শিলচর, ২৫ অক্টোবর : নিউক্লিয়াস পাবলিকেশন বাংলা ভাষার অধিকার রক্ষার অগ্রনী সেনানী ‘গর্বের বাঙালি’ সম্মাননার জন্য প্রদীপ দত্তরায়কে মনোনীত করায় সুশীল সমাজের নামে কয়েকজন শিলচর প্রেসক্লাবে প্রতিবাদ জানান।
এবার তার প্রতিক্রিয়ায় মুখ খোললেন বিডিএফ আহ্বায়করা।
বিডিএফ-এর নবনিযুক্ত আহ্বায়ক খাইদেম কান্ত সিং এই বিতর্ককে অহেতুক এবং এর পেছনে বাঙালি বিরোধী লবির চক্রান্ত থাকার সম্ভাবনা জাহির করেছেন।
তিনি বলেন, প্রদীপ বাবু স্পষ্টীকরণ দিয়ে জানিয়ে দিয়েছেন ১৯৬১-র আন্দোলনে তার প্রত্যক্ষ ভুমিকা ছিলনা এবং তিনি সেই অর্থে ভাষা সেনানীও নন। এটা আয়োজকদের তথ্যগত ভুল, সংশোধন করে নেওয়া হবে।
খাইদেম বলেন, এটাও মনে রাখা দরকার যে বাংলা ভাষার অধিকার রক্ষার আন্দোলন শুধু ১৯৬১ তেই শেষ হয়ে যায়নি। ১৯৭১ এবং ১৯৮৬ তেও এই নিয়ে আন্দোলন হয়েছে।
১৯৮৬-র আন্দোলনে প্রদীপ দত্তরায়ের নেতৃত্বে আকসা ২৪ ঘন্টার বন্ধের ডাক দিয়েছিল এবং করিমগঞ্জে অবস্থানরত তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী প্রফুল্ল মোহান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সাব্যস্ত করেছিল।
১৯৯১ সালে ওয়ার্লড ডেভেলপমেন্ট পার্লামেন্ট তাঁকে ডক্টরেট ডিগ্রি সাম্মানিক প্রদান করে, সেটাও প্রদীপ দত্তরায় ভাষা শহিদদের নামে সমর্পন করেন এবং প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী আজও ব্যাবহার করেন নি।
একইভাবে ১৯৯৪ সালে তাঁকে যে রাজীব গান্ধী শিরোনাম পুরস্কারে ভূষিত করা হয়, এই সম্মাননাকেও তিনি ভাষা শহিদদের নামে উৎসর্গ করেছেন।
এছাড়া বিগত কয়েক বছর ধরে তিনি লাগাতার বাংলা ভাষার অবমাননার বিরুদ্ধে সরব রয়েছেন, সেজন্য তাঁকে জেলও খাটতে হয়েছে।
তাই তাঁকে ভাষা সেনানী বলা যেতেই পারে এবং এই বিতর্ক সম্পুর্ন অর্থহীন মনে করেন খাইদেম কান্ত সিং।
খাইদেম বলেন, ১৯৬১-র ভাষা আন্দোলন থেকে পরবর্তীতে এই ব্যাপারে যত আন্দোলন হয়েছে তাতে শুধু বাংলাভাষীরা নন বরাকের মনিপুরী, ডিমাসা, চা শ্রমিক সবাই অংশ নিয়েছেন এবং সমর্থন করেছেন।
বিডিএফ-র অন্য আহ্বায়ক প্রমোদ শ্রীবাস্তব বলেন, সুশীল সমাজের নামে শিলচর প্রেসক্লাবের সভার আহ্বায়কের কোন তথ্য নেই, এতেই স্পষ্ট যে পুরো ব্যাপারটাই রহস্যজনক।
শ্রীবাস্তব প্রশ্ন তুলেন, বাংলা ভাষা নিয়ে যদি তারা এতটাই ভাবিত তবে বাংলা ভাষার মর্যাদা যেভাবে কেড়ে নেবার প্রয়াস চলছে তা নিয়ে কিছু বলেন নি কেন?
ডাঃ রাজীব কর শারীরিক অসুস্থতা স্বত্ত্বেও ভাষা শহিদ স্টেশন নামকরণের দাবিকে আগামী কেবিনেট বৈঠকের আগে তুলে ধরার যথাসাধ্য চেষ্টা করছেন, বিভিন্ন সংগঠনকে এই ইস্যুতে একজোট করার চেষ্টা করছেন। সুশীল সমাজের নামে এভাবে বাঙালির বিরোধিতাকে দুর্ভাগ্যজনক বর্ণনা করে বাংলা ভাষার স্বার্থে একজোট হয়ে ঝাঁপানর আহ্বান জানান বিডিএফ আহ্বায়করা।