নিউজ ডেক্স, গণআওয়াজ : অচিরেই নিঃশেষ হওয়ার পথে কাছাড়ের বহু মুল্যবান বনজ সম্পদ “পাথর”!
জেলার প্রায় প্রতিটি কোয়ারিতে বন বিভাগ সহযোগে বন মাফিয়ারা চালাচ্ছে এই শেষ পর্যায়ের অভিযান।
বনজ সম্পদ লুণ্ঠনের এই অভিযান শুরু হয়েছিল ২০১৭ সালে মন্ত্রী পরিমল শুক্লবৈদ্যের হাত ধরে।
পরিমল শুক্লবৈদ্য রাজ্যের বন মন্ত্রী হওয়ার পর থেকেই কাছাড় জেলায় বে-পরোয়াভাবে শুরু হয় এই অভিযান, এবং আজও চলছে।
বালাচড়া, সোনাছড়া, মধুরা, জয়পুর চিরি নদী সহ জেলার সব কয়টি কোয়ারিতে বন বিভাগের সহযোগে বন মাফিরা এক সাথে চালাচ্ছে এই অভিযান।
জেসিবি, ফকলেন ইত্যাদি দিয়ে খনন করে তুলা হচ্ছে পাথর।
যার ফলে স্থানে স্থানে পুকুর থেকেও গভীর গর্ত তৈরি হয়েছে পুরো কোয়ারিতে।
এক কথায় কোয়ারি বলতে এখন গর্তের মিছিল।
জাঠিঙ্গাঁ ভ্যালির পাথর কোয়ারির কাশিবন এলাকার যে দৃশ্য ক্যামেরায় ধরা পড়েছে তা খুবই অবাক জনক।
বন মাফিয়ারা জেসিবি, ফকলেন ব্যবহার করে খোদাই করে একদিকে পাথর তুলছে, অন্যদিকে জ্বলছে পাহাড়।
এছাড়াও বন মাফিয়ারা কোয়ারীতে আধুনিক পাথর চালনি বসিয়ে সাইজ অনুযায়ী বাছাই করে নিচ্ছে পাথর।
এসব কাজে এখন আর কোন শ্রমিকের দরকার হচ্ছে না। গাড়ীগুলোও ওভার লোড পাথর টানছে।
দেখে মনে হবেনা কাছাড় জেলায় বন বিভাগ এবং পরিবহণ বিভাগ নামে সরকারী কোন দপ্তর রয়েছে, এবং রাজ্যে সরকার বলতে কোন কিছু আছে।
একদিকে শ্রমিকদের পেটে ভাতে মারা হচ্ছে, অন্যদিকে গরীব মানুষ যারা পাকা ঘরের স্বপ্ন দেখছেন তাদেরকে আরও কিছুদিন পর এই স্বপ্ন দেখা ছেড়ে দিতে হবে।
কারন পাথরের ক্রাইসিস হলে দাম বাড়বে, দশগুন বেশি দামে কিনতে হবে পাথর।
কিন্তু এব্যাপারে জেলায় আজ পর্যন্ত শক্ত কোন প্রতীবাদ গড়ে উঠেনি।
বিরোধী রাজনৈতিক দল এবং অলিতে-গলিতে ব্যাঙের ছাতার মত গজিয়ে উঠা এনজিও, ক্লাব, সংগঠন সবই স্বার্থপরের মত চোখ বুজে রয়েছে।
তবে জেগে উঠেছে শ্রমিকরা।
এদিন শতাধিক ক্ষুধার্ত কর্মহীন হয়ে পড়া শ্রমিক কোয়ারিতে নেমে প্রতীবাদ জানিয়েছেন।
জেসিবি, ফকলেন এবং লরি জ্বালিয়েও দিতে চেয়েছিলেন, এমনকি বালাছড়ার ফরেস্ট অফিস ও মহাল অফিসে ভাংচুর করারও পরিকল্পনা করেছিলেন।
যদিও শেষ পর্যন্ত তারা এমন কঠোর পদক্ষেপ থেকে সরে দাঁড়ান।
কিন্তু কাজ হারিয়ে কে কতদিন অভুক্ত থাকতে পারবে? এছাড়া কোন শুভ চিন্তাশীল মানুষের কি এসব ধ্বংস যজ্ঞ দেখে চোখ বুজে থাকা উচিৎ?
শ্রমিকরা, বিশেষ করে যারা কর্ম করে সৎভাবে বাঁচতে চায়, তাদের এসব অপকর্ম দেখে ধরজ্যের বাঁধ ভাংবেই।
হয়তো কোন দিন এরকম ভয়ানক অঘটন ঘটতেও পারে। সেদিন কিভাবে দায় এড়াবেন বন মাফিয়া, বন বিভাগ, প্রশাসন এবং সরকার?
এসব প্রশ্ন নিয়ে বালাছড়ার মহাল অফিস ও ফরেস্ট বিট অফিসে গিয়ে দু’একজন স্টাফ ছাড়া কাউকে পাওয়া যায়নি। কিন্তু তাদের এবং স্থানীয়দের জিজ্ঞাসাবাদে যে সব তথ্য বেরয়ে এসেছে তা খুবই চাঞ্চল্যকর।