ধলাই, কাছাড়, ২০ সেপ্টেম্বর : ভুবনডহর থেকে ধলাই আসতে অটো ভাড়া দিতে হয় ৩০ টাকা। যাতায়াতে গুনতে হয় ৬০ টাকা। অথচ দূরত্ব মাত্র ৫ কিলোমিটার। এটুকু জায়গা যাতায়াতে ভাড়া ৬০ টাকা!
দারিদ্র সীমার নিচে বসবাসকারী বাগান শ্রমিকদের কাছে যা পাহাড়সম।
ব্যবস্থা চেয়ে ধলাই থানার ভারপ্রাপ্ত অফিসার ইনচার্জ মনোজ বরুয়ার কাছে ১৭৭ জনের স্বাক্ষর সম্বলিত একটি নালিশ পত্র গত এক সপ্তাহ আগে জমা দিয়েছিলেন বাগান শ্রমিকরা।
কিন্তু সপ্তাহ গত হলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। নালিশ পত্র গ্রহণের সময়ে অফিসার ইনচার্জ শ্রমিকদেরকে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিলেও এখনও পর্যন্ত সেই একই ভাড়া নিচ্ছে অটো চালকরা।
মঙ্গলবার আবারও সংবাদমাধ্যমকে ডেকে বাগান শ্রমিকরা জানায় করোণা মহামারীর সময়ে কোভিড প্রটোকলের জন্য সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে যানবাহনে যাত্রী সংখ্যা কমিয়ে দেওয়া হয়েছিল।
দুইজন তিনজন যাত্রী নিয়ে চলাচল করতে গিয়ে ভাড়া বাড়িয়ে জনপ্রতি ৩০ টাকা করেছিলেন অটো চালকরা।
সে সময় সড়কের নির্মাণ কাজ চলছিল, সড়কের অবস্থাও ভাল ছিলনা এ অবস্থা বিবেচনায় বাগান শ্রমিকরা ৫ কিলোমিটারে ৩০ টাকা ভাড়া দিয়েছিল।
কিন্তু বর্তমানে কোন প্রটোকল নেই, রাস্তার অবস্থা ও ভালো এসময় এক একটি ডিজেল অটো গাড়িতে প্যাসেঞ্জার নেওয়া হয় ১০ জন করে।
অথচ ভাড়া সেই কোভিডের সময়ের।
বাগান শ্রমিকরা বলেন অতিরিক্ত ভাড়ার বিষয়ে অটোচালকদের সঙ্গে কথা বলতে গেলে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির দোহাই দিয়ে সাধারণ যাত্রীদের সাথে ঝগড়ায় জড়িয়ে পড়ছেন।
যাত্রীভাড়া অতিরিক্তের কারণে অনেক স্কুলপড়ুয়া পড়াশোনা ছেড়ে দিয়েছে, অনেকে এযুগেও শুধু গাড়ি ভাড়ার অসুবিধার কারণে ৫ কিলোমিটার পথ পায়ে হেঁটে যাতায়াত করেন।
শ্রমিকরা আশা করেছিলেন বিষয়টি যেহেতু ধলাই থানার ভারপ্রাপ্ত অফিসার ইনচার্জের নজরে নিয়ে এসেছেন এবার প্রশাসনের সহযোগিতায় যাত্রী ভাড়া নির্ধারণ করে দেওয়া হবে।
কিন্তু পুলিশের তরফ থেকে গত এক সপ্তাহে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় শ্রমিকরা ক্ষোভ ব্যক্ত করেন।
তারা অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা অটোচালকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ, ভাড়া নির্ধারণ ও স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের যাতায়াতের সুবিধার্থে ভূবনডহর বাগান থেকে অন্তত দুইটি যাত্রীবাহী বাস চালানোর দাবি জানিয়ে জেলা পরিবহন আধিকারিক ও কাছাড়ের জিলা উপায়ুক্তের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। শতাধিক বাগান শ্রমিকদের উপস্থিতিতে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন বাগান পঞ্চায়েত জন্মজয় রি, বাগান সম্পাদক সঞ্জু মাল, বাগান শ্রমিক দুলন চাষা, ব্রজ তন্তবাইরা।