রামকৃষ্ণনগর, প্রতিনিধি : ফের বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে ভৈরব নগর গ্রাম পঞ্চায়েত। নেক্সট অফ কিন সার্টিফিকেট প্রদান করতে মাথাপিছু পাঁচশো টাকা আদায় করেছেন ভৈরবনগর গ্রাম পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ।
সরকার সাধারণ লোকেদের সুবিধায় বিনামূল্যে নেক্সট অফ কিন পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে সার্টিফিকেট প্রদান করার ব্যাবস্থা করেছে।
কিন্তু সরকারকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে রশিদ দিয়ে নেক্সট অফ কিন সার্টিফিকেটের নামে অর্থ আদায় করছেন ভৈরব নগর গ্রামপঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ।
মিশন বসুন্ধরা শুরু হওয়ার পর সরকার গ্রামীণ এলাকার লোকেদের সুবিধার জন্য গ্রাম পঞ্চায়েতকে নেক্সট অফ কিন সার্টিফিকেট প্রদান করার নির্দেশ দিয়েছে।
এরপর থেকেই প্রতিটি জিপি বিনামূল্যে এলাকাবাসীকে নেক্সট অফ কিন সার্টিফিকেট দিতে শুরু করে।
উল্লেখ্য যে এই নেক্সট অফ কিন সার্টিফিকেট পূর্বে জেলা প্রশাসনের থেকে দেওয়া হত, তবে জমি নামজারির ক্ষেত্রে গ্রাম পঞ্চায়েত থেকেও নেক্সট অফ কিন সার্টিফিকেট পাওয়া যাবে জানিয়েছিল সরকার।
কিন্তু করিমগঞ্জ জেলার রামকৃষ্ণনগর খণ্ড উন্নয়নের অধীনে থাকা ভৈরব নগর গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে নেক্সট অফ কিন সার্টিফিকেট সাধারণ লোকেদের দেওয়া হলেও আদায় করা হচ্ছে মোটা টাকা।
অভিযোগ অনুসারে প্রত্যেক হিতোধিকারির কাছ থেকে পাঁচশো টাকা করে আদায় করছেন ভৈরব নগর গ্রাম পঞ্চায়েতের সভাপতি শশাঙ্ক শেখর দাস এবং সচিব ঝলক দে।
বিষয়টি নিয়ে রামকৃষ্ণ নগরের এটাচড খণ্ড আধিকারিক উজ্জ্বল চক্রবর্তীর কাছে থেকে জানতে চাইলে এর জন্য কোনো টাকার প্রয়োজন নেই বলেও জানিয়েছেন তিনি।
কিন্তু টাকা ছাড়া ভৈরবনগর গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে কেউই নিতে পারছেন না নেক্সট অফ কিন সার্টিফিকেট।
সবাইকে পাঁচশো টাকা দিয়ে নিতে হয় নেক্সট অফ কিন সার্টিফিকেট। একের পর এক অভিযোগের মুখে পড়ছে ভৈরব নগর গ্রাম পঞ্চায়েত।
কিন্তু সরকারের নির্দেশ অমান্য করে কিভাবে অর্থ নিয়ে নেক্সট অফ কিন সার্টিফিকেট দেওয়া চলছে ভৈরবনগরে? এমনই প্রশ্ন উঠেছে এবার জনমনে।
ভৈরব নগর গ্রাম পঞ্চায়েতের এসব কার্যকলাপ কি জেলা প্রশাসন সহ গ্রামন্নয়ন বিভাগের নজরে আসছে না? নাকি জেনে শুনেই কেউই দৃষ্টিগোচর করছেন না এতে১
কিভাবে পঞ্চায়েত সচিবের সামনেই এভাবে অর্থ দিয়ে বর্ত করা চলছে ভৈরবনগর গ্রাম পঞ্চায়েতে? তবে এসব দেখে অনুমান করা যাচ্ছে যে গ্রাম পঞ্চায়েত সচিব ঝলক দে নিজেই এসব কাজে জড়িত রয়েছেন।
নাহলে পঞ্চায়েত সভাপতির দ্বারা একা এসব কাজ করা অসম্ভব হত। কাউকে পরোয়া না করে সদরে বসেই আদায় করছেন নেক্সট কিন সার্টিফিকেটের নামে মোটা অংকের অর্থ।
কিন্তু আশ্চর্য্যের ব্যাপার বসুন্ধরা প্রকল্প চালু হওয়ার পর থেকে নেক্সট অফ কিন সার্টিফিকেটের নামে অর্থ আদায় করা চললেও আজ পর্যন্ত এনিয়ে বিভাগীয় কর্তৃপক্ষ থেকে কোনো ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।
এই সংবাদ লেখার পূর্বেই চলে আসে রশিদের একটি ছবি, সেই রশিদের মধ্যে পরিষ্কার লিখা রয়েছে যে নেক্সট অফ কিন এর জন্য পাঁচশো টাকা নেওয়া হয়েছে।
কিন্তু কেনো এই টাকা আদায় করা চলছে ভৈরবনগর পঞ্চায়েতে আর এই টাকাগুলো কোথায় যাচ্ছে সেটা ভালোভাবে খতিয়ে দেখলে বিভাগীয় কর্তৃপক্ষের কাছে ধরা পড়বে।
ভৈরবনগর গ্রাম পঞ্চায়েত এর আগে থেকেই নানা অভিযোগে অভিযুক্ত। আরটিআই করা হলে দুই মাস পার হয়ে গেলেও জবাব মিলে নি। গত মঙ্গলবার পঞ্চায়েত সচিব আরটিআই-এর জবাব দিতে এক আবেদনকারীকে ব্লক অফিসে ডেকে নিয়ে নিজেই অফিস থেকে উধাও হয়ে যান।