কৈলাশহর, ১৩ সেপ্টেম্বর, মঙ্গলবার : রাজনীতিতে আদর্শের প্রয়োজন হয় না, প্রয়োজন আছে ক্ষমতার। হ্যা এটাই বাস্তব। দেশে শতাধিক আঞ্চলিক এবং সর্বভারতীয় রাজনৈতিক দল রয়েছে। প্রতিটি গঠিত হয়েছে পৃথক পৃথক মতাদর্শের উপর ভিত্তি করে।
সবকয়টি দলেরই পৃথক পৃথক সংবিধানও রয়েছে। কিন্তু তাদের উদ্দেশ্য একটাই ক্ষমতা। সব দলই সময়ে সময়ে ক্ষমতার লোভে এক হয়ে যায়।
এমনটাই লক্ষ্য করা গেলো ত্রিপুরায়। এতদিন যারা কম্যুনিস্টদেরকে চিনের দালাল এবং কম্যুনিস্টরা যে বিজেপিকে সাম্প্রদায়িক বলে আসছে আজ ক্ষমতার জন্যই তাদের বাঘে-শেয়ালে এক ঘাটে জল খাওয়ার অবস্থা হয়েছে।
ত্রিপুরার উনাকোটি জেলার কৈলাশহরের শ্রীনাথপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের উপসভাপতি বর্তমান পঞ্চায়েত বোর্ডের বিরুদ্ধে অনাস্থা নোটিশ পাঠানোর পর সিপিআই (এম) এবং বিজেপির নির্বাচিত সদস্যরা পঞ্চায়েত বোর্ড গঠনের জন্য একই ছাদের নীচে আসেন।
অধিকাংশ সদস্য পঞ্চায়েত প্রধান পদে বিজেপি মনোনীত সদস্য ইনুচ আলীর পক্ষে ভোট দেন। এদিকে ক্রস ভোটিংয়ের কারণে উপপ্রধান পদের নির্বাচন প্রক্রিয়া স্থগিত করা হয়েছে।
সূত্র জানিয়েছে, বিজেপি এবং সিপিআই (এম)-এর প্রত্যেকে পাঁচজন সদস্য বিভিন্ন প্রার্থীকে ভোট দিয়েছেন যার ফলে স্থগিত করা হয়েছে। কর্মকর্তারা ঘোষণা করেছেন যে উপপ্রধানের পুনর্নির্বাচনের দিন শীঘ্রই ঘোষণা করা হবে।
শ্রীনাথপুর গ্রাম পঞ্চায়েত সব সময়ই সব ভুল কারণে শিরোনামে থাকে। বড় মাপের তহবিল আত্মসাতের অভিযোগের কারনে পঞ্চায়েত বোর্ড বার বার ভেঙে দেওয়া হয়েছে।
লক্ষ্য করা গিয়েছ, পঞ্চায়েত সদস্যদের মধ্যে মতাদর্শগত পার্থক্যের কোন প্রভাব কখনও পড়েনি, ক্ষমতার লোভই তাদেরকে এক ছাদের নীচে নিয়ে এসেছে।
১৩ সদস্যের পঞ্চায়েত বোর্ডে বিজেপির ছয়জন নির্বাচিত সদস্য রয়েছে এবং সিপিআই (এম)-এর পাঁচ জন। দুই জন সদস্য কংগ্রেসের।
নির্বাচনের পরে, কংগ্রেস এবং সিপিআই (এম) সদস্যরা পঞ্চায়েত বোর্ড গঠন করেছিল, কিন্তু তিন মাসের মধ্যে অনাস্থা প্রস্তাব আসায় পঞ্চায়েত বোর্ড ভেঙে দেওয়া হয়েছিল।
সরকারি আদেশ অনুযায়ী আজ নতুন প্রধান ও উপপ্রধান নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে, সিপিআই (এম) এবং বিজেপির নির্বাচিত সদস্যরা এক হয়ে বিজেপির ইনুচ আলীর পক্ষে ভোট দিয়েছেন।
তবে উপপ্রধানের ক্ষেত্রে ভোট দুই ভাগে ভাগ হয়েছে। এদিকে কংগ্রেস সদস্যরা নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় অনুপস্থিত থাকেন।
জেলা কংগ্রেসের সভাপতি মোঃ বদরুজ্জামান বলেন, বিজেপি একটি ক্ষমতার ক্ষুধার্ত দল এবং ক্ষমতার জন্য সব কিছু করতে পারে। সিপিআই (এম)-এর সাথে যাওয়ার জন্য আমাদের প্রতিবন্ধকতা আছে। এ কারণে আমাদের সদস্যরা ভোটে অংশ নেননি।