শ্যামল আচার্য, রামকৃষ্ণনগর : একদিকে যখন পুলিশের ড্রাগস বিরোধী অভিযান চলছে অন্যদিকে পুলিশকে রীতিমত চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ড্রাগসের রমরমা ব্যবসাও চালিয়ে যাচ্ছে ড্রাগস মাফিয়ারা।
তবে পুলিশও ড্রাগস মাফিয়াদের চ্যালেঞ্জ হিসাবে নিয়ে একের পর এক সফলতা অর্জন করছে। এরকম এক ড্রাগস বিরোধী অভিযান চালিয়ে রামকৃষ্ণনগর পুলিশ ব্যাপক সফলতা পেয়েছে।
অভিযানে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে আনুমানিক প্রায় একুশ কোটি টাকার ড্রাগস, গ্রেফতার করা হয়েছে দুই ড্রাগস মাফিয়াকে।
রবিবার সন্ধ্যা করিমগঞ্জ জেলার রামকৃষ্ণ থানার আওতাধীন ঈশানছড়া এলাকা থেকে গোপন সূত্রের খবরে অভিযান চালিয়ে দুইশতটি সাবানের বাস্কো থেকে আনুমানিক ২.৫ কেজি ড্রাগস বাজেয়াপ্ত করে রামকৃষ্ণ নগর পুলিশ।
এই অভিযানে গ্রেফতার করা হয় ২ ড্রাগস মাফিয়া।
গ্রেফতার করা দুই ড্রাগস পাচারকারীরা হল করিমগঞ্জ জেলার পাথারকান্দির বাসিন্দা আহাদ উদ্দিন (বয়স ২৩) এবং মকবুল হুসেন (বয়স ২৫) কে।
এদের মধ্যে একজন পালাতে চাইলে পুলিশ নেটওয়ার্ক তৈরি করে তাকেও আটক করে। পুলিশের বুদ্ধির কাছে একসময় হার মানতে হয় পলায়নাকারি ড্রাগস মাফিয়াকে।
কিন্তু ড্রাগসের বিরুদ্ধে পুলিশের এত কটুর অভিযান চলা সত্বেও সমান্তরালভাবে একাংশ ড্রাগস মাফিয়ারা গোপনে চালিয়ে যাচ্ছে এই মারাত্মক ড্রাগসের ব্যবসা।
রবিবার সন্ধ্যায় ড্রাগস বিরোধী এই অভিযানে নেতৃত্বে ছিলেন করিমগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার পার্থ প্রতিম দাস। সূত্রের ভিত্তিতে পুলিশ একের পর এক অভিযানে সাফলতা অর্জন করতে সক্ষম হচ্ছে।
রামকৃষ্ণনগরের ঈশানছড়ার এই অভিযানে এএস ১১ ওয়াই ৭৬৬৮ নম্বরের সাদা মারুতি এস প্রেসো গাড়ি থেকে ড্রাগস বাজেয়াপ্ত করে পুলিশ।
গাড়িটি মিজোরাম থেকে কালিগঞ্জের দিকে যাওয়ার সময় চ্যালেঞ্জ জানায় পুলিশ। এই বৃহৎ পরিমাণের ড্রাগসগুলো গাড়ির বিভিন্ন আস্তানায় লুকিয়ে রাখা ছিল।
গাড়ির বিভিন্ন যন্ত্রাংশের ভেতর থেকে দুইশটি সাবানের বাক্স উদ্ধার করা হয়। যার আন্তর্জাতিক বাজারমূল্য প্রায় ২১ থেকে ২২ কোটি টাকা হবে বলে পুলিশের অনুমান।
বর্তমানে পুলিশ দুই পাচারকারীকে জোর জিজ্ঞাসাবাদ চালিয়ে যাচ্ছে, জিজ্ঞাসবাদে আরও বিভিন্ন তথ্য বের হয়ে আসতে পারে বলে আশাবাদী সচেতন মহল।
উল্লেখ্য, গত বছরও ঠিক একই জায়গা থেকে প্রায় ১৮ কোটি টাকার ড্রাগস বাজেয়াপ্ত করেছিল করিমগঞ্জ পুলিশ।
আবারও এক বছর পার হতে না হতেই ঈশানছড়া অ্যান্টি ডাকাতি ক্যাম্পের সম্মুখে থেকে বৃহৎ পরিমাণের ড্রাগস বাজেয়াপ্ত করে জেলা পুলিশ।
বলতে গেলে বহুদিন থেকে ড্রাগস ব্যাবসার হটস্পটে পরিনত হয়েছে করিমগঞ্জ জেলা।
মায়ান্মার থেকে মিজোরাম হয়ে প্রায়ই করিমগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় প্রবেশ করছে এই সর্বনাশা নেশাদ্রব্য ড্রাগস।
পুলিশও প্রায় দিনেই জব্দ করছে কোটি কোটি টাকার ড্রাগস। কিন্তু পুলিশের রক্তচক্ষুকে পরোয়া না করে এক প্রকার চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ড্রাগস ব্যাবসা চালিয়ে যাচ্ছে ড্রাগস মাফিয়ারা৷ তবে বারে বারেই পুলিশের সক্রিয়তার কাছে হার মানছে ড্রাগস মাফিয়ারা।