ব্যবসা ও বিনিয়োগ বাড়ানোর আহ্বান আব্দুল মোমেনের
জুলি দাস
করিমগঞ্জ, ৫ ডিসেম্বর : বাংলাদেশের সঙ্গে ব্যবসা এবং বিনিয়োগ বাড়ানোর উপর গুরুত্ব দিয়েছেন বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন।
শিলচর-সিলেট উৎসবে যোগ দিয়ে বাংলাদেশে ফেরার পথে করিমগঞ্জের আমদানি- রফতানিকারকদের পক্ষ থেকে আয়োজিত এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে ব্যবসা এবং বিনিয়োগ আরো বাড়ানোর জন্য ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
অন্যদিকে, করিমগঞ্জের তিনটি আমদানি এবং রফতানিকারক সংস্থার সঙ্গে সভা সেরে সোমবার বাংলাদেশের ফিরে গেছেন সে দেশের ব্যবসায়ীরা।
বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী আব্দুল মোমেন বলেছেন, করিমগঞ্জ তার অনেক পরিচিত জায়গা। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পূর্বে এখানে পেশাগত সূত্রে কাজ করেছেন পরিবারের সদস্যরা।
ফলে এখানের প্রতি এক বাড়তি আবেগ, অনুভূতি রয়েছে।
ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্য থেকে অনেক সামগ্রী বাংলাদেশে যায়। তিনি বলেছেন, এতদঞ্চলের সঙ্গে সিলেটের বাস পরিষেবা চালু করার অনেক তাগিদা রয়েছে।
সেটা চালু করা গেলে বিভিন্ন দিক দিয়ে লাভবান হওয়া সম্ভব। যাতায়াতও সহজলভ্য হবে। স্থানীয় পর্যায়ে উৎপাদিত সামগ্রীগুলো বিদেশে যাতে বাজারজাত হয়, সেই বিষয়ে গুরুত্ব দিয়েছেন তিনি।
সুতারকান্দি বন্দর দিয়ে বাংলাদেশে কয়লা রফতানি ইদানিং বন্ধ রয়েছে। কিন্তু অসমের ধুবড়ি বন্দর দিয়ে কয়লা রফতানি হচ্ছে।
বিষয়টি তাঁর দৃষ্টিগোচর হওয়ার পর বিদেশমন্ত্রী বলেছেন, বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর সব কয়লা ভারত, বিশেষ করে এতদঞ্চল থেকে গেছে। মধ্যে অন্য দেশ থেকে কয়লা গেছে বাংলাদেশে।
সুতারকান্দি বন্দর দিয়ে ঠিক কী কারণে কয়লা বাংলাদেশ রফতানি করা হচ্ছে না, সেই বিষয়টি তার কাছে স্পষ্ট নয়। এ নিয়ে আলোচনা করবেন। প্রসঙ্গক্রমে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কর্মতৎপরতার প্রশংসা করেছেন সাংবাদিকদের সঙ্গে পৃথক আলোচনায়।

বাংলাদেশে রফতানি করতে গিয়ে বিভিন্ন সমস্যার কথা সেখানকার বিদেশমন্ত্রীর সামনে তুলে ধরেন করিমগঞ্জ জেলা আমদানি এবং রফতানিকারক সংস্থার সভাপতি আবুসালেহ ফখরুদ্দিন।
তিনি বলেছেন, কয়লা নিয়ে বিভিন্ন সমস্যায় রয়েছেন রফতানিকারকরা। এনজিটির রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে ৩২ টন কয়লা পড়ে রয়েছে। নিলাম হচ্ছে না।
দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে বেশি দামে কয়লা ক্রয় করছে বাংলাদেশ। সুতারকান্দি বন্দর দিয়ে কয়লা গেলে অনেক কম দামে মিলবে। সহজ পদ্ধতিতে যাতে কয়লা সুতারকান্দি বন্দর দিয়ে পাঠানো যায় সে নিয়ে দিল্লির সঙ্গে আলোচনা করার জন্য বিদেশমন্ত্রীর কাছে আর্জি জানান তিনি।
বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের যে সুসম্পর্ক রয়েছে সেই হিসাবে এই সমস্যা সহজভাবে সমাধান হওয়া সম্ভব। শেখ হাসিনার অনুরোধে বাংলাদেশে বাঁশ রফতানি হয়েছে নরেন্দ্র মোদির সিদ্ধান্তে। তিনি আরো বলেছেন, বাংলাদেশকে বিদেশি রাষ্ট্র বলে ভাবেন না এখানকার জনগণ। নিজের এলাকা বলেই ভাবা হয়।
এদিনের অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন গুয়াহাটিস্থিত বাংলাদেশের সহকারি হাইকমিশনার ড. শাহ তানবির মনসুর, সিলেট কয়লা আমদানিকারক গ্রুপের সভাপতি চন্দন সাহা, সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আতিক হোসেন প্রমুখ।
অতিথিদের হাতে ফুলের তোড়া এবং উপহার সামগ্রী তুলে দেন করিমগঞ্জ জেলা লাইমস্টোন এসোসিয়েশনের সভাপতি শিবাজী চৌধুরী, করিমগঞ্জ জেলা আমদানিকারক এবং রফতানিকারক সংস্থার সম্পাদক অজয়কুমার দেব, উত্তম দাস, আমিরুল ইসলাম সহ অন্যান্যরা।
বিদেশমন্ত্রীর স্ত্রী সেলিনা মোমেনও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। সেলিনা এখানকার জনগণের আতিথেয়তার প্রশংসা করেছেন এই প্রতিবেদকের সঙ্গে আলোচনায়। বিদেশমন্ত্রী বাংলাদেশের উদ্দেশ্যে রওনা হওয়ার পর দুই দেশের আমদানি এবং রফতানিকারকদের মধ্যে এক সভা অনুষ্ঠিত হয় শহরের একটি হোটেলে।