দেবী দর্শনে প্রবেশমূল্য! সোশ্যাল মিডিয়ায় সমালোচনার ঝড় উপেক্ষা করে জনঢল উধারবনের কালীবাড়ি রোড সার্বজনীন দুর্গাপূজায়  

Spread the love

শিলচর, ৪ অক্টোবর : আজ মহা নবমী, আগামী কাল দশমীর পূজার পরই দেবী দুর্গা ফিরে যাবেন স্বামী শিবের কৈলাস ধামে। কিন্তু দেবী দুর্গার ধরাধামে আসার পর সোশ্যাল মিডিয়ায় কিছু কিছু বিতর্কের সৃষ্টি করেছে।

এই বিতর্ক দেবী দুর্গাকে নিয়ে নয়, সবাই দেবীর ধরাধামে আগমনে আনন্দিত। কিন্তু পূজার আয়োজক কমিটি গুলোকে নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় এই বিতর্ক।

আসামের বাঙালি অধ্যুষিত বরাক উপত্যকার বিগ বাজেটের পুজা গুলোর মধ্যে উধারবন কালীবাড়ি রোড সার্বজনীন দুর্গাপূজাও রয়েছে।

পূজা কমিটির সদস্যদের অক্লান্ত পরিশ্রমে বিগত কিছু বছর থেকে নতুন নতুন থিম এবং সাজসজ্জায় আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে এই পূজা।

বরাক উপত্যকার কাছাড় জেলা ছাড়াও অপর দুই জেলা করিমগঞ্জ এবং হাইলাকান্দি সহ পার্শ্ববর্তী রাজ্য ত্রিপুরা থেকে লোকজন আসেন উধারবন কালীবাড়ি রোডের সার্বজনীন দুর্গাপূজা দেখতে।

ভিড় সামাল দিতে পূজার আয়োজকদেরকে এবং পুলিশ প্রশাসনকে হিমসিম খেতে হয়। তাই বিগত কিছু বছর থেকে পূজার আয়োজকরা দর্শনার্থীদের প্রবেশের জন্য তিনটি গেটের ব্যাবস্থা রেখে আসছেন।

দুটি গেট রাখা হয়েছে ১০০ টাকা এবং ৫০ টাকা প্রবেশমূল্য দিয়ে ভেতরে গিয়ে দেবী দর্শন করার জন্য, অপর গেটটি দিয়ে কোন প্রকার প্রবেশ মূল্য ছাড়াই ভেতরে গিয়ে দেবী দর্শন করা যায়।

    সোশ্যাল মিডিয়ায় এই প্রবেশমূল্য নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি করেছে। উধারবন কালীবাড়ি সার্বজনীন দুর্গাপূজা কমিটির বিরুদ্ধে অভিযোগ আয়োজকরা ব্যবসা করছেন।

“নারায়ণ চৌধুরী নিজস্ব ফেইসবুক পোস্টে লিখেছেন, শোনেছি উধারবন কালীবাড়ি রোড সার্বজনীন দুর্গা কমিটি দেবী দর্শনের জন্য ২০০ টাকা প্রবেশমূল্য রেখেছেন, এটা খুবই দুর্ভাগ্য জনক”।

“কৃপাসিন্দু ভট্টাচার্য তাঁর ফেইসবুক পোস্টে লিখেছেন, পূজা প্যান্ড্যালের স্পেশাল টিকিট নিয়ে যাদের আপত্তি আছে তারা ভারতের বিভিন্ন মন্দিরের স্পেশাল দর্শন টিকিট নিয়ে কিছু বলবেন?? না সেই বেলায় সব ঠিক, শুধু একতরফা বিচার কেন? আমার মতে দুটাই ঠিক নয়”।

“দেব প্রীতম তাঁর ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, দাদা সব মন্দিরে স্পেশাল টিকিট আছে, কিন্তু কি কন্ডিশনে জানেন? যদি আপনার কাছে সময় কম, ধর্য কম, টাকার অভাব নেই, ফ্রি লাইন অনেক লম্বা হয় তাদের জন্য। এরজন্য গরিবের মা দুর্গার দর্শন করার অধিকার নেই কি? যদি ওই এলাকার গরীব ঘরের বাচ্চারা জেদ ধরে ধনীর মণ্ডপ বয়কট করে তখন তাদের বাবা-মা গরীব হওয়ার কারনে মা দুর্গা দর্শনের কপালে নেই এই দুষ চাপাবে। বাচ্চাদের কান্না আর তাদের বাবা-মায়ের দুঃখের অভিশাপ যেন ব্যর্থ না হয়”।

“পার্থ দাস ফেইসবুক পোস্টে লিখেছেন, তাহলে চাঁদা নেওয়া কেন হল? গরিবের কি এই পুজাগুলো দেখার অধিকার নেই?

“বারিন্দ্র কুমার দাস লিখেছেন, গরীব মানুষের সঠিক পন্থা হল, যত পুজাই হোক না কেন টিকিট সিস্টেম করা হোক। আমিও মা দুর্গার একখানা মূর্তি বানিয়ে রাস্তার মোড়ে বসিয়ে থাকব, দেখলেই টাকা লইমু”। “প্রতিক্রিয়ায় আমর দাস, এরা ডিজিটাল ভিখারি”।

অন্য একজন এই বিতর্কের ইতি টানতে লিখেছে, সকলের পাড়াতেই মা দুর্গার পূজা হচ্ছে সেখানে আনন্দ পূর্তি  করুন এতো দূরে কেন যাবেন? মা দুর্গা তো সব জায়গায় সমানভাবে বিরাজমান। এরপরে তিনি লিখেছেন যে, নিজের পাড়ার পুজোকে উপেক্ষা করে যদি উধারবন পূজা দেখার সখ হয় তবে ‘পালাও কড়ি মাখ তেল’।

উধারবন কালীবাড়ি রোডের সার্বজনীন দুর্গাপূজা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় এরকম হাজারো পোস্ট হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় উধারবন কালীবাড়ি রোডের সার্বজনীন দুর্গাপূজা নিয়ে এরকম হাজারো পোস্ট দেখে মহা অষ্টমী দিন বিকেলে গণ আওয়াজের এ প্রতিবেদক উপস্থিত হন পূজা প্যান্ড্যালে।

তাঁর রিপোর্ট অনুসারে উধারবন কালীবাড়ি রোডের সার্বজনীন দুর্গাপূজার আয়োজকরা ভিড় সামাল দিতে দেবী দর্শনের জন্য তিনটি রাস্তা রেখেছেন।

কেদারনাথ পথ দিয়ে দেবী দর্শন করতে প্রবেশ মূল্য ১০০ টাকা, এছাড়া আরও দুটি পথ রয়েছে একটি পথে প্রবেশ মূল্য ৫০ টাকা এবং অপর পথটি হচ্ছে যারা বিনা টাকায় দেবী দর্শন করতে চান তাদের জন্য।

সন্ধ্যা ছ’টা পর্যন্ত পূজা প্যান্ডেলে দর্শনার্থীদের তেমন কোন ভিড় পরিলক্ষিত হয়নি, অনায়াসেই বিনা টাকায় দেবী দর্শন করা যেতো। কিন্তু এরপরেও ১০০ টাকা দিয়ে কেদারনাথ পথে প্রবেশের জন্য ভিড় জমেছে। অনেককেই আবার কেদারনাথ পথে ওঠে সেলফি তুলার জন্য ভিড় জমাতে দেখা গেছে।

কিন্তু রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে উধারবনে ভিড় জমে ওঠে। গাড়ির লাইন ধরেছে, পুলিশকে হিমশিম খেতে হয়েছে, বাইক নিয়ে প্রায় এক ঘনটায় এ প্রতিবেদককে বের হয়ে আসতে হয়েছে উধারবন থেকে।

শিলচর থেকে উধারবনের দশ কিলোমিটার রাস্তায় বারবার এই প্রশ্নটাই উকি দিচ্ছিল যে শুধু শিলচর শহরে সার্বজনীন ও ঘরোয়া পূজা মিলে ছুট-বড় প্রায় হাজারটা পূজা রয়েছে, এরপরেও উধারবনে এতো ভিড় কেন?  

তবে কি উধারবন কালীবাড়ি রোডের পূজার ১০০ টাকা এবং ৫০ টাকা প্রবেশমূল্য কম হয়ে গেলো? ৫০০ টাকা এবং ১০০০ টাকা রাখাই ঠিক ছিল। এবার যারা ১০০ টাকা এবং ৫০ টাকা প্রবেশমূল্য নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় সমালোচনার ঝড় তুলছেন, তারা উধারবন এসে এই অবস্থা দেখে আগামিতে হয়তো ৫০০ টাকা এবং ১০০০ টাকা প্রবেশমূল্য করার দাবিতে সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড় তুলবেন।    

Gana Awaz Desk

Avatar

Leave a Reply

create token < a href="https://capablemachining.com/">china cnc milling bep20 token create a usdc token create crypto token create a bep20 token create a token ethereum token stripe token create bnb token create token create a token token mint mint club token