শিলচর, ২০ সেপ্টেম্বর, মঙ্গলবার : যৌতুকের দাবিতে স্বামীর বাড়িতে শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়ে রাসমিন বেগম মাজারভূইয়া নামের এক গৃহবধূ শশুর সহ তিন জনকে অভিযুক্ত করে শিলচর সদর থানায় মামলা দায়ের করলেন।
ঘটনাটি কাছাড় জেলার তারাপুর ৬ষ্ট খন্ডে রামনগরের।
মামলার বিবরণে জানা গেছে ৮-৪-১১ ইংরেজি তারিখে কাছাড় জেলার তারাপুর ৬ ষ্ট খন্ড রামনগরের বাসিন্দা সাবুল হোসেন মাঝারভূইয়ার পুত্র সামিম আহমেদ মাঝারভূইয়ার সঙ্গে ইসলামী রীতি অনুযায়ী শিলচর ঘনিয়ালার বড়বাড়ির মৃত রহিম উদ্দিন লস্করের কন্যা রাসসমিন বেগমের সামাজিক ভাবে বিবাহ সম্পন্ন হয়।
বিয়ের পর থেকেই শাশুড়ি সহ পরিবারের সদস্যরা যৌতুকের জন্য প্রায়ই গৃহবধূ রাসমিন বেগমের উপর চাপ দেন, এমন কি বিভিন্ন সময় স্বামী সামিম আহমেদ ড্রাগস খেয়ে ঘরে এসে বেদড়ক মারপিট সহ বিভিন্ন ধরনের নির্যাতন করে।
রাসমিন এজাহারে লিখেছেন, তাদের সাংসারিক জীবনে ঔরসজাত দুটি সন্তানও রয়েছে, এই সন্তানদের সামনে স্বামি এবং বাড়ির লোকেরা দিনের পর দিন তার উপর অত্যাচারের মাত্রা বাড়িয়ে আসছে।
কোন কোন সময় বেধড়ক মারধর ও নির্যাতনের শিকার হয়েও সন্তানদেরকে নিয়ে অনাহার অর্ধাহারে দিন কাটাতে হয়েছে।
এমতাবস্থায়ও সামিম ড্রাগস সেবন করে মাতাল হয়ে থাকেন। বিগত কয়েক মাস থেকে নির্যাতিত মহিলার স্বামী সামিম আহমেদ মাঝারভূইয়াকে নেশামুক্তি কেন্দ্রে দিন কাটাতে হচ্ছে।
এরই সুযোগে স্বামীর অনুপস্থিতিতে দেবর রাসমিনের ঘরে ঢুকে কুপ্রস্তাব দিলে রাজি না হওয়ায় তাকে বলপ্রয়োগ করে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করার চেষ্টা চালায়।
কিন্তু তাতেও সফল না হতে পেরে বড় ভাইর বিবাহিত স্ত্রী রাসমিনের উপর কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে প্রাণে মারার চেষ্টা করে।
নির্যাতিত ওই মহিলা রাসমিন জানান, গত ১২-০৯-২২ ইংরেজি তারিখে সকাল অনুমানিক সাড়ে দশটার সময় স্বামীর অনুপস্থিতে ছোট ভাই রাসমিনের ঘরে অনাধিকার প্রবেশ করে ইচ্ছার বিরুদ্ধে রুমের দরজা বন্ধ করে শরীরের কাপড় খুলে দস্তাদস্তি করে।
তখন হাল্লা চিৎকার করলে সে রুম থেকে বাহির হয়ে যায় এবং কিছু সময় পর অন্যান্য আসামিরা রাসমিনের ঘরে ঢুকে হাত পা বেধে বাসের টুকরো ঝাড়ু দিয়ে মারপিট করে।
এ ঘটনার খবর পেয়ে মহিলার মাতা সপ্না বেগম ও কাকী ফাতিমা বেগম রাসমিনের বাড়ী গেলে স্বামীর বাড়ির লোকেরা তাদেরকেও অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ এবং ঠেলাধাক্কা করে তাড়িয়ে দেন।
নির্যাতিতা মহিলার কাপড় চোপড় ও অলঙ্কারাদি কেড়ে রেখে তাদের সঙ্গে এক বস্ত্রে কন্যা সন্তানকে সঙ্গে দিয়ে তাড়িয়ে দেন।
স্বামীর ছোট ভাইর এহেন কার্যকলাপে নির্যাতিত মহিলার শালীনতা বিনষ্ট হওয়ায় শারীরিক ও মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছেন। রাসমিন শিলচর সদর থানায় তিনজনকে অভিযুক্ত করে 498A/307/354B/34 IPC নম্বরে শিলচর সদর পুলিশে মামলা নতিভুক্ত করেন।