ব্যুরো রিপোর্ট : কাছাড় জেলায় খাদ্য সুরক্ষায় দুর্নীতির অভিযোগ দীর্ঘদিনের। শিলচর নাগরিক ও সরবরাহ বিভাগের সহযোগে ন্যায্যমূল্যের দোকানিরা এই দুর্নীতি চালিয়ে আসছে।
গরীব আসহায় মানুষের জন্য বরাদ্ধ সামগ্রী লুঠে খাচ্ছেন লম্বা মাসোয়ারার এসব সরকারী আমলা এবং ন্যায্যমূল্যের দোকানের মালিকরা।
ঊর্ধ্বতন করতিপক্ষের কাছে অভিযোগ করলেও কোন গুরত্ব দেওয়া হয়না।
কেউ বিষয়টি প্রকাশ্যে নিয়ে আসার চেষ্টা করলে বিভাগীয় আধিকারিক থেকে ন্যায্যমূল্যের দোকানীরা গালিগালাজ এমনকি আক্রমণ করারও চেষ্টা করছেন।
এযেন দস্তুরমতো দাদাগিরি চলছে।
এরকম চাঞ্চল্যকর অভিযোগ এনে সরব হয়েছে কাছাড় দুর্নীতি নিবারক সামাজিক সংগঠন।
সংগঠন মধুরা অমরানগর জিপির চারটি ন্যায্যমূল্যের দোকানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এনে শিলচর নাগরিক ও সরবরাহ বিভাগের আধিকারিকের দ্বারস্থ হয়েছিল।
কিন্তু তিনি অভিযোগের কোন গুরুত্বই দেননি। এরপর সংগঠন উপযুক্ত পদক্ষেপের জন্য কাছাড়ের জেলা আয়ুক্ত এবং পুলিশ সুপারের দ্বারস্থ হয়।
জেলা আয়ুক্ত অভিযোগ তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে দায়িত্ব দেন অতিরিক্ত আয়ুক্ত্বকে, তিনি নাগরিক ও সরবরাহ বিভাগের আধিকারিককে নিজের চেম্বারে ডেকে এনে কথা বলার পর ফের ধামাচাপা পড়ে যায়।
কিছুদিন অপেক্ষার পর সংস্থার প্রচার সম্পাদক বিষয়টি ওয়াটসআপে পুনরায় জেলা আয়ুক্তের দৃষ্টিতে আনেন। এতে মাথা গরম হয়ে যায় সরবরাহ বিভাগীয় আধিকারিকের।
তিনি ফোনে সংগঠনের প্রচার সম্পাদক পূর্ণেন্দু চন্দকে গালিগালাজ এবং হুমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ এনেছে কাছাড় দুর্নীতি নিবারক সামাজিক সংগঠন।
সংগঠনের প্রচার সম্পাদক এবং সম্পাদক গণ আওয়াজকে জানিয়েছেন, তাঁর মোবাইলে ফোন করে জেলা আয়ুক্তের কাছে কেন গিয়েছে এমন প্রশ্ন তুলে গালিগালাজ এবং দেখে নেওয়ার হুমকি দেন আধিকারিক।
কিন্তু পাল্টা গালিগালাজের পর বৃহস্পতিবার একজন ইন্সপেক্টর সহ চার জনের একটি দল মধুরা জিপির নগরের পিক্লু ভট্টাচার্যের ন্যায্য মূল্যের দোকানে তদন্তের জন্য আসেন।
স্থানীয় জনগণ তাদের অভিযোগ তুলে ধরেছেন, বলেন অনেকের কার্ড আত্মসাৎ করেছেন ন্যায্যমূল্যের দোকানদার পিক্লু ভট্টাচার্য।
এছাড়াও প্রতি কার্ড থেকে চাল কেটে রাখেন এই দোকানদার।
এদিন গণ আওয়াজকে এক মহিলা জানিয়েছেন, তাঁর ঘরে মানুষ তিনজন কিন্তু নেটে সার্চ করলে দেখা যায় পাঁচ জনের নামে চাল বরাদ্ধ হয়।
এরমধ্যে ভিনধর্মী একজনের নামও রয়েছে। এছাড়া চাল কেটেও রাখা হয়।
অন্য আরও একজন অভিযোগ করেছেন ন্যায্য মূল্যের দোকানদার ২০২০-এর লকডাউনের সময় তাঁর শাশুড়ির নামে থাকা কার্ড নাম ট্র্যান্সফারের জন্য নিয়ে আত্মসাৎ করেছেন।
এই লকডাউনে ন্যায্যমূল্যের চাল না পেয়ে জঙ্গলের আলু সেদ্ধ করে খেয়ে বেঁচেছেন।
এভাবে আরও অনেকে এই ন্যায্য মূল্যের দোকানের মালিকের বিরুদ্ধে সাপ্লাইর আধিকারিকদের সামনেই কার্ড আত্মসাতের অভিযোগ করেন।
এতে একসময় দোকানের মালিকের দুই ভাই সাপ্লাইর আধিকারিকদের সামনেই কাছাড় দুর্নীতি নিবারক সামাজিক সংগঠনে প্রচার সম্পাদক পুরনেন্দু চন্দর উপর চড়াও হন এবং দেখে নেওয়ার হুমকিও দেন।
এনিয়ে সংস্থা আইনের আশ্রয় নেবে বলে জানিয়েছেন সাধারণ সম্পাদক অনিল দাস।
এদিকে সেখানে উপস্থিত থাকা গণ আওয়াজ-এর সাংবাদিক সাপ্লাই আধিকারিকদের বিভিন্ন প্রশ্ন করলে শুধু বলেন রিপোর্ট অফিসে দেওয়া হবে, আর কিছু না বলে তরিগরি করে পালিয়ে যান।
একদিকে সরকার দাবী করেছে বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর দুর্নীতি কমছে, অন্যদিকে জনগণ বলছেন বর্তমান সরকারের সময়ে দুর্নীতি চরম আকার নিয়েছে। ঊর্ধ্বতন করতিপক্ষকে অভিযোগ করে হুমকির সম্মুখীন হতে হচ্ছে।