করিমগঞ্জে শ্রীসত্যসাঁই সেবা সমিতি সুবর্ণ জয়ন্তী অনুষ্ঠান
জুলি দাস
করিমগঞ্জ, ১ এপ্রিল : নিঃস্বার্থভাবে কাজ করলে, নিজেকে সমাজের স্বার্থে নিয়োজিত করলে জীবন ধন্য।
সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে আত্মবিশ্বাস, আত্মসন্তুষ্টি ইত্যাদি।
পিতা-মাতা, দরিদ্রদের সেবা এবং উপাসনা করলে জীবন সার্থক হয়।
রবিবার শ্রীসত্যসাঁই সেবা সমিতি করিমগঞ্জের সুবর্ণ জয়ন্তী অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে এ কথাগুলি বলেছেন করিমগঞ্জ রামকৃষ্ণ মিশনের সম্পাদক স্বামী প্রভাসানন্দজি মহারাজ।
নীলমণি রোডের রমণীমোহন ইনস্টিটিউট প্রেক্ষাগৃহে রবিবার আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট ব্যক্তি, প্রচুর সংখ্যক ভক্ত উপস্থিত ছিলেন।
প্রশান্তি পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের শুরু হয়। প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করেন উপস্থিত বিশিষ্টরা।
এছাড়া এক মেগা মেডিকেল শিবির অনুষ্ঠিত হয়। শিবিরে মোট ৮৬ জন রোগীর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন সাতজন চিকিৎসক।
অনুষ্ঠান উপলক্ষে রমণীমোহন ইনস্টিটিউট প্রাঙ্গণ সাজিয়ে তোলা হয়। উল্লেখ্য, আগামী সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন অনুষ্ঠান করবে শ্রীসত্যসাঁই সেবা সমিতি।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে রামকৃষ্ণ মিশনের মহারাজ স্বামী প্রভাসানন্দজি মহারাজ, তিনি বলেছেন জন্মের পর থেকেই ব্যতিক্রমী ছিলেন সত্যসাঁই।
তার বাবা-মা অত্যন্ত ধর্মপ্রাণ ছিলেন। অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা গেছে দিব্য পুরুষদের বাবা-মা দরিদ্র হলেও ধর্মপ্রাণ হন।
সত্যসাঁই ছোটবেলায় সবার আদরের ছিলেন, স্মৃতিশক্তি প্রখর ছিল এবং নৃত্য, গীতে পারদর্শী ছিলেন। ছিলেন সুবক্তা, সুগায়ক।
দরদি মন নিয়ে সবকিছুতে এগিয়ে যেতেন, অলৌকিক ক্ষমতা ছিল ফলে সবাই ছুটে আসতেন তাঁর কাছে।
ছোটবেলায় সত্য সাঁইর শরীরে কিছু অভাবনীয় বিষয় দেখে অভিভাবকরা চিকিৎসক ও কবিরাজকে দেখান। কিন্তু এটা কোনো শারীরিক অসুস্থতা ছিল না। এটা দ্বৈবি শক্তি ছিল।
প্রভাসানন্দজি মহারাজ আরো বলেছেন, শূন্য থেকে ফল এনে দিতেন সত্য সাঁই। তখন অভিভাবকরা তাঁকে এ নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলতেন, ‘আমি সাইবাবা।’
খুব খ্যাতি ছিল তাঁর, পরোপকারী এবং নিরহংকার ছিলেন তাঁর হৃদয় ছিল অন্যের জন্য। জাতি-ধর্ম-বর্ণের ঊর্ধ্বে ছিলেন।
দরিদ্র নারায়ণ সেবা মুখ্য কাজ ছিল, তাঁর হাতে গড়া হাসপাতালের মাধ্যমে আজ অনেকে সেবা পাচ্ছেন। ভারত এবং ভারতের বাইরে তাঁর গড়া অনেক হাসপাতাল, স্কুল রয়েছে।
এটা শুনলে গর্ব অনুভব হয়, তিনি বলেছিলেন পিতা-মাতা, দরিদ্রদের সেবা এবং উপাসনা করলে জীবন সার্থক হয়।
শ্রীসত্যসাঁই সেবা সমিতির উপ-সভাপতি শিবশংকর দত্ত বলেছেন, ১৯৭৪ সালের ২৩ আগস্ট করিমগঞ্জে প্রথম শ্রীসত্যসাঁই সেবা সমিতি গঠন করা হয়।
সেই কমিটির সভাপতি ছিলেন রনেন্দ্রমোহন দাস, সম্পাদক ছিলেন দ্বিজেন্দ্রলাল চৌধুরী। সেবার মনোভাব নিয়ে কাজ করে চলেছে সত্যসাঁই সেবা সমিতি।
উদ্বোধনী সভায় এছাড়া বক্তব্য রাখেন দক্ষিণ অসমের সমৃদ্ধ অখন্ড সংগঠনের উপ-সভাপতি নবেন্দু নাথ, বিশিষ্ট সমাজসেবী তথা কাছাড় ক্যান্সার হাসপাতালের প্রাক্তন প্রশাসনিক আধিকারিক কল্যাণকুমার চক্রবর্তী সহ অন্যান্যরা।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন সঞ্জয় পাল চৌধুরী। সত্যসাঁই সেবা সমিতির কর্মকর্তাদের মধ্যে অনুষ্ঠানে এছাড়া উপস্থিত ছিলেন রাজ্যিক সভাপতি ডা: গোকুলকুমার দাস, জোনাল উপ-সভাপতি রূপময় দাস, মানসজ্যোতি বরা, সত্যপ্রতিম বড়ো সহ অন্যান্যরা।
মঞ্চে উপস্থিত অতিথিদের বরণ করা হয় অনুষ্ঠান আয়োজকদের পক্ষ থেকে। ভজন, সংগীত ইত্যাদি পরিবেশিত হয়।