আগরতলা, ১ অক্টোবর : কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যে ত্রিপুরায় দুর্গাপূজা উদযাপন শুরু হয়েছে। মা দুর্গার ভক্তরা মহাপঞ্চমীর রাত থেকেই প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে বেরিয়ে পড়েছেন।
গত দু’বছর করোনা মহামারী পুজোর আনন্দ উপভোগ করতে না দেওয়ায় এ বছরের দুর্গাপূজা উত্সবটি বেশ আনন্দমুখর হয়ে যে উঠবে সেটা আগেই বোঝা গিয়েছিল।
তাই পুজা আনুষ্ঠানিক ভাবে মহাষষ্ঠী শনিবার থেকে শুরু হলেও একদিন আগে থেকেই মহাপঞ্চমির দিনেই প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে দর্শনার্থীদের ভিড় জমে উঠেছে।
আগরতলার বড়-বাজেটের পূজা প্যান্ডেলগুলি দর্শনার্থীদের প্রদর্শনের জন্য পৃথক পৃথক দুর্দান্ত থিম নিয়ে এসেছে। শহরের বিভিন্ন এলাকায় অতিরিক্ত নিরাপত্তার জন্য মোতায়েন করা হয়েছে বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী।
যানজট এড়াতে আগরতলা শহর ট্রাফিক পুলিশ জারি করেছে বিধিনিষেধ। নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে ত্রিপুরা পুলিসের সহকারী পুলিশ মহাপরিদর্শক জ্যোৎসিমান দাস চৌধুরী জানান, বিগত বছরগুলির সাথে সমতা বজায় রেখে রাজ্যের বিভিন্ন অংশে পর্যাপ্ত সংখ্যক বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।
মানুষ যাতে পুজোর দিনগুলি কোনওরকম উত্তেজনা ছাড়াই উপভোগ করতে পারে তার জন্য নিখুঁত নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, এবার দুর্গাপূজার সংখ্যা বেড়েছে, ত্রিপুরা পুলিশ বিভাগ ২,৫০৬ পুজো আয়োজকদের অনুমতি দিয়েছে। এরমধ্যে আগরতলা শহরেই রয়েছে ৯৭৯ টি পূজা এবং ১৫২৭ টি পূজা গ্রামীণ এলাকায়।
তিনি জানান, দুর্গা পূজার দিনে আগরতলা শহর এলাকায় লক্ষাধিক লোক আসেন।
এসডিপিও সদর অজয় কুমার দাস বলেছেন, ট্রাফিক চলাচলে বিধিনিষেধের প্রয়োজনীয় আদেশ ইতিমধ্যেই হয়েছে, পুলিশ নগরীর চোর-ডাকাতদের ধরতে অভিযান শুরু করেছে। যাতে পুজোতে শহরের লোকজন বিনা দ্বিধায় বাড়ি থেকে বেরিয়ে মণ্ডপে আস্তে পারেন।
এদিকে দুর্গাপূজা উপলক্ষে রাজ্যবাসিকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ মানিক সাহা।
দর্শনার্থীদেরকে প্যান্ডেলে টানতে শহরের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন ক্লাব তাদের পূজার থিম হিসেবে বেছে নিয়েছে বুর্জ খলিফাকে।
ধলেশ্বর এলাকায় অবস্থিত আজাদ হিন্দ সংঘ তাদের পূজা প্যান্ডেলের থিম আন্দামান নিকোবর দ্বীপের বিলুপ্ত উপজাতি গোষ্ঠীর উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে।
আজাদ হিন্দ সংঘের সদস্য শম্ভু বনিক তাদের থিম সম্পর্কে বলতে গিয়ে জানান, আমরা শুনেছি আন্দামান নিকোবর দ্বীপের নৃতাত্ত্বিক উপজাতিটি বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে তাই আমরা আমাদের পূজা প্যান্ডেলের মাধ্যমে তাদের জীবন প্রদর্শন করার চেষ্টা করছি। এছাড়াও সবকটি পুজোর আয়োজক কমিটি আকৃষ্ট করার জন্য প্যান্ডেলে আকর্ষণীয় আলোর ব্যবস্থা করেছেন। আগরতলা শহরের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে, বিশালগড়, উদয়পুর, সিপাহিজলা ও গোমতি জেলার সদর দফতরেও বড় বাজেটের পূজা প্যান্ডেল স্থাপন করা হয়েছে।