অনলাইন ডেক্স, ১৫ অক্টোবর : দেশরক্ষায় নিয়োজিত জুম অবশেষে শহীদ হলেন। সন্ত্রাসীদের হাতে আহত হয়ে হাসপাতালে জীবন-মৃত্যুর লড়াইয়ে থাকা জুমের সুস্থতার জন্য শুধু সেনাপ্রধানবাহিনীই নয় সেনাপ্রধানও প্রার্থনা করেছেন। কিন্তু শেষ রক্ষা হলনা জুমের।
জম্মু ও কাশ্মীরের অনন্তনাগ জেলায় জঙ্গিদের লক্ষ্য ছিল জুম। জুমের শরীরে দুইবার গুলি করে একদল সন্ত্রাসী। আহত জুমকে পুনরুজ্জীবিত করার জন্য 54 AFVS-এ নিয়ে যাওয়া হয়, কিন্তু অবশেষে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
তার মৃত্যুর আগে সেনাবাহিনী ও নিরাপত্তা বাহিনী দুই সন্ত্রাসীকে হত্যা করে। জুমকে ভারতীয় সেনাবাহিনী একটি গভীর দায়িত্ব অর্পণ করেছিল, অনন্তনাগে সন্ত্রাসীরা যেখানে আশ্রয় নিচ্ছিল সেই বাড়িটি খালি করার দায়িত্ব জুমকে দেওয়া হয়েছিল।
বাড়িতে ঢুকে সন্ত্রাসীদের বের করে দেওয়ার দায়িত্ব ছিল জুমের। জুম তার দায়িত্ব পালনে ঘরে ঢুকে পড়েন। জুমের কাছে কোনো অস্ত্র ছিল না, শারীরিক শক্তিই তার অস্ত্র। জুমের মূল লক্ষ্য ছিল তার শারীরিক শক্তি নিয়ে ঘরে ঢুকে সন্ত্রাসীদের ওপর হামলা করা।
জুম বাড়িতে ঢুকে সেখানে লুকিয়ে থাকা সন্ত্রাসীদের ওপর হামলা চালায়। সন্ত্রাসীরা জুমকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। শরীরে দুবার গুলিবিদ্ধ হওয়ার পরও জুম থামেনি।
অবশিষ্ট বাহিনী নিয়ে সন্ত্রাসীদের উপর আক্রমণে বাধ্য করে এবং সেনা পুলিশের অভিযান সফল হয়। এ ঘটনায় জুমের পেছনের দুই পা ভেঙে যায়। তার মুখেও গুরুতর জখম হয়েছে।
সেনাপ্রধানও টুইট করেছেন যে তিনি জুমের পুনরুদ্ধারের জন্য প্রার্থনা করছেন। সেনা সৈন্যরাও জুমের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেছে। অবশেষে দেশ রক্ষার দায়িত্ব সফলভাবে পালন করে শহীদ হন জুম।
কুকুরটি ভারতীয় সেনাবাহিনীতে কুকুরের একটি অত্যন্ত বিশিষ্ট জাত ছিল। জুম নামের কুকুরটি গত আট মাস ধরে ২৮ আর্মি ডগ ইউনিটের সাথে ছিল। জুম এবং জুমের মতো বিশেষভাবে প্রশিক্ষিত কুকুর বিভিন্ন অপারেশনে সেনাবাহিনীকে সহায়তা করছে।
তবে অনেক ক্ষেত্রেই দেশ রক্ষায় নিয়োজিত বিশেষ জাতের, জুমের মতো উচ্চ প্রশিক্ষিত কুকুরের বলিদান সম্পর্কে সাধারণ মানুষ অবগত নয়।
জম্মু ও কাশ্মীরে সেনা কুকুরের শাহাদত সারা দেশে সেনাবাহিনী সহ বিভিন্ন নিরাপত্তা বাহিনীতে মোতায়েন বিশেষভাবে প্রশিক্ষিত কুকুরদের বলিদানকে আলোকিত করেছে। হামলায় দুই লস্কর-ই-তৈয়বার ক্যাডার নিহত হয়। তাঁর আগে এক্সেল নামে আরেকটি বিশেষভাবে প্রশিক্ষিত নিরাপত্তা কুকুরকে সন্ত্রাসীরা টার্গেট করে।
এক্সরলও সন্ত্রাসীদের হাতে নিহত হয়। স্বাধীনতা দিবস উদযাপনে এক্সরলকে মরণোত্তর বীরত্ব পুরস্কারে ভূষিত করে সেনাবাহিনী। জুমও এক্সরল-এর মত একটি সাহসী পুরষ্কার পাবে। সেটাই হবে মরণোত্তর জুমের স্বীকৃতি।