বালাসোর, ওড়িশা : ওড়িশার বালাসোরে তিনটি ট্রেন দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৮৮ এ পৌঁছেছে, আজ ভারতীয় রেলওয়ে এ তথ্য জানিয়েছে।
“ভারতীয় রেলওয়ে এক বিবৃতিতে বলেছে দুপুর ২টা পর্যন্ত ওড়িশা ট্রেন দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৮৮ হয়েছে, আহত হয়েছেন ৭৪৭ জন এবং গুরুতর আহত হয়েছেন ৫৬ জন।
গতকাল কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব এবং কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানকে সঙ্গে নিয়ে ওড়িশার বালাসোরে ট্রেন দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
উল্লেখ্য যে ওড়িশার বালাসোর জেলার বাহানাগা বাজার স্টেশনে তিনটি পৃথক ট্র্যাকে বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস, করোমন্ডেল এক্সপ্রেস এবং পণ্য ট্রেনের ত্রিমুখী দুর্ঘটনা ঘটে।
ওড়িশা সরকারের বিশেষ ত্রাণ কমিশনারের কার্যালয় অনুসারে দুটি ট্রেনের ১৭টি বগি লাইনচ্যুত এবং মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
সাইটে প্রধানমন্ত্রী মোদি ক্যাবিনেট সেক্রেটারি এবং স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সাথে কথা বলেছেন এবং আহতদের এবং তাদের পরিবারকে প্রয়োজনীয় সমস্ত সহায়তা নিশ্চিত করতে বলেছেন, সরকারী সূত্র জানিয়েছে।
দুর্ঘটনার স্টক নেওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী মোদী বালাসোরের ফকির মোহন হাসপাতাল পরিদর্শন করেছিলেন, যেখানে তিনটি ট্রেনের দুর্ঘটনায় আহত যাত্রীদের মধ্যে কয়েকজনকে ভর্তি করা হয়েছিল।
এই দুর্ঘটনায় বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিদের সাথে দেখা করে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন যে ট্রেন দুর্ঘটনার তদন্তের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে এবং যেই দোষী প্রমাণিত হবে তাকে রেহাই দেওয়া হবে না।
তিনি এই ঘটনাকে একটা বেদনাদায়ক ঘটনা হিসাবে বর্ণনা করে বলেছিলেন যে যারা দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন সরকার তাদের ফিরিয়ে আনতে পারবে না, তবে সরকার এই শোকে তাদের আত্মীয়দের পাশে আছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন এ ঘটনা সরকারের জন্য খুবই গুরুতর, তবে আহতদের চিকিৎসায় সরকার কোনো কসরত রাখবে না।
ইতিমধ্যেই বিভিন্ন ধরণের তদন্তের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যেই দোষী প্রমাণিত হবে তাকে রেহাই দেওয়া হবে না বলেছে প্রধানমন্ত্রী মোদী।
প্রধানমন্ত্রী ওডিশা সরকার এবং স্থানীয় প্রশাসনের আধিকারিকদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, তারা সীমিত সংস্থান দিয়ে লোকেদের সাহায্য করার চেষ্টা করেছেন।
দুর্ঘটনায় বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিদের সাহায্য করতে এগিয়ে আসায় ওডিশার জনগণকেও ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী রেল দুর্ঘটনার বিষয়ে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে একটি বৈঠক ডাকেন।
সাতটি ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্স- এনডিআরএফ দল, পাঁচটি ওডিশা ডিজাস্টার র্যাপিড অ্যাকশন ফোর্স ওডিআরএফ ইউনিট এবং ২৪টি ফায়ার সার্ভিস ও ইমার্জেন্সি ইউনিট উদ্ধার কাজে নিয়োজিত।
ভারতীয় বিমান বাহিনী (IAF) মৃত ও আহতদের সরিয়ে নেওয়ার জন্য Mi-17 হেলিকপ্টার মোতায়েন করেছে।
ইস্টার্ন কমান্ডের মতে IAF বেসামরিক প্রশাসন এবং ভারতীয় রেলওয়ের সাথে উদ্ধার প্রচেষ্টার সমন্বয় করছে।
কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব এর আগে সাইটটি পরিদর্শন করেন এবং একটি উচ্চ স্তরের তদন্তের নির্দেশ দেন।
তিনি বলেছেন যে ভবিষ্যতে এই ধরনের ঘটনা যাতে না ঘটে তা নিশ্চিত করার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অপরদিকে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েকও।