গণ আওয়াজ, শিলচর, ৩০ এপ্রিল : দুর্নীতি দমন করার আসামের মূখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মার হুংকারকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে রাজ্যে যে দুর্নীতির মহড়া চলছে তার আঁচড়ে বরাক উপত্যকার জনজীবন নাজেহাল হয়ে পড়েছে।
ক্ষোভ ঘনীভূত হয়েছে সাধারণ মানুষের মনে।
গ্রামোন্নয়ন থেকে শুরু করে প্রশাসনিক স্তরে, এমনকি পুলিশ কর্মীদের দুর্নীতির ফলে সাধারণ মানুষের পিঠ দেয়ালে ঠেকেছে।
উপত্যকার জনপ্রতিনিধিরাও নির্বাচনী পূর্ব প্রতিশ্রুতি এবং সাংবিধানিক দায়িত্বের তোয়াক্কা না করে আখের গোছাতে ব্যস্ত।
অকর্মণ্য, নিষ্কর্মা, স্বার্থপর সাংসদ-বিধায়কদের জন্যই সাধারণ মানুষের আজ এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে অভিযোগ উঠছে।
মানুষের সবচেয়ে ভরসাস্থল পুলিশ বিভাগ, কোন প্রকার সমস্যার সম্মুখীন হলে সাধারণ মানুষ পুলিশের দ্বারস্থ হয়, এমনকি বিচার ব্যবস্থাও পুলিশ রিপোর্টের উপর নির্ভরশীল।
এরজন্য তাদেরকে মোটা অংকের মাইনে দেওয়া হয়। কিন্তু এই পুলিশও আজ দুর্নীতির স্বর্গরাজ্যে।
উৎকোচের বিনিময়য়ে দুষিদের ছাড় দিতে সঠিক কোন তদন্ত না করে ভুল তথ্য দিয়ে বিচার ব্যস্থাকে কলোষিত করে চলেছে। ঊর্ধ্বতন মহলে নালিশ জানানোর পরও কোন কাজ হচ্ছে না।
গণ আওয়াজ-এর কাছে এরকম তথ্য রয়েছে।
শোনে নেওয়া যাক রাতাবাড়ি বিধানসভার আনিপুরের রাজারামপুর গ্রামের আবুরামের বক্তব্য–
।
আবুরামের বয়স এখন ৭৩ বছর, বার্ধক্য জনিত আক্রান্ত। ১৯৯৫ সালে এক মামলায় রাতাবাড়ি পুলিশ তাঁকে মৃত বলে কোর্টে রিপোর্ট পেশ করে।
পুলিশের রিপোর্টে করিমগঞ্জ কোর্ট তাঁর একটি মামলা ক্লোজ করে দেয়। কিন্তু নাছুড়বান্দা আবুরাম নিজেকে জীবিত না মৃত প্রমান করতে আইনি লাড়াই করে চলেন।
দীর্ঘ বছর লাড়াই করে ব্যর্থ হয়ে বার্ধক্য জনিত কারনে হার মেনে নেন এবং নিজেকে আজব দুনিয়ার মানুষ মনে করেন।
এরকম একটি প্রতারণা মামলা ধামাচাপা দেওয়ার প্রচেষ্টার অভিযোগ রয়েছে শিলচর তারাপুর পুলিশ ফাঁড়ির বিরদ্ধে।
অভিযোগকারী নিজে এক অভিযুক্তকে কাটিগড়া পুলিশের হাতে সমঝে দিয়ে শিলচর সদর পুলিশে মামলা দায়ের করেন।
মামলা নম্বর- ১২৬৪/২০২২। তদন্তের দায়িত্বপ্রাপ্ত তারাপুর পুলিশ ফাঁড়ির এসআই মনাফ আলী বিভাগীয় ঊর্ধ্বতন আধিকারিকদের সহযোগে পুরো কেস ধামাচাপা দিয়ে রেখেছেন।
অভিযোগকারীর অভিযোগ যে, এক অভিযুক্তকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়ার পর পুলিশ তার ঘর থেকে দুটি ল্যাপটপ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সামগ্রী উদ্ধার করে।
কিন্তু কোর্টে যে সিডি জমা দেওয়া হয়েছে তাতে এগুলোর কোন উল্লেখ নেই। এছাড়া এফআইআরএ আরও দুই ব্যক্তির নাম থাকলেও তাদের গ্রেফতার না করে জামিনের ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়।
এমন কি অভিযোগকারী কাছাড় ক্লাবে এবং ইলরা হোটেলে আর্থিক লেনদেন করার কথা জানিয়ে সিসি টিভি ফোটেজ সংগ্রহের দাবি জানালেও কোন গুরুত্ব দেননি তদন্তকারী এই পুলিশ কর্মী বলে অভিযোগ।
অভিযোগকারী জানান, তিনি কাছাড় জেলার তদানিন্ত পুলিশ সুপার, বর্তমান পুলিশ সুপার এবং দুই সহকারী পুলিশ সুপারকে লিখিত ভাবে জানানোর পরও এব্যাপারে কোন গুরত্ব দেওয়া হয়নি এবং দীর্ঘ কয়েক মাস কেটে গেলেও চার্জসীটও জমা না দিয়ে হেঙ্গিং অবস্থায় রাখা হয়েছে।
তাই এবার এই অভিযোগকারী আসামের মুখ্যমন্ত্রী এবং পুলিশ প্রধানকে নালিশ জানাতে গুয়াহাটি যাচ্ছেন।
এরপরও যদি কোন কাজ না হয় তবে তিনি মনে করবেন, পুলিশের পোশাকের আড়ালে যারা মাসে লম্বা মাইনে নিচ্ছে তারা আসল ঠকবাজ, মাফিয়া এবং তাদেরকে যারা পরিচালনা করছে তারা এদের সর্দার।
শান্তিশৃঙ্খলা এবং আইন পরিচালনার নামে এরা নিরিহ মানুষের রক্ত নিয়ে খেলা করছে।