মোস্তাফা এ মজুমদার, হাইলাকান্দি : মোদী এবং আজমল দুজনই বেপারী মানুষ, উভয়েই ধর্মীয় মেরুকরণ করে সাম্প্রদায়িক রাজনীতি করছেন।
বিজেপি হিন্দুদেরকে মুসলমানের ভয় দেখিয়ে এবং এআইইউডিফ মুসলমানদেরকে হিন্দুর ভয় দেখিয়ে নোংরা রাজনীতি করছে।
বিজেপি এবং এআইইউডিফ একই মুদ্রার এপিঠ ওপিঠ। আজমলকে যতদিন মুসলমানরা ভোট দিবেন ততদিন অসমে বিজেপিও ক্ষমতায় থাকবে।
বুধবার হাইলাকান্দিতে রাইজর দলের কর্মিসভা ও যোগদান সমারোহে মূখ্য অতিথি হিসাবে উপস্থিত হয়ে বিজেপি এবং এআইইউডিফকে আক্রমণ করে এভাবেই বক্তব্য রাখেন রাইজর দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি তথা শিবসাগরের বিধায়ক অখিল গগৈ।
তিনি বলেন বিধানসভায় সবসময়ই এআইইউডিফের বিধায়করা মূখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যকে সমর্থন করেন, তখন সন্দেহ জাগে যে ওরা বিজেপি না কি এআইইউডিফের বিধায়ক।
একুশে বিজেপি দ্বিতীয়বার রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পর উপহার হিসেবে রাজ্যে আগর কাঠ আমদানি রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেছে।
তখনই বদর উদ্দিন আজমলের ভাই সিরাজ উদ্দিন আজমল হিমন্ত বিশ্বশর্মাকে শ্রেষ্ঠ মূখ্যমন্ত্রীর উপাধী দিয়েছিলেন।
এক কথায় মুসলমানরা আজমল চাচাকে যতদিন ভোট দিতে থাকবেন বিজেপিও যতদিন ক্ষমতায় থাকবে।
বিধায়ক অখিল গগৈ আরও বলেন, শাসক দল বিজেপি তিন চারটি টেকনিক ব্যবহার করে রাজনীতি করে যাচ্ছে। মানুষকে ধর্মের সুড়সুড়ি দিয়ে সেণ্টিমেণ্টেল করে ভোট আদায় করে থাকে।
দ্রব্যমূল্য আকাশ ছোঁয়া তথাপিও মানুষকে বিভিন্ন কৌশলে অন্ধ বানিয়ে মুনাফা হাসিল করছে এই সরকার।
যতদিন পর্যন্ত আজমল চাচাকে বিদায় না দিবেন ততদিন পর্যন্ত নরেন্দ্র মোদি এবং মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মার জয় নিশ্চিত থাকবে।
কারণ আজমল চাচার দাড়ি এবং টুপি দিয়ে বিজেপি রাজনীতি করছে। তাই প্রথমে মুসলমানরা আজমল চাচাকে বিদায় দিতে হবে বলে জানান বিধায়ক অখিল।
তিনি আরও বলেন, আমি হিন্দু কিংবা মুসলিম কাউকে ভালোবাসি না আমি ভালোবাসি শুধু মানুষকে।
বিধানসভায় এক দিনও এআইইউডিএফ দলের বিধায়করা বিরুধী দলের ভূমিকা পালন করতে দেখা যায়নি।
তারা সবসময়ই মুখ্যমন্ত্রীর প্রসংশা করে থাকেন। হিমন্ত বিশ্ব শর্মা যতদিন মুখ্যমন্ত্রী আছেন ততদিন আগর কাঠের গাড়ি কোন পুলিশ আটকাবে না।
বিজেপি এবং এআইইউডিফের যে গোপন বন্ধুত্ব রয়েছে কিছুদিন পূর্বে আলগাপুরের বিধায়ক নিজাম উদ্দিন চৌধুরী একথা পরিষ্কারভাবে বলে জনসমক্ষে প্রমাণ করে দিয়েছেন।
অসমে জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে শান্তিতে বসবাস করতে হলে বিজেপি এবং এআইইউডিএফের মতো সাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক দলকে বিদায় দিতে হবে বলে দলীয় সভায় হুংকার দেন বিধায়ক অখিল গগৈ।
সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন রাইজর দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক অলক নাথ, রাসেল হোসেন ,করিমগঞ্জ জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওয়াহাব বড়ভূইয়া প্রমুখ।
এদিনের যোগদান সমা্রোহে বিধায়ক অখিল গগৈর হাত ধরে কয়েক শতাধিক কর্মী সমর্থকদেরকে নিয়ে রাইজর দলে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগদান করেন প্রাক্তন অগপ নেতা কমরুল ইসলাম বড়ভূইয়া (মানিক)। বিধায়ক অখিল গগৈ কমরুলকে সাদরে তার দলে বরণ করে নেন।
কমরুল ইসলাম বড়ভূইয়া তাঁর বক্তব্যে দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে বলেন, বর্তমান পেক্ষাপটে দেশের গণতন্ত্র এবং সংবিধান রক্ষার্থে একমাত্র প্রতিবাদী কণ্ঠ অখিল গগৈর বিকল্প নেই।
তিনি দীর্ঘদিন অগপ দলের ছত্রছায়ায় থেকে রাজনীতি করে আসলেও এখন তিনি অখিল গগৈর হাত ধরে রাইজর দলে যোগদান করে উন্নয়নের স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
তাছাড়াও এদিনের অনুষ্ঠানে জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিভিন্ন রাজনৈতিক এবং অরাজনৈতিক দল সংগঠন ত্যাগ করে অনেকেই অখিল গগৈর হাত ধরে রাইজর দলে যোগদান করেন।
এদিন বিকেল তিন ঘটিকায় বিধায়ক অখিল গগৈকে পুরাতন হাসপাতাল চৌরঙ্গী থেকে কয়েক শতাধিক কর্মী সমর্থকরা এক বিশাল মিছিল করে কাটলিছড়া বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত সভা স্থলে নিয়ে আসেন।
সভায় সভাপতিত্ব করেন রাইজর দলের হাইলাকান্দি জেলা সভাপতি জহির উদ্দিন লস্কর, অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন ছাত্র মুক্তি সংগ্রাম সমিতির কেন্দ্রীয় সহকারী সম্পাদক ফরিদ উদ্দিন লস্কর। এদিনের অনুষ্ঠান সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হওয়ায় সবাইকে ধন্যবাদ জানান রাইজর দলের জেলা সভাপতি জহির উদ্দিন লস্কর।