গণ আওয়াজ শিলচর : ডিলিমিটেশন মাধ্যমে আসামের বাঙালির মেরুদণ্ড ভেঙে দেওয়া হয়েছে। এই তালিকা বাস্তবায়িত হলে বরাক উপত্যকাকে আর আসামের সাথে থাকার কোন অর্থ হয় না।
বিডিএফ কার্যালয়ে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে আজ এভাবেই পৃথক পূর্বাঞ্চল রাজ্যের ডাক দিল বিডিএফ।
বিডিএফ মুখ্য আহ্বায়ক প্রদীপ দত্তরায় বলেন, ২০২৬ সালে সারা ভারতে ডিলিমিটেশন হওয়ার কথা, কিন্তু তড়িঘড়ি করে ২০০১ সালের আদমশুমারির ভিত্তিতে ডিলিমিটেশন রহস্যজনক।
এই ডিলিমিটেশনের মূল দায়িত্বে ছিলেন একজন অবাঙালি মন্ত্রী ও বরাকের এক অবাঙালি বিধায়ক, যাদের বরাকের ইতিহাস এবং ভুগোল সম্পর্কে কোন জ্ঞান নেই।
এছাড়া সহায়তা করেছেন ডিআরডিএর প্রাক্তন এক আধিকারিক যিনি দূর্ণীতির জন্য গ্রেফতার হয়েছিলেন।
গৌহাটিতে গণশুনানিতে আসা নির্বাচন কমিশনের তিন সদস্যের কাছে বরাক উপত্যকা থেকে দুশোর বেশি প্রতিবাদ পত্র পাঠানো হয়, এমনকি মৌখিক ভাবে জোরালো যুক্তিও পেশ করা হয়।
কিন্তু সবকিছুকে অগ্রাহ্য করে সামান্য রদবদলে প্রস্তাবিত খসড়াকেই দূর্ভাগ্যজনক ভাবে চূড়ান্ত করেছে নির্বাচন কমিশন।
দত্তরায় বলেন সুপ্রিম কোর্টের চূড়ান্ত রায়ের আগে সাক্ষর না করার জন্য বিডিএফ থেকে রাস্ট্রপতিকে ট্যুইট ও ইমেইল পাঠিয়ে অনুরোধ জানানো হয়।
কিন্তু কোন কিছুকে পাত্তা না দিয়ে রাজনৈতিক দুরভিসন্ধিমূলক গ্যাজেট নোটিফিকেশন জারি করা হয়।
এমনকি সুপ্রিম কোর্টকেও যে এই সরকার ন্যুনতম মান্যতা দেয়না তাও স্পষ্ট হয়েছে।
১৯৮০-র ‘বঙাল খেদা’ আন্দোলনের মাধ্যমে রাজ্যের বাঙালিদের হেনস্থা ও বঞ্চনার যে প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল সেই ট্র্যাডিশন সমানে চলেছে।
এনাআরসির মাধ্যমে ১৯ লক্ষ বাঙালির নাগরিকত্ব ঝুলিয়ে রাখা এবং আধার কার্ড অকেজো করে রাখা হয়।
নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের নামে বাঙালি হিন্দুদের ভোট হাসিল করে রাস্ট্রপতির সাক্ষরের পরও ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে।
প্রদীপ দত্তরায় বলেন সবার মতামতের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বরাকের আর আসামের সাথে থাকার কোন অর্থ নেই।
তিনি বলেন, সুপ্রিম কোর্টের চূড়ান্ত রায় পর্যন্ত কোন কর্মসূচি নেওয়া হবে না, তবে পৃথকীকরণের লক্ষ্যে সাংগঠনিক বিস্তার এবং বিভিন্ন জনগোষ্ঠী ও দল সংগঠনের সাথে যোগাযোগ করা হবে।
বিডিএফ মুখ্য আহ্বায়ক বলেন, তেরো নয় এবার বরাক বাসীর ৬০ আসনের বিধানসভা চাই এবং সেই বিধানসভা হবে ‘পূর্বাচল’-এর বিধানসভা। রাজ্য হবে পৃথক ‘পূর্বাচল’।
বিশ্ববিদ্যালয়ের দীর্ঘ দশবছরের আন্দোলনের উল্লেখ করে বলেন সেই আন্দোলনে উপত্যাকার বাংলাভাষী হিন্দু-মুসলিম, চা জনজাতি, ডিমাসা, মনিপুরী, বিষ্ণুপ্রিয়া সহ সমস্ত জনগোষ্ঠীর মানুষ সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছিলেন।
একইভাবে পৃথক পূর্বাচল রাজ্যের দাবিতে সংগ্রাম আজ থেকে শুরু হল। এই লড়াইয়ে জাতি ধর্ম নির্বিশেষে বরাকবাসীর সহযোগিতা প্রার্থনা করেন প্রদীপ দত্তরায়।