মোস্তাফা এ মজুমদার, হাইলাকান্দি, ১৪ ডিসেম্বর : প্রজ্ঞান ভারতী প্রকল্পের অধীনে ২০২২ বর্ষের উচ্চতর মাধ্যমিক পরীক্ষায় ৭৫ শতাংশের অধিক নম্বরপ্রাপ্ত এবং প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ ছাত্রীদেরকে মঙ্গলবার হাইলাকান্দি এস এস কলেজ মাঠে আনুষ্ঠানিকভাবে স্কুটি বিতরণ করা হয়েছে।
মূখ্য অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়ে জেলার সর্বোচ্চ নম্বরপ্রাপ্ত পাঁচজন ছাত্র ছাত্রীর হাতে স্কুটি তুলে দেন রাজ্যের পরিবহন, আবগারি ও মীন বিভাগের মন্ত্রী পরিমল শুক্লবৈদ্য।
মন্ত্রী পরিমল ছাত্র ছাত্রীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা প্রথমে হেলমেট এরপর স্কুটির চাবি হাতে নিবেন, হেলমেট বিহীন স্কুটি চালাবেন না। ছাত্র-ছাত্রীদের জ্ঞান অন্বেষণের যাত্রা সুগম করে তোলার জন্য সরকারের এই প্রয়াস।
তিনি বলেন মেধাবী ব্যক্তির নামে মেধা পুরস্কার দিচ্ছেন আরেক মেধাবী ব্যক্তি ড০ হিমন্ত বিশ্বশর্মা।
ড০ বানিকান্ত কাকতির সংক্ষিপ্ত জীবনী বর্ণনা করে বলেন, ড০ কাকতি অখণ্ড অসমের বরপেটা জেলার এক সাধারণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করে সমগ্র দেশজুড়ে মেধার বিকাশ ছড়িয়ে দিয়েছিলেন।
আজ ওই মেধাবী ব্যক্তির নামে মেধা সম্পন্ন ছাত্র ছাত্রীদেরকে অসম সরকার পুরস্কৃত করছে।
জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে মেধার প্রয়োজন।
তিনি ছাত্র-ছাত্রীদেরকে প্রতিযোগিতার মানসিকতা নিয়ে সাফল্যের যাত্রা অব্যাহত রাখতে গুরুত্ব আরোপ করে বলেন, ভাল কৃষক হতে হলেও মেধার প্রয়োজন। মেধাবী কৃষক হলে রাষ্ট্রপতি পুরস্কার দেওয়া হয়।
তাছাড়াও মন্ত্রী পরিমল শিক্ষার্থীদের সাফল্যের যাত্রা চালিয়ে যেতে গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন টিপস দেন করেন।
এদিনের অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদেরকে মেধার বিকাশ ঘটিয়ে হাইলাকান্দির সুনাম রাজ্য ব্যাপী ছড়িয়ে দিতে আহ্বান জানান তিনি।
এদিকে সাফল্য অর্জন করে যারা ডাক্তার বাণীকান্ত অ্যাওয়ার্ড বঞ্চিত রয়েছেন তারা মনোযোগ সহকারে অধ্যয়ন করে ভবিষ্যতে গৌরব উজ্জ্বল অধ্যায় রচনা করতে আহ্বান জানান মন্ত্রী পরিমল।
এদিন বক্তব্য রাখেন অনুষ্ঠানের সভাপতি তথা হাইলাকান্দি জেলাশাসক নিসর্গ হিভরে গৌতম।
তিনি ও ছাত্র ছাত্রীদেরকে অধ্যয়নে মনোনিবেশ করে উচ্ছাকাঙ্খী জেলায় বানীকান্ত কাকতি এওয়ার্ডের সংখ্যা বাড়িয়ে দিতে শিক্ষার্থীদের উৎসাহিত করে বক্তব্য রাখেন।
বিশিষ্টদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন হাইলাকান্দি এসএস কলেজের অধ্যক্ষ অমলেন্দু ভট্রাচার্য্য, জেলার দুই বিধায়ক জাকির হোসেন লস্কর এবং সুজাম উদ্দিন লস্কর।
তারা বলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ড০ হিমন্ত বিশ্ব শর্মার বলিষ্ঠ ভুমিকায় রাজ্যে শিক্ষা, স্বাস্থ্য সহ অন্যান্য বিভাগে উন্নয়নের জোয়ার বইছে। যাহা অতীতে হয়নি।
স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, মেডিকেল কলেজ স্থাপন করে অভাবনীয় উন্নতি করতে সক্ষম হয়েছেন।
উপস্থিত ছিলেন বিজেপি হাইলাকান্দি জেলা সভাপতি স্বপন ভট্টাচার্য।
এবার জেলার বিভিন্ন স্কুল কলেজের ৪০২ জন মেধাবী ছাত্র ছাত্রীকে অসম সরকারের পক্ষ থেকে স্কুটি প্রদান করা হয়েছে। তবে বিভাগীয় রেজিষ্ট্রেশন সহ অন্যান্য কাজ সম্পন্ন না হওয়ায় তাহা বিতরণ করা হয়নি।
কিন্তু খুব শীঘ্রই স্কুটি বিতরণ করা হবে বলে জানান বিভাগীয়রা। অনুষ্ঠান শেষে প্রতিক্রিয়া দেন এম এ জুনিয়র কলেজের এম ডি নসির আহমদ লস্কর।
তিনি বলেন, এবারের হাইলাকান্দি জেলার মধ্যে ড০ বানিকান্ত কাকতি মেধা তালিকায় জেলার মধ্যে প্রথম স্থান দখল করেছে লালা এম এ সিনিয়র সেকেন্ডরী স্কুল (এম এ জুনিয়র কলেজ)।
অনেক বেশী স্কুটি লাভ করতে সক্ষম হয়েছে জেলার অন্যতম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান লালা এম এ সিনিয়র সেকেন্ডরী স্কুল (এম এ জুনিয়র কলেজ)।
প্রায় চল্লিশের অধিক সংখ্যক মেধা পুরস্কার হিসেবে স্কুটি লাভ করেছে লালা এম এ সিনিয়র সেকেন্ডরী স্কুল।
জেলার টপার পাঁচ জন ছাত্র ছাত্রীদের মধ্যে রয়েছে লালা এম এ সিনিয়র সেকেন্ডরী স্কুলের এইচ রনিতি সিনহা নামের এক ছাত্রী।
এইচ রনিতা সিনহা উচ্চতর মাধ্যমিক দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষার ফিজিক্সে একশোর মধ্যে নিরানব্বই মার্ক পেয়ে সুনাম অর্জন করেছে। ভবিষ্যতে আরও বেশী বেশী করে এভাবেই ছাত্র ছাত্রীদেরকে উচ্চ স্থানে নিয়ে যেতে সকলের আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করেন এমএ সিনিয়র সেকেন্ডরী স্কুলের এম ডি নসির আহমদ লস্কর।