এব্যাপারে ডাঃ কাঞ্চন কৌর কি বলছেন?
একটি শিশুর জন্য বুকের দুধ খাওয়ানো কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা নিয়ে অনেক কথা আছে। মায়ের দুধ শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করে।
কিন্তু বুকের দুধ খাওয়ালে শুধু শিশুই নয়, মায়েরও উপকার হয়। এমনই একটি উপকারিতার কথা বলেছেন ডাঃ কাঞ্চন কৌর।
মেঘনা নামের এক মহিলার প্রশ্ন, অনেকের কাছ থেকে শুনেছেন যে বুকের দুধ খাওয়ালে স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে যায়।
সে জানতে চায় এটা কি সত্যি সত্যি? যদি হ্যাঁ, তবে তার কারণ কী? এসব প্রশ্নের উত্তরে বিস্তারিত বর্ণনা করেছেন ডাঃ কাঞ্চন কৌর।
কি বলেছেন ডাঃ কাঞ্চন কৌর? জেনে নেওয়া যাক।
প্রশ্নঃ স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি কি কমে যায়?
ডাঃ কাঞ্চন কৌর, ব্রেস্ট সার্জন, সিনিয়র ডিরেক্টর, মেদান্ত, গুরুগ্রাম বলেছেন, যে কোনো নারীর জন্য বুকের দুধ খাওয়ানো খুবই স্বাভাবিক ব্যাপার। শিশুকে মায়ের দুধ খাওয়ানো খুবই জরুরি।
কারন এটা শুধু সন্তানের জন্যই নয়, মায়ের জন্যও উপকারী। তাই শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানোর জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করুন।
বুকের দুধ খাওয়ানো শুধুমাত্র গর্ভাবস্থায় বেড়ে যাওয়া ওজন কমায় না, বরং ক্যান্সারের ঝুঁকিও কমায়।
যে মহিলারা প্রায় এক বছর শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ান তাদের ক্ষেত্রে প্রথম ৬ মাস শুধুমাত্র বুকের দুধ দিন, টিনজাত দুধ দেবেন না।
শিশুকে এক বছর খাওয়ালে শরীরে উপস্থিত ইস্ট্রোজেন হরমোনের প্রভাব কিছু সময়ের জন্য বন্ধ হয়ে যায়।
এটি বন্ধ করা ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকিও কমায়। একে বলা হয় লাইফটাইম এক্সপোজার টু ইস্ট্রোজেন। এ সময় ডিম্বাশয়ে ডিম উৎপন্ন হয় না।
হরমোনের মাত্রা কম থাকায় স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে। স্তনের অভ্যন্তরে কিছু ক্ষতিকারক কোষ থাকে যা এগিয়ে গিয়ে ক্যান্সারে পরিণত হতে পারে।
বুকের দুধ খাওয়ানোর সময় স্তনে এমন কিছু রাসায়নিক পদার্থ তৈরি হয়, যার কারণে এই ক্যান্সার তৈরিকারী কোষগুলি ধ্বংস হয়ে যায়।
যে মহিলারা বুকের দুধ খাওয়ান না তাদের স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি ৪ থেকে ১০ গুণ বেশি। এজন্য শিশুকে ১-২ বছর পর্যন্ত দুধ খাওয়াতে হবে।
এটি আপনার এবং আপনার শিশুর জন্যও উপকারী।
কি কি লক্ষণের জন্য সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত? স্তন ক্যান্সারের সবচেয়ে সাধারণ লক্ষণ হল পিণ্ড। স্তনে পিণ্ড তৈরি হয়।
মানুষ মনে করে পিণ্ডে ব্যথা হলেই ক্যানসার হতে পারে। কিন্তু এটা সেরকম নয়, ব্যথাহীন পিণ্ড স্তন ক্যান্সারের সবচেয়ে সাধারণ লক্ষণ।
স্তনবৃন্ত থেকে রক্ত বা পানি বের হওয়া স্তনের ত্বকে বা স্তনবৃন্তে যে কোনো ঘা যা ১-২ সপ্তাহের জন্য স্বাভাবিক চিকিৎসায় নিরাময় হয় না বা বগলে পিণ্ড।
আপনি যদি এই ধরনের কোনো উপসর্গ অনুভব করেন, তাহলে ডাক্তারের কাছে পরীক্ষা করুন।
আপনি শুনেছেন কিভাবে বুকের দুধ খাওয়ানো স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়। কিন্তু এটা ভাবা যাবে না যে আপনি যদি বুকের দুধ পান করেন তাহলে জীবনে কখনো স্তন ক্যান্সার হতে পারে না।
হ্যাঁ, ঝুঁকি অবশ্যই হ্রাস পায় কিন্তু সম্পূর্ণরূপে নির্মূল হয় না। সেজন্য চিকিৎসকের দেওয়া উপসর্গগুলো মনে রাখবেন। আপনি যদি কখনও এই জাতীয় লক্ষণগুলি অনুভব করেন তবে সময়মতো ডাক্তারের সাথে পরীক্ষা করান।