জুলি দাস
করিমগঞ্জ, ১৪ নভেম্বর : আমরা সবাই জীবন যুদ্ধে আছি। খাওয়া দাওয়া, চলাফেরা বিভিন্ন ক্ষেত্রেই গন্ডগোল রয়েছে। ফলে হাজারো ব্যস্ততার মধ্যেও শরীরের যত্ন নিতে হবে।’ এ কথা বলেছেন বিশিষ্ট হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ কুনাল সরকার।
এছাড়া যাদের আয়ুষ্মান কার্ড রয়েছে তারা দূরে চিকিৎসার জন্য না গিয়ে নাগালের ভিতর চিকিৎসা করলে আরো ভালো হবে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। এতে যাতায়াতের খরচ কমে আর্থিক সাশ্রয় হবে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।
বরাক উপত্যকায় দ্বিতীয়বারের মতো এসেছেন ডা: কুনাল সরকার। আগে একবার শিলচর আসলেও করিমগঞ্জে চিকিৎসার কাজে প্রথমবারের মতো আসা।
রবিবার এখানে এক সাংবাদিক বৈঠকে কলকাতার বিশিষ্ট হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ বলেছেন, ওষুধের বাইরে যদি কিছু নিয়ে কৌতুহল থাকে তাহলে সেটা হল ইতিহাস।
করিমগঞ্জের প্রতি আলাদা একটা টান হয়েছে ছোটবেলা থেকেই। কারণ এখানে দেশভাগের ইতিহাস রয়েছে। এতদঞ্চলের সংস্কৃতি এবং কলকাতার সংস্কৃতি প্রায় একই।
কলকাতায় চূড়ান্ত ব্যস্ততার ফাঁকে অন্যত্র পালাবার সুযোগ থাকলে তা মোটেই হাত ছাড়া করি না। ফলে সুযোগ পাওয়ায় করিমগঞ্জে চলে আসি। কারণ এতে কাজের পরিধি এবং যোগাযোগের সান্নিধ্য আরো বাড়ে।
কোনো সমস্যা দেখা না দিলেও নিয়মিত চিকিৎসা করানোর পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। বলেছেন, আয়ুষ্মান কার্ড থাকলে চিকিৎসায় খরচ প্রায় হয় না।
কিন্তু বাইরে গিয়ে চিকিৎসা করালে কার্ড থাকলেও অনেক খরচ হয়। স্থানীয় পর্যায়ে এবং হাতের নাগালের ভিতরে সেই সব চিকিৎসা হলে অত্যন্ত ভালো। কারণ আয়ুষ্মান কার্ডের মাধ্যমে চিকিৎসা অনেক কাছে এসেছে। এখানে ক্যাথল্যাব খোলার প্রয়োজন রয়েছে বলে জানান তিনি।
কারোর নাম উল্লেখ না করে সরকার বলেন, অনেক হেলথ কেয়ার গ্রুপ, কর্পোরেট হাসপাতাল রয়েছে যেখানে মানুষ অনেক আশা নিয়ে যান। কিন্তু ওই হেলথ কেয়ার গ্রুপ এবং কর্পোরেট হাসপাতালগুলি আয়ুষ্মান কার্ডের কথা শুনলে নাক সিটকায়। কিন্তু মেডিকো এ নিয়ে কোনো প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে না।
হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ইদানিং মৃত্যুর সংখ্যা অনেক বাড়ার ফলে তিনি জনগণকে পরামর্শ দিয়েছেন, বছরে অন্তত একবার চেকআপ করান। চিকিৎসকের কাছে না গিয়েও ব্লাড প্রেসার, ওজন পরিমাপ করান। এছাড়া বছরে একবার ইকো ইসিজি, ডায়েট নিয়ন্ত্রিত করা প্রয়োজন।
ডা: কুনাল সরকার বলেছেন, শরীরের কোনো সমস্যা হলে চিকিৎসক দেখাবেন, এই ধারণা ঠিক নয়। কারণ আমরা সব সময় জীবন যুদ্ধে আছি। খাওয়া-দাওয়া ইত্যাদিতেও গন্ডগোল রয়েছে।
বলেছেন, কিছু টেস্ট এখানেই করা যাবে। করিমগঞ্জ, শিলচরে করার ব্যবস্থা রয়েছে। শুধু অপারেশনের প্রয়োজন হলে কলকাতায় গিয়ে করাতে হবে।
কিউর প্লাস-এর চেয়ারম্যান প্রবীণ বর্ধন বলেছেন, অসমের প্রতি দায়বদ্ধতার কথা মাথায় রেখে বরাকের তিন জেলা ছাড়াও ডিব্রুগড়, গুয়াহাটি সহ রাজ্যের অনেক জেলায় মেডিকোর সঙ্গে চুক্তি হয়েছে কিউর প্লাস-এর।
গুনগত চিকিৎসার জন্য এখানকার জনগণের যাতে অভাববোধ না হয়, সেজন্য সব চিকিৎসা হবে সার্বিক আর্থিক পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে। দুইমাসে একবার কলকাতা থেকে বরাকে এসে রোগী দেখবেন ডা: কুনাল সরকার। দেশের পাঁচ জন বিশিষ্ট হৃদরোগ বিশেষজ্ঞের মধ্যে কুনাল সরকার অন্যতম বলে তিনি জানিয়েছেন। আরো বলেছেন, করিমগঞ্জে বিভিন্ন টেস্ট করানোর ব্যাপারেও চুক্তি হয়েছে মেডিকোর সঙ্গে। মা তারা ডায়াগনস্টিক সেন্টার-এর স্বত্বাধিকারী সনু চন্দ সব ধরনের চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার জন্য অঙ্গীকার করেছেন। ডা: কুনাল সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন তিনি।