মোস্তাফা এ মজুমদার, হাইলাকান্দি : বরাকের বিজেপি নেতাদের দূর্বল নেতৃত্বের জন্যই খিলঞ্জীয়ার স্বার্থ সুরক্ষার নামে উদ্দেশ্য প্রণোদিত ডিলিমিটেশনে বাঙালির অধিকার খর্ব করার কৌশল হিমন্ত বিশ্বশর্মার।
এনআরসি চূড়ান্ত হওয়ার আগেই হঠাৎ করে ডিলিমিটেশন করা এক গভীর ষড়যন্ত্র, হাইলাকান্দি কংগ্রেস ভবনে এক পর্যালোচনা সভায় এভাবেই মন্তব্য করেন বিধায়ক কমলাক্ষ দে পুরকায়স্থ।
বৃহস্পতিবার হাইলাকান্দি কংগ্রেস ভবনে জেলা কংগ্রেস সভাপতি সামসুদ্দিন বড়লস্করের পৌরহিত্যে ডিলিমিটেশন নিয়ে এক পর্যালোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
উক্ত সভায় মূখ্য অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়ে উত্তর করিমগঞ্জের বিধায়ক কমলাক্ষ দে পুরকায়স্থ তাঁর বক্তব্যে সদ্য প্রকাশিত ডিলিমিটেশনের খসড়ার তীব্র বিরোধিতা করেন।
কমলাক্ষ বলেছেন যে বরাক উপত্যকার তিন জেলাকে বিজেপি সরকার সর্বক্ষেত্রে বঞ্চিত করার পর এবার ডিলিমিটেশনের নামে দুটি বিধানসভা সমষ্টি কর্তন করে বরাকবাসীর অধিকার খর্ব করতে চাইছে।
ডিলিমিটেশনের আইন মতে ২০২৬ সালে ডিলিমিটেশন হওয়ার কথা রয়েছে, কিন্তু হঠাৎ তড়িঘড়ি করে এভাবেই ডিলিমিটেশনের মাধ্যমে ধর্মীয় বিভাজন সৃষ্টি করে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের চেষ্টা করছে বিজেপি সরকার।
কমলাক্ষ আরও বলেন, দিন দিন জনসংখ্যার বৃদ্ধি হচ্ছে তাই সমষ্টিও বৃদ্ধি করার কথা, কিন্তু সমষ্টি বৃদ্ধি করার বিপরীতে বরাক উপত্যকা থেকে দুটি সমষ্টি কর্তন করা হয়েছে।
কিন্তু নীরব ভূমিকায় রয়েছেন বরাকের শাসক দলের নেতা বিধায়িকরা, এদেরকে ইতিহাস কখনও ক্ষমা করবে না।
মেরুদণ্ডহীন বিজেপি নেতারা নিজেদের অস্তিত্ব হারিয়ে ফেলেছেন বলে জানান বিধায়ক কমলাক্ষ।
তাছাড়া সংখ্যলঘুদের ভোটে নির্বাচিত এআইইউডিফ দলের বিধায়করা বিজেপি এবং হিমন্ত বিশ্বশর্মার কাছে ভাল থাকার জন্য ঘরে বসে নীরবতা পালন করছেন, এদেরকেও ইতিহাস ক্ষমা করবে না।
তাই কংগ্রেস সহ এগারোটা বিরোধী ঐক্য এই ডিলিমিটেশন প্রত্যাহারের দাবিতে আইনী পদক্ষেপ সহ মাঠে নেমে আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। সবাইকে স্বতস্ফূর্ত ভাবে আন্দোলনে মধ্যে সামিল হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
এদিনের সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জেলা কংগ্রেসের উপসভাপতি মহরম আলী মজুমদার, হিরালাল দত্ত পুরকায়স্থ, গিয়াস উদ্দিন লস্কর, আলীম উদ্দিন বড়ভূইয়া, এপিসিসির সদস্য আনাম উদ্দিন লস্কর, জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক মিতুজ্জামান লস্কর, আইনজীবী রুকন উদ্দিন বড়ভূইয়া,আব্দুল মুবিন লস্কর, মনোজ মোহন দেব,আলতাফ হোসেন বড়ভূইয়া, ব্লক কংগ্রেস সভাপতি শুভংকর ভট্টাচার্য্য, আইনজীবী নুমান মিয়া চৌধুরী,মহিলা কংগ্রেসের সভানেত্রী মাধবী শর্মা প্রমুখ।
উপস্থিত ছিলেন জেলা কংগ্রেসের সম্পাদক আব্বাস উদ্দিন লস্কর, সারিম সদিওল, বাহারুল ইসলাম বড়ভূইয়া, ফরিজ উদ্দিন লস্কর,যুব কংগ্রেসের সভাপতি শহীদুল ইসলাম বড়ভূইয়া, এনএসইউআইর সভাপতি আব্দুল আহাদ বড়ভূইয়া, উপসভাপতি মজমুল ইসলাম লস্কর সহ অন্যান্যরা।
এদিকে এ পর্যালোচনা সভায় কংগ্রেসের সহযোগী রাইজর দলের জেলা সভাপতি জহির উদ্দিন লস্কর বলেন যে বিজেপি ভোট ব্যঙ্ক তৈরী করতে বিশেষ এক সম্প্রদায়কে একত্রিকরণের জন্য এভাবেই সমষ্টির সিমানা নির্ধারণ করতে চাইছে।
বিজেপি-আরএসএসের প্রস্তুত করা ডিলিমিটেশনের তালিকা নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন জহির।
তিনি বলেন যে জনসংখ্যার উপর ভিত্তি করে বিধানসভা সমষ্টি বৃদ্ধি করার কথা, কিন্তু সেখানে ষড়যন্ত্র মূলক ভাবে সমষ্টি বিলুপ্ত করণ করা হচ্ছে।
অথচ ব্রম্মপুত্র উপত্যকায় সমষ্টি বৃদ্ধি করা হয়েছে যা অতি দূর্ভোগ জনক। সর্বক্ষেত্রে বরাক উপত্যকাকে বঞ্চিত করা হচ্ছে তাই বরাক তথা হাইলাকান্দি জেলাবাসীর উন্নয়নের স্বার্থে এই অগণতান্ত্রিক ডিলিমিটেশনের বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক আন্দোলনে রাজপথে ঝাপিয়ে পড়তে সবাইকে আহ্বান জানান রাইজর দলের জেলা সভাপতি জহির উদ্দিন লস্কর।