হাইলাকান্দিতে এএইসিএ-এর বিক্ষোভ, মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে স্মারকপত্র প্রেরন
হাইলাকান্দি প্রতিনিধি, ১০ মার্চ : বিদ্যুতের প্ৰিপেইড স্মাৰ্ট মিটার প্রতিস্থাপনের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবিতে শুক্রবার সারা রাজ্যের সাথে হাইলাকান্দি শহরে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছে অল আসাম ইলেকট্রিসিটি কনজিউমার্স এসোসিয়েশন।
সংগঠনের পক্ষ থেকে আজ জেলাশাসক কার্যালয়ের সামনে উপস্থিত হয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে জেলাশাসকের মাধ্যমে স্মারকপত্ৰ প্রদান করেন এসোসিয়েশনের কর্মকর্তারা।
বিক্ষোভ শেষে সংগঠনের জেলা সম্পাদক সুশীল পাল বলেন, আসাম সরকারের শক্তি মন্ত্রক রাজ্যের বিদ্যুৎ গ্ৰাহকদের ব্যবহৃত ডিজিটেল মিটার সরিয়ে প্ৰিপেইড স্মাৰ্ট মিটার প্রতিস্থাপন কর।
গত ১২ জানুয়ারি আসাম সরকার কেবিনেট বৈঠকে রাজ্যে ৪৪ লাখ প্ৰিপেইড স্মাৰ্ট মিটার প্রতিস্থাপনের জন্য ৪৩৬২ কোটি টাকার অনুমোদন দেয়।
অথচ বৰ্তমানে ব্যবহৃত ডিজিটেল মিটার সুক্ষ্মভাবে বিদ্যুতের পরিমাপ করতে সক্ষম হওয়া সত্ত্বেও লক্ষ লক্ষ মিটারকে ডাষ্টবিনে ফেলে নতুনকরে প্ৰিপেইড মিটার স্থাপন কেন করা হচ্ছে? কার স্বাৰ্থে করা হচ্ছে? প্রশ্ন তুলেন।
তিনি বলেন, রাজ্য সরকার ঋণের কারনে বহু প্রকল্প ঘোষণা করেও শুরু করেনি বা অৰ্ধসমাপ্ত রেখেছে, অথচ কোষাগার থেকে বিশাল অংকের অর্থ খরচ করে প্ৰিপেইড মিটার স্থাপনের সিদ্ধান্ত চরম জনবিরোধী।
জনবিরোধী পদক্ষেপ এবং প্ৰিপেইড মিটার সাধারণ গ্ৰাহকদের স্বাৰ্থ ক্ষুন্ন করবে ও প্ৰিপেইড মিটার প্ৰস্তুতকারী কোম্পানিগুলোকে লাভবান করবে তিনি মন্তব্য করেন।
স্মারকপত্রে উল্লেখ করা হয় যে বিদ্যুৎ একটি অপরিহাৰ্য ও অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবা, বিদ্যুৎ ছাড়া আধুনিক সভ্যতা এক মূহুৰ্তও চলে না।
কিন্তু সরকার অপরিহাৰ্য এই পরিষেবাকে ক্ৰমান্বয়ে লাভজনক পণ্যে রূপান্তরিত করছে। প্ৰিপেইড মিটারের অর্থই হচ্ছে গ্ৰাহকদের বিদ্যুৎ ব্যবহারের পূর্বে টাকা জমা দিতে হবে।
অৰ্থাৎ মিটার রিচাৰ্জ করলে বিদ্যুৎ সংযোগ পাওয়া যাবে। লক্ষ লক্ষ গ্ৰাহক থেকে অগ্ৰিম টাকা সংগ্রহ করে কোম্পানির মতো সরকার ব্যবসা করবে যা সম্পূৰ্ণ অনৈতিক।
এই ব্যবস্থা দরিদ্র ও নিম্নমধ্যবিত্ত মানুষকে বিপদে ফেলবে।
অন্যদিকে এই ব্যবস্থায় একজন গ্ৰাহক কত ইউনিট বিদ্যুৎ খরচ করে কত টাকা বিল দিচ্ছে তারও কোনো হিসাব জানতে পারবে না। ফলে বন্টন কোম্পানির গ্ৰাহকদের লুন্ঠনের পথ প্ৰশস্ত হবে।
স্মারকপত্রে এও উল্লেখ করা হয় যে কোনো গ্ৰাহক সময়মতো রিচাৰ্জ না করলে তার সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে এবং পুনরায় রিচাৰ্জ করতে হলে পুনঃসংযোগ স্থাপনের জন্য রিচাৰ্জ থেকে টাকা কেটে নেওয়া হবে।
কখনও মিটার খারাপ হলে তা মেরামতি বা নতুনকরে মিটার স্থাপনের পূর্ব পর্যন্ত বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকবে।
প্ৰিপেইড মিটারের যেহেতু মিটার রিডার ও বিলিং ষ্টাফের প্ৰয়োজন থাকবেনা তাই হাজার হাজার কর্মচারীর চাকুরি হারানোর আশংকাও রয়েছে।
সংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হয় যে প্ৰিপেইড মিটার সম্পূৰ্ণরূপে গ্ৰাহক স্বাৰ্থবিরোধী। তাই প্ৰিপেইড মিটার স্থাপনের সিদ্ধান্ত অবিলম্বে প্ৰত্যাহার করতে হবে।
স্মারকপত্র প্রদানে উপস্থিত ছিলেন সভাপতি প্রেমাংশু শেখর পাল, রমাকান্ত শুক্লবৈদ্য, কল্লোল চৌধুরী, মাধবী শর্মা, রঞ্জিত ঘোষ, আফজাল হোসেন মজুমদার, আলতাফ হোসেন মজুমদার, আসাদুল হক বর্ভূঞা, উপসভাপতি খলিল উদ্দিন আহমেদ মজুমদার প্রমুখ।