শিলচর, ১ অক্টোবর : আসামের গুমড়া পুলিস ফাঁড়ির সামনে ধাও ধাও করে জ্বলছে একটি গাড়ি। গাড়িটি পুলিসের চোখে ধুলো দিয়ে বাংলাদেশে পাচারের উদ্দেশ্যে গরু নিয়ে মেঘালয়ের দিকে যাচ্ছিল।
কিন্তু এলাকার স্বচেতন জনতার চোখ এড়াতে পারেনি পাচারকারিরা। জানাগেছে ১০ থেকে ১২টি গরু একটি গাড়িতে করে মেঘালয়ের দিকে নিয়ে যাচ্ছিল পাচারকারিরা।
স্থানীয় স্বচেতন জনতার চোখে পড়তেই গাড়ির গতিরোধ করেন তারা। তবে গাড়ির চালক সহ পাচারকারিরা পালিয়ে যেতে সক্ষম হলেও গাড়িটি জ্বালিয়ে দেন ক্ষুব্ধ জনতা।
তাদের অভিযোগ, রাজনীতির ছত্রছায়ায় কালাইন এলাকা বহু বছর থেকে অপরাধের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে। গরু পাচার, নারী পাচার, ড্রাগস পাচার, সার পাচার, বার্মিজ সুপারি পাচার সহ অবৈধ কয়লা পাচারে কালাইন সব সময়ই সংবাদ শিরোনাম দখল করে আসছে।
আজকের এই ঘটনাটি গুমড়া পুলিশ ফাঁড়ির সামনে ঘটলেও সংবাদ লেখা পর্যন্ত পুলিসের উপস্থিতির কোন খবর নেই।
এলাকার স্বচেতন জনসাধারণের সন্দেহ এই পাচারকাণ্ডের সঙ্গে শাসক দলের নেতা কর্মীদের হাত রয়েছে, যার কারনে পুলিশ টুটো জগ্নাথের মতো হাত গুঁটিয়ে দুর থেকে দেখছে।
জনগন প্রশ্ন তুলেন যদি তা না হয় তবে স্থানে স্থানে পুলিশ পোস্ট থাকার পরও কিভাবে অবাধে এসব চলছে? কেন আজকের এই গরু পাচারের ঘটনা পুলিশের দৃষ্টি এড়াতে পারে? এবং জনতা প্রতিরোধ করলেও পুলিশ যথা সময়ে ঘটনা স্থলে উপস্থিত হল না কেন?
উল্লেখ্য যে, এর আগেও অনেক বার এসব অবৈধ কাণ্ডে জড়িত থাকার শাসক দল বিজেপির বরাক উপত্যকার বেশ কয়েক জন নেতা, কর্মী এবং বিধায়ক-সাংসদের নাম প্রকাশ্যে আসে।
এরমধ্যে শিলং লোকায়ুক্ত আদালতে জনস্বার্থ একটি মামলায়ও এদের বেশিরভাগের নাম রয়েছে, যারা রাতারাতি আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়ে উঠেছে।
নাম রয়েছে লক্ষ্মীপুরের বর্তমান বিধায়ক কৌশিক রাইয়েরও। শিলং লোকায়ুক্ত এই মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেন।
কিন্তু আজ পর্যন্ত কোন তদন্ত হয় বলে জানা যায়নি। এনিয়েও কানাগোসা আলচনার শেষ নেই, বরাকে যে সেন্ডিক্যাট রাজ চলছে তাদের মাথার উপর আশীর্বাদের হাত রয়েছে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী ডঃ হিমন্ত বিশ্বশর্মার।
দলের মধ্যেও ব্যাপক চর্চা চলছে। যাদের কঠোর পরিশ্রমে দল শাসন ক্ষমতায় পৌঁছেছে, দলের বর্তমান পরিস্থিতে সিংহভাগই বিদ্রোহ ঘোষণা করে দলিয় কার্যালয় বয়কট করেছেন।
বিজেপির কাছাড় জেলা কার্যালয়ে গেলে খুব কমই পুরানা কর্মী চোখে পড়ে, বেশির ভাগই নবাগত। এরমধ্যে ক্ষমতার সাদ পাওয়ার স্বপ্ন নিয়ে অন্য দল ত্যাগ করে এসেছেন অনেকেই। স্বচেতন নাগরিকরা মনে করেন, আজকের এই ঘটনা সরকারের বিরুদ্ধে জনতার পুঞ্জিভুত ক্ষোভ মাফিয়া রাজের বিরুদ্ধে গর্জনের শঙ্খনাদ।