বিশেষ প্রতিবেদন : পরাধীন মাতৃভূমিকে শৃঙ্খল মুক্ত করে শ্রেণীহীন ও শোষণমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখেছিলেন নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু।
এরজন্য তাকে দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের সময় ধনী শ্রেণীর নেতৃত্বের বিরুদ্ধে আপসহীন সংগ্রাম করতে হয়েছিল।
ভারত মাতাকে ব্রিটিশদের হাত থেকে মুক্ত করা ছিল নেতাজির লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য।
তিনি অনুভব করেছিলেন, ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদ মানে ভারতের নৈতিক অবক্ষয়, সাংস্কৃতিক ধ্বংস অর্থনৈতিক দারিদ্র্য এবং রাজনৈতিক দাসত্ব।
দেশ মাতৃকার এই দুর্দশা দূর করতে নেতাজি ছিলেন বদ্ধপরিকর।
গণদেবতার পুজারি নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু ছিলেন একজন আপসহীন জননেতা, যিনি সারা জীবন অন্যায় ও অসমতার বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছেন।
মাতৃভূমির সেবায় আত্মনিয়োগকারী নেতাজীকে আইসিএস-এর মতো উচ্চ পর্যায়ের চাকরির প্রলোভনও আবদ্ধ করতে পারেনি।
তিনি আজাদ হিন্দ ফৌজ নামে সেনাবাহিনী গঠন করে ব্রিটিশ সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন।
নেতাজিও ছিলেন জাতি, ধর্ম ও ভাষার নামে বৈষম্যমূলক বিভাজনের সম্পূর্ণ বিরোধী এবং সত্যিকারের একজন মানবতাবাদী।
হিন্দু, মুসলিম, শিখ, বৌদ্ধ সব ধর্মের মানুষকে তিনি সমান সম্মানের চোখে দেখতেন, তাই আজাদ হিন্দ ফৌজের প্রতিটি সৈনিক নেতাজির প্রতি অনুপ্রাণিত ছিল।
নেতাজী আজাদ হিন্দ ফৌজের প্রতিটি সৈনিককে নিজ নিজ ধৰ্ম অনুযায়ী উপাসনা করার সম মৰ্যদা এবং সম অধিকার দিয়েছিলেন।
তিনি তার অনুসারীদের বুঝাতে পেরেছিলেন, ব্রিটিশরা তাদের নিজেদের স্বার্থে ভারতীয়দের মধ্যে ধর্মীয় বা সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ ছড়াচ্ছে।
হিন্দু ও মুসলমান উভয়ের মধ্যে নেতাজি ছিলেন একজন অতুলনীয় জনপ্রিয় জননেতা।
হাবিব নামের রেঙ্গুনের এক ব্যবসায়ীর গলায় মালা পরানোর বিনিময়ে তার সম্পত্তি আজাদ হিন্দ ফৌজকে দান করে দিয়ে ছিলেন।
যার মুল্য সেই সময় ছিল প্রায় এক কোটি টাকা।
নেতাজি মানুষকে মানুষ হিসেবে সম্মান করতেন, কারও ধর্ম বা ভাষার ভিত্তিতে নয়। এক কথায় নেতাজি ছিলেন সাম্প্রদায়িক বিরোধী।
কিন্তু ভারত স্বাধীনতা লাভের ৭৫ বছর পরও নেতাজির শ্রেণীহীন ও শোষণমুক্ত সমাজের স্বপ্ন পূরণ হয়নি। বরং ধনী-গরিব, ভাষা, ধর্ম, বর্ণ ও সাম্প্রদায়িকতা বেড়েছে এবং সরকারগুলো গরিবের বদলে পুঁজিপতিদের স্বার্থ রক্ষায় মনোযোগী হচ্ছে।