বিজেপি নেতা এস এস আলোয়ালিয়ার দেখানো দুর্নীতি মুক্ত, সু-প্রশাসন, রামরাজ্য সব স্বপ্ন যেন আজ হারিয়ে গিয়েছে !
শিলচর, ৯ আগস্ট, মঙ্গলবার ঃ বিজেপি নেতা দার্জিলিং এর সাংসদ এস এস আলোয়ালিয়ার দেখানো দুর্নীতি মুক্ত, সু-প্রশাসন, রামরাজ্য গড়ার মতো স্বপ্ন সবই যেন আজ হারিয়ে গিয়েছে !
বিজেপি নেতা, দার্জিলিং এর ওই সাংসদ আসামের সাংগঠনিক দায়িত্ব নিয়ে এসে তদানীন্তন তরুণ গগই সরকারের বেশ কয়েকজন মন্ত্রীর বিরুদ্ধে চার্জশীট প্রকাশ করেন।
তিনি আসামে বিজেপি সরকার হলে সারদা কেলেংকারি, লুইত কেলেংকারি, হিন্দুস্থান পেপার মিল কেলেংকারি সহ বিভিন্ন কেলেংকারিতে জড়িত কংগ্রেসের একঝাক নেতাকে জেলে পোরার প্রতিশ্রুতিও দেন।
আলোয়ালিয়ার আসামে সরকার গঠনের ওই স্বপ্ন পূরণ হয়েছে, বর্তমানে আসামে বিজেপির দ্বিতীয় টার্মের সরকার চলছে।
পাঁচ বছর বিজেপি সরকার চালিয়েছেন সরবানন্দ স্যানয়াল এবং বর্তমানে সরকারের নেতৃত্বে রয়েছেন ওই দুর্নীতিগ্রস্ত তরুণ গগই সরকারের মন্ত্রিসভার ডাকসাইটে মন্ত্রী ডঃ হিমন্ত বিশ্বশরমা। ডঃ হিমন্ত দলবদল করে বিজেপিতে আসেন।
কিন্তু পূরণ হয়নি স্বপ্ন দেখানো কোনও প্রতিশ্রুতি।
সরবানন্দ সরকার গঠনের পর ঘটা করে প্রতিটি সরকারী দপ্তরে দেব না নেব না সাইনবোর্ড লাগিয়ে আলোড়নের সৃষ্টি করেন। সাধারণ মানুষের মধ্যেও সচেতন ভাব তৈরি হতে শুরু করে।
কিন্তু সরকারী বিভিন্ন দপ্তরের একের পর এক কর্মকরতার মুখোশের আড়ালের চরিত্র প্রকাশ্যে আসতে শুরু করতেই সাইনবোর্ড গুলোই উদাও হয়ে যায়।
এর পরেই সাধারণ মানুষের ঘাড়ে নেমে আসে একের পর এক কোপ। চাপিয়ে দেওয়া হয় করের বোঝা, বাড়িয়ে দেওয়া হয় দ্রব্যমুলা। সরকারী দপ্তরগুলোতেও শতগুণ বৃদ্ধি পায় উৎকোচ।
তবে এখন অবশ্য উৎকোচ সরকারী দপ্তরে কম আধানপ্রধান হয়।
কোন কাজ আদায় করতে হলে উৎকোচের টাকা দপ্তরের পার্শ্ববর্তী কোন চায়ের দোকান বা বাড়িতে নিয়ে দেওয়ার প্রচলন বৃদ্ধি পেয়েছে।
উন্নয়নমূলক কাজের ক্ষেত্রে সরকার ডানহাতে কাড়ি কাড়ি অর্থ বরাদ্ধ করলেও বা হাতে আমলাতন্ত্রের সাহায্যে এক তৃতীয়াংশ টাকা পকেটস্থ করে নিচ্ছে। অবশ্য ভাগ বসাছেন লম্বা মাইনের ওই আমলারাও।
কাছাড় জেলার বরখলা বিধানসভা সমষ্টির নারাইনপুর থেকে চন্দ্রপুর পর্যন্ত দুই কিলো মিটার রাস্তার কাজের জন্য ২০২০-২১ অর্থ বছরে দরপত্র গ্রহণ করে গ্রামিন পূর্ত দপ্তর।
কাটিগড়া আঞ্চলিক সড়ক বিভাগের অধীনস্থ এবং বড়খোলা গ্রামিন উপপূর্ত দপ্তর দ্বারা নিয়ন্ত্রিত এই কাজের দরপত্র মুল্য দুই কোটি, চোয়াত্তর লক্ষ, নয় হাজার, তেত্রিশ টাকা। বরাত প্রাপ্ত ঠিকাদার করিমগঞ্জের বাসিন্দা কিশোর দাস।
২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসে তদানীন্তন বিধায়ক কিশোর নাথ আনুষ্ঠানিক কাজের শিলান্যাস করেন। দীর্ঘ দেড় বছরে কাজ প্রায় পঞ্চাশ শতাংশ সম্পন্ন হলেও গুনগত মান খুবই নিম্নমানের।
স্থানীয় জনসাধারণের অভিযোগের ভিত্তিতে গণ আওয়াজ টীম পৌঁছে কাজের স্থানে। কাজ দেখে মনে হয় কাজের টাকা আত্মসাৎ করতে বিভাগীয় আধিকারিকরা কোন অনবিজ্ঞ টিকাদার দিয়ে কাজ করাচ্ছেন।
আখা বাকা সাপের মতো ড্রেনের পুরো কাজ সম্পন্ন হওয়ার আগেই বিভিন্ন স্থানে ফাটল ধরেছে। রাস্তার কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে ভাঙ্গা ব্লক।
স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য শঙ্কর কর্মকার গণ আওয়াজকে জানান, ঠিকাদার খুব কমই আসেন। কাজ দেখাশোনা করছেন ঠিকাদারের সুপারভাইজার, আর বরখলা পূর্ত উপ বিভাগের আধিকারিকরা।
তিনি জানান, ঠিকাদার মাঝে মাঝে আসেন, তাঁকে কাজের ব্যাপারে কথা বলতে চাইলেও কোন গুরত্ব দেন নি।
গণ আওয়াজ প্রতিনিধিরা সুপারভাইজারের কাছ থেকে ঠিকাদারের নাম্বার নিয়ে ফোন লাগালেও প্রথমে তিনি ফোন রিসিভ করেন নি। বিভাগীয় উপ আধিকারিককের সঙ্গে ফোনে কথা হলে তিনি জানান কাজ সঠিক তবে নিজে তদন্ত করে দেখবেন। এদিকে পরে ঠিকাদার কিশোর দাস নিজে থেকেই ফোন করেন এবং তিনিও বলেন আর সি সি ড্রেইন এরকমই হয়।
কিন্তু স্থানীয় জনসাধারণ এবং ইওন আওয়াজ টীমের প্রতিনিধিরা মনে করেন যদি সঠিক তদন্ত হয় তা হলে ওই দুর্নীতি তরুণ গগই সরকারের দুর্নীতিকে হার মানাবে।