গুয়াহাটি, ৫ ডিসেম্বর : হিন্দু সম্প্রদায়কে নিয়ে এআইইউডিএফ প্রধান বদরুদ্দিন আজমল বিতর্কিত মন্তব্য করে দেশ জোড়ে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছেন। মুসলিম ধর্মাবলম্বীরা ঘৃণা এবং নিন্দা করছে।
বিগত বিধানসভা নির্বাচনের জোট সঙ্গি কংগ্রেসও আজমলের এই মন্তব্যের জন্য নিন্দা করছে, এমন কি আগামী লোকসভা নির্বাচনে আজমলের দল এআইইউডিএফ-এর সঙ্গে আতাতে না যাওয়ার ঘোষণা করেছে।
কারণ গত বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের জোট সঙ্গি এআইইউডিএফ প্রধান আজমলের দিসপুরে তকি লুঙ্গির সরকার গঠনের ডাক দিয়ে আখেরে বিজেপির লাভ করে দিয়েছিলেন।
সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দুরা বিজেপিকে ভোট দিয়ে একক সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করে সরকারে এনেছেন এবং আজমলের দল সংখ্যালঘু ভোটে ভাগ বসিয়েছিলেন। ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে কংগ্রেসকে।
এবারও এআইইউডিএফ প্রধান আজমলের হিন্দু পুরুষ–মহিলাদেরকে নিয়ে এহেন অরুচিকর মন্তব্যে হিন্দুদের মধ্যে ব্যাপক প্রভাব পড়েছে, ইতিমধ্যে তাঁর উপর বেশ কয়েকটি মামলাও হয়েছে।
সবদিক থেকেই দাবী উঠছে ধুবরির সাংসদ আজমলকে গ্রেফতার করার। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মার কাছেও চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে।
অবশেষে আজ মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা মুখ খুলেছেন, তিনি এআইইউডিএফ প্রধান ধুবরির সাংসদ বদরুদ্দিন আজমলকে তীব্র আক্রমণ করেন।
মুখ্যমন্ত্রী সোমবার এআইইউডিএফ প্রধান বদরুদ্দিন আজমলকে আক্রমণ করে বলেন, মহিলাদের এবং মায়ের গর্ভ কোন ক্ষেত জমি নয়।
তিনি মুসলিম মহিলাদেরকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আজমলের মতো লোকেদের জঘন্য বিবৃতির জন্য বিভ্রান্ত না হওয়ার পরামর্শ দিয়ে তাদের সন্তানদের ভাল শিক্ষা দেওয়ার তাদের তাদের পরিবারকে দুটি শন্তানের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে অনুরোধ করেন।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমার আপনার ভোটের দরকার নেই, তবে আজমলের কথা শুনবেন না। আপনারা দুটি সন্তান নিয়ে তাদের শীর্ষ খেলোয়াড়, ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে গড়ে তুলুন।
শুক্রবার একটি মিডিয়া আউটলেটের সাথে একটি সাক্ষাত্কারে, এআইইউডিএফ প্রধান সরমা, মহিলা এবং হিন্দু পুরুষদের সম্পর্কে মন্তব্য করেছেন, অভিযোগ করা হয়েছে “লাভ জিহাদ” সম্পর্কে মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায়।
মাওলানা হিসাবে বিবেচিত বদরুদ্দিন আজমল মুসলিমদের মতো আরও সন্তানের জন্ম দেওয়ার জন্য হিন্দুদের অল্পবয়সে বিয়ে করার পরামর্শ দিয়েছিলেন।
পরের দিন আজমল ক্ষমা চেয়ে বলেছিলেন, যে মন্তব্যের সমালোচনা করা হচ্ছে এবং পুলিশে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে সেই বিতর্কিত মন্তব্যের জন্য তিনি লজ্জিত।
তিনি স্বীকার করেছেন যে তার মন্তব্য বিকৃত ছিল তবে তিনি কোন সম্প্রদায়কে লক্ষ্য করে বলেন নি।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আজমলের মতো লোকেরা ভেবেছিল যে শিক্ষা, উন্নয়ন নিম্ন আসাম পর্যন্ত বঙ্গাইগাঁও এবং ধুবরির মতো এলাকায় পৌঁছবে না এবং এই জায়গাগুলির মহিলাদের বোঝানোর চেষ্টা করা হয়েছিল যে তারা সন্তান জন্মদানের কারখানা।
শর্মা বলেন, আজমল বলেছিলেন উর্বর জমিতে বীজ বপন করতে হবে, আমি তাকে জিজ্ঞাসা করি আমাদের মায়ের গর্ভভূমি কি কৃষিজমি? এআইইউডিএফ প্রধানের উপর তার আক্রমণ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আজমলের আমাদের মহিলাদের বলার অধিকার নেই যে তাদের কতগুলি সন্তান থাকা উচিত।