপন করা হয়নি, তাই ধরা পড়েন ওই মহিলা।
বিষয়টি ২ ফেব্রুয়ারির। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গুরুগ্রাম পুলিশের একজন এসএইচও নিরাপত্তা শাখা থেকে একটি ফোন পেয়েছিলেন। বলা হয়েছিল যে একজন আইপিএস অফিসার মানেসারের রিসর্টে পৌঁছানোর জন্য একটি পাইলট গাড়ি চেয়েছেন।
এসএইচওকে একটি নম্বর দেওয়া হয়েছিল এবং তাকে ফোন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, এসএইচও ফোন করলে মহিলাকে এমজি রোডে সাহারা মলের কাছে আসতে বলেন।
এরপর থানার একটি দল ওই মহিলার উল্লেখিত জায়গায় পৌঁছায়। সে দেখল, একটা এসইউভি রাস্তার ধারে পার্ক করা নীল বীকন লাগানো। এরপর ওই মহিলা গাড়ি থেকে নামেন, তার পরনে ছিল সেনাবাহিনীর জ্যাকেট, পুলিশের ইউনিফর্ম ও ক্যাপ।
ইউনিফর্মের নাম ফলকে লেখা ছিল- কে আর সিং। মহিলা নিজেকে একজন আইপিএস অফিসার বলেছে এবং বলেছিলেন যে তাকে মানেসারের একটি রিসর্টে যেতে হবে যার জন্য একটি পাইলট গাড়ির প্রয়োজন।
এভাবেই তোলপাড়! পুলিশ কাগজপত্র চাইলে মহিলা তার ব্যাজ ও ক্যাপ খুলে ফেলেন এবং নিজের নাম বলতেও নারাজ।
ডকুমেন্টগুলো তার ল্যাপটপে আছে বলতে লাগলো। সন্দেহ হলে, পুলিশ মহিলার ব্যাগটি পরীক্ষা করে, এতে তিনটি খালি কার্তুজ, তিনটি মোবাইল, দুটি ডায়েরি, একটি ল্যাপটপ এবং এসডিএমের একটি জাল আইডি কার্ড পাওয়া যায়।
ঘটনার সত্যতা জানার পর ধরা পড়েন ওই মহিলা। জানা গেছে, তার নাম কে আর সিং নয়, জোয়া খান।
প্রতিবেদনে বলা হয়, এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক বীরেন্দ্র ভিজ বলেন, ওই নারীর বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই ৩টি মামলা রয়েছে এবং তিনি কারাগারেও গেছেন।
বর্তমানে তিনি জামিনে রয়েছেন। এর আগে তিনি নিজেকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
পুলিশ জানিয়েছে, জোয়া খান মিরাটের বাসিন্দা। ভয়েস চেঞ্জিং সফটওয়্যারের মাধ্যমে ভয়েস পরিবর্তন করে পুলিশকে ফোন করতেন। জিজ্ঞাসাবাদে ওই নারী পুলিশকে বিভ্রান্ত করতে তিনটি ভিন্ন নাম দেন। তিনি ২০০৭ সালে পিসিএস পরীক্ষা দিয়েছেন কিন্তু ব্যর্থ হয়েছেন।