নিউজ ডেক্স গণআওয়াজ : সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে যুদ্ধংদেহী মনোভাব নিয়ে বুধবার মনোনয়ন জমা দিলেন শিলচর লোকসভা আসনের ইন্ডিয়া জোটের কংগ্রেস প্রার্থী সূর্যকান্ত সরকার।
কংগ্রেস কর্মীদের দলত্যাগের চোরা শ্রুত এবং বিজেপি প্রার্থী পরিমল শুক্লবৈদ্যের প্রচারের তুলনায় ইন্ডিয়া জোটের প্রার্থী সূর্যকান্ত সরকার ছিলেন অনেকটাই ব্যাকফুটে।
এছাড়া বিজেপিও এমন দাবী করতে শুরু করেছিল সূর্যকান্ত সরকারের চেয়ে পরিমল শুক্লবৈদ্য আড়াই-তিন লাখ ভোট বেশি পেয়ে জয়ী হবেন।
তাই স্বাভাবিক কারনেই একটি মহলে কংগ্রেস প্রার্থী সূর্যকান্ত সরকারকে নিয়ে সন্দেহ দেখা দিয়েছিল।
কিন্তু বুধবার কয়েক হাজার কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে মনোনয়ন জমা দিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছেন তিনি দলত্যাগি নেতা-কর্মীদের মত নয়।
বিনা যুদ্ধে এক ইঞ্চি জমিও বিজেপি প্রার্থী পরিমল শুক্লবৈদ্যকে ছেড়ে দেওয়ার পাত্র নন।
এদিন তিনি ঠিক ১টা ৩০ মিনিটে কংগ্রেস অফিস থেকে দলীয় কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে মনোনয়ন জমা দিতে জেলা রিটার্নিং অফিসারের অফিসের উদ্দেশ্যে শুভাযাত্রা করে রওয়ানা হন।
তবে বিজেপি প্রার্থী পরিমল শুক্লবৈদ্য এর আগে সকাল ১১টায় আসামের মুখ্যমন্ত্রী এবং শিলচরের সাংসদ রাজদীপ রায় সহ অন্যান্য নেতৃত্বকে সঙ্গে নিয়ে নিজের মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছেন।
এনিয়ে পরিমলকে নানান সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে।
অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, ধলাইর পাঁচ বারের বিধায়ক এবং রাজ্যের আট বছরের মন্ত্রী পরিমলের কি তাহলে জয়ী হওয়ার ব্যাপারে নিজের উপর বিশ্বাস নেই?
না আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মার শিলচর লোকসভার দলীয় প্রার্থী পরিমলের জয়ের উপর বিশ্বাস নেই? তাই সঙ্গ দিতে দিসপুর থেকে ছুটে আসতে হয়েছে।
কারন পরিমল ধলাই বিধানসভার পাঁচ বারের নির্বাচিত বিধায়ক এবং রাজ্যের আট বছরের ক্যাবিনেট মন্ত্রী।
কিন্তু তিনি তার সমষ্টি ছাড়া জেলার কোথাও কোন দিন মানুষের শোকে-দুঃখে পাশে দাঁড়াতে দেখা যায়নি।
এমনকি জেলার মানুষ এবং দলের কর্মীরা কিভাবে আছেন কারও খোঁজ খবর নেওয়ার প্রয়োজনটুকুও মনে করেননি।
এছাড়া বরাক উপত্যকার প্রতি তার সরকারের বঞ্চনা, বৈমাতৃক আচরন, দুর্নীতি এমনকি বরাককে করিডোর করে চলে আসা লাগামহীন সিণ্ডিকেট নিয়েও তাকে মুখ খুলে প্রতিবাদটুকুও করতে দেখা যায়নি।
তিনি যখন বনমন্ত্রী ছিলেন সেই সময় কাছাড় জেলার বন বিভাগে সবচেয়ে বেশি লুণ্ঠন হয়েছে এবং আজও এই ধারা অব্যাহত রয়েছে।
বর্তমানে অকল্যান্ড গাড়ী ব্যবহার করে গভীর থেকে পাথর তুলে পাচার করছে মাফিয়ারা।
হয়তো আরও এক বছর পর কাউকে ঘর বানাতে মেঘালয় অথবা পার্শ্ববর্তী মিজোরাম থেকে পাথর আনতে হতে পারে।
আর না হলে ব্ল্যাকে দশ-বারোগুন চড়া মুল্যে ক্রয় করতে হতে পারে।
না হলে ত্রিপুরার মত ইট ভেঙ্গে ঘর বানাতে হতে পারে।
তার চেয়েও অবাক জনক ঘটনা হল নিজের গাড়ী চালক নিখোঁজ হওয়ার পনেরো বছরের বেশি সময় হলেও ক্ষমতায় থাকার পরও আজ পর্যন্ত তার সন্ধানটুকু বের করতে পারেননি।
তাই মানুষ তাকে কেন ভোট দেবে?
এদিকে মুখ্যমন্ত্রীও হয়তো দেখেছেন পরিমল শুক্লবৈদ্যকে মন্ত্রীসভা থেকে তাড়ানোর এই একটি উপায় আছে, যেমনে তেমনে লোকসভায় পাঠিয়ে দেওয়া।
তাই পরিমল শুক্লবৈদ্যর মনোনয়ন জমা দিতে দিসপুর থেকে ছুটে এসেছেন।
বাকিটা ভোটাররাই জানেন আগামী পাঁচ বছরের জন্য শিলচর লোকসভা কার হাতে তুলে দিলে সমষ্টির উন্নয়ন হবে।