গণআওয়াজ প্রতিনিধি : বরাক উপত্যকার হিন্দু-মুসলমান বাঙালিদের আসামের খিলঞ্জীয়া বা ভূমিপুত্রের মর্যাদা দিতে হবে।
সোমবার শিলচর তারাপুরের নিজের বাড়িতে সাংবাদিক সম্মেলন করে এই দাবি জানান রাজ্যসভার সাংসদ, তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী সুস্মিতা দেব।
এদিন তিনি বলেন, হিমন্ত বিশ্ব শর্মা খিলঞ্জীয়া হলে সুস্মিতা দেবও খিলঞ্জীয়া।
বিজেপি এবং হিমন্ত বিশ্ব শর্মার সরকার আসামে প্রতিদিন বাঙালিদের নাগরিক অধিকার হরণ করছে।
বৈষম্য ও বঞ্চনার প্রধান উদাহরণ হচ্ছে খিলঞ্জীয়া’ (আদি বাসিন্দা) মর্যাদা।
কারা খিলঞ্জীয়া? এর কোনও আইনি সংজ্ঞা নেই। অথচ মুখ্যমন্ত্রী তাঁর খেয়ালখুশি মতো আজ এক জনগোষ্ঠী, কাল আর এক জনগোষ্ঠীকে খিলঞ্জীয়ার মর্যাদা দিয়ে চলেছেন। যেন তিনিই আইন।
সুস্মিতা আরও বলেন, মুখ্যমন্ত্রী নিয়ম বানিয়েছেন যে, এক নাগাড়ে তিন পুরুষ ধরে বসবাস না করলে রাজ্যে জমির পাট্টা দেওয়া হবে না।
এক্ষেত্ৰে উদ্দেশ্য স্পষ্ট যে বাঙালিকে কোনও অবস্থাতেই জমির অধিকার দেওয়া হবে না।
বাঙালিদের কী অপরাধ বলে প্রশ্ন উত্থাপন করেন তিনি।
সুস্মিতা বলেন, মুখ্যমন্ত্রী এবং বিজেপি হিন্দু-মুসলমান কোনও বাঙালিকেই এই রাজ্যে পূর্ণ মর্যাদার নাগরিক হিসেবে মেনে নিতে রাজি নয়।
ইতিহাস সাক্ষ্য দিচ্ছে, ১৮৭৪-এ সিলেট-গোয়ালপাড়া সহ নতুন আসাম প্রদেশ গঠিত হয়।
১৯৪৭ সালের গণভোটে সিলেট পাকিস্তানে চলে যায় এবং ভারতে চলে আসেন ওখানকার হিন্দু বাঙালিরা।
তার মানে আজ যাঁদের বিজেপি এবং হিমন্ত বহিরাগত সাজিয়ে অধিকার কেড়ে নিচ্ছেন তাঁরা তো আসামেরই আদি বাসিন্দা।
আর বাঙালি মুসলমানরা তো বরবর এখানেরই বাসিন্দা। তাহলে কার্বি, আহোম বা বড়ো ভাইয়েদের থেকে কোথায় আলাদা বাঙালিরা?
তিনি বলেন, বরাকের বাঙালি হিন্দুরা দেশভাগের আগে আসামে ছিলেন, দেশভাগের পরও তাঁরা আসামেই এসেছেন।
তার মানে অন্তত ছয় পুরুষ ধরে বরাকের বাঙালিরা আসামেরই আদি ও অকৃত্রিম বাসিন্দা। বরাকের মুসলমানরাও তাই।
তাই তাঁর দাবি, বরাক উপত্যকার হিন্দু-মুসলমান নির্বিশেষে বাঙালিদের আসামের খিলঞ্জীয়া বা ভূমিপুত্রের মর্যাদা দিতে হবে। সুস্মিতা বলেন, দাবি আদায়ের জন্য প্রয়োজনে উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হবেন তিনিl